স্বপ্নপূরণ কয়েক পা দূরেই! দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছিল স্যালগি, কিন্তু এ বার কী হবে?

যদিও তালিবান ছাত্রীদের স্কুলে যাওয়ার কথা বলেছে, তবে তাদের আসল পরিকল্পনা কী, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

স্বপ্নপূরণ কয়েক পা দূরেই! দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছিল স্যালগি, কিন্তু এ বার কী হবে?
আফগানিস্তানের সেই ছাত্রী স্যালগি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 28, 2021 | 5:03 PM

কাবুল: তালিবানের (Taliban) গুলিতেই প্রায় মৃত্যুর মুখে পৌঁছে গিয়েছিলেন মালালা ইউসুফজাই। ২০ বছর পর আফগানিস্তানে (Afghanistan) ক্ষমতায় ফিরে সেই তালিবান যখন মহিলাদের পড়াশোনা বা চাকরি করার কথা বলছে, তখন তাদের বিশ্বাস করা কঠিন হয়ে পড়ছে সে দেশের মহিলাদের জন্য। একটা সময় তালিবানি শাসনে পড়াশোনা বা চাকরি তো দূরের কথা বাড়ি থেকে বেরনোর কথাই ভাবতে পারতেন না মহিলারা। কিন্তু মাঝে পাল্টেছিল সময়। মার্কিন সেনার উপস্থিতিতে মসনদ ছেড়ে সরে গিয়েছিল তালিবান। হিজাব খোলার সাহস পেয়েছিল মহিলারা। সেই সময়েই অনেক স্বপ্নের শুরু। কিন্তু এ বার সে সবের ভবিষ্যৎ কী? দেশের মধ্যে সর্বাধিক নম্বর পেয়েও তাই দুশ্চিন্তায় রয়েছে আফগান ছাত্রী স্যালগি বরন (Salgy Baran)।

১৮ বছরের স্যালগ চিকিৎসক হতে চেয়েছিল। সেইমতো পড়াশোনাও চলছিল পুরোদমে। সম্প্রতি আফগানিস্তানের ‘স্যাট’ সমতুল একটি পরীক্ষায় দেশের মধ্যে সর্বাধিক নম্বর পায় সে। আফগানিস্তানের সবথেকে বড় মেডিকয়াল কলেজে পড়ার সুযোগও মেলে। কিন্তু, আদৌ কী পড়াশোনা এগোতে দেবে তালিবান? মহিলা হয়ে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে স্যালগি? এটাই এখন তার পরিবারের সবথেকে বড় প্রশ্ন। স্যালগির আপাতত আফগানিস্তানেই রয়েছে। সংবাদমাধ্যমকে এই ছাত্রী বলেছে, ‘আমি আপাতত ভয় পাচ্ছি না। কিন্তু ভবিষ্যত নিয়ে ভয় পাচ্ছি। আমাকে আর পড়াশোনা করতে দেবে তো?

মধ্য আফগানিস্তানের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে তার বড় হওয়া। খন সে বছর সাতেকের তখন তার বাবার মৃত্যু হয়। স্যালগির বাবা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন। আর তাঁকে কোনও এক চিকিৎসক ভুল করে ইনসুলিনের বেশি ডোজ দিয়ে ফেলেছিল। তার জেরেই মৃত্যু হয় বাবার। তাররই স্যালগি ঠিক করে ফেলেছিল যে বড় হয়ে সে চিকিৎসক হবে। কোনও ভুল করবে না এমন একজন চিকিৎসক। ২০১৫-তে তার পরিবার কাবুলে চলে আসে। রাজধানী শহরে মহিলাদের রক্ষণশীলতা কম। সেখানেই পড়াশোনা চলে স্যালগির। পরিবারের যা সামর্থ্য ছিল, সবটা দিয়েই চলে মেয়ের স্বপ্নপূরণ। আশাহত করেনি মেয়েও। চলতি বছরের প্রবেশিকা পরীক্ষায় দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে সে। ১ লক্ষ ৭৪ হাজার ছেলেমেয়ের মধ্যে সে প্রথম হয়েছে। ভর্তির সুযোগ পেয়েছে ‘কাবুল ইউনিভার্সিটি অফ মেডিক্যাল সায়েন্সে।’

এখনও আফগানিস্তান ছাড়ার কথা ভাবেনি স্যালগির পরিবার। তবে স্যালগির কথায়, ‘প্রাক্তন সরকারের আমলে আমার কিছু লক্ষ্য ছিল। কয়েক বছর ধরে আমি সব পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু তালিবান সরকারের অধীনে আমি কিছুই বুঝতে পারছি না, কী হবে। আগামিকালও আমার কাছে অনিশ্চিত।’

কাবুল দখলের পরই তালিবানের তরফে জানানো হয়েছিল, শরিয়া আইন মেনেই মহিলাদের শিক্ষা ও কাজে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হবে। কিন্তু চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবারই তালিবানের মুখপাত্র জাবিদুল্লাহ মুজাহিদ সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, আফগানিস্তানের সমস্ত মহিলারা যেন আপাতত বাড়িতেই থাকেন। কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেছিলেন, ‘মহিলাদের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া অবধি তারা যেন বাড়িতেই থাকেন।’ আরও পড়ুন: ‘আমার কোলেই মরে গেল ৫ বছরের বাচ্চাটা’, ঠিক কোন সময়ে বিস্ফোরণ হয়েছিল, জানালেন প্রত্যক্ষদর্শী