কাবুল: খুব শীঘ্রই নতুন আফগান সরকারের ঘোষণা করা হবে। রবিবার টোলো নিউজ এজেন্সি সূত্রে এমনই খবর উঠে এসেছে। তালিবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ এদিন জানিয়েছে, নতুন সরকার গঠন নিয়ে তাঁদের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। আফগানিস্তানের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে এ নিয়ে কথাবার্তাও চলছে। খুব শিগগিরিই নতুন সরকারের ঘোষণা করা হবে।
তালিবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছে, “রাজনৈতিক বিষয়ের দায়িত্বে আমাদের যারা রয়েছেন কাবুলে তাঁরা সাক্ষাৎ করবেন। তাঁদের মতামত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তা নিয়ে আলোচনাও চলছে। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি নতুন সরকারের ঘোষণা করতে পারব।”
গত রবিবারই তালিবানরা কাবুল দখলের পর আফগানিস্তানে নিজেদের আধিপত্য ফের প্রতিষ্ঠা করে। এরপরই সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন জাবিউল্লাহ মুজাহিদ। সেখানে তিনি জানিয়েছিলেন, “আমাদের সঙ্গে যা হয়েছে সে সব আমরা ভুলে গিয়েছি। আমরা দেশবাসীকে আশ্বাস দিচ্ছি আপনাদের ও আপনাদের দূতাবাসের সুরক্ষা আমরা সবসময় দেখব।”
একই সঙ্গে ঘোষণা করেছিলেন, “বিদেশি শক্তিকে তাড়িয়ে আমরা স্বাধীনতা এনেছি। আমরা বদলার পথে হাঁটব না। আফগানিস্তান আর যুদ্ধবিধ্বস্ত জায়গা নয়। আর কোনও সংঘর্ষ চাই না আমরা। বাইরে বা ভিতরে কোনও শত্রু চাই না। শীঘ্রই শক্তিশালী ইসলামিক তৈরি সরকার হবে।’ নিরাপত্তা নিয়ে কারও কোনও চিন্তার কারণ নেই বলেও আশ্বাস দিয়েছে তালিবানিরা। জানিয়েছে, ‘নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না। তালিবানের নামে অশান্তি ছড়াচ্ছে কেউ কেউ। আমরা সেই সমস্ত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।” একই সঙ্গে তালিবানি আশ্বাস ছিল, আফগানিস্তানে মহিলারা একেবারেই সুরক্ষিত। তাদের দাবি, ‘মহিলাদের সমস্ত অধিকার সুনিশ্চিত করা হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য সর্বত্র তাঁরা আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। শরিয়ত মেনে মহিলারা সব কাজ করতে পারবেন।’
যদিও গত সোমবার থেকেই জায়গায় জায়গায় তালিবানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস চালানোর অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। একাধিক শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, জোর করে বাড়িতে ঢুকে পড়ছে তালিবানরা। পশ্চিম কাবুলে এক প্রাক্তন সরকারি আধিকারিকের বাড়িতে ঢুকে তাঁর বাড়ি দখল করে নেওয়া হয় ও যাবতীয় গাড়ির চাবিও কেড়ে নেওয়া হয়। দেশের অন্যান্য প্রান্তগুলি থেকেও খবর মিলছে আমেরিকান ও সরকারের সমর্থকদের খোঁজে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালাচ্ছে তালিবানরা। তালিবানরা মুখে নারী শিক্ষা ও সুরক্ষার কথা বললেও কাবুল দখলের পরই দেখা যায়, বোরখাহীন যাবতীয় মহিলার পোস্টার, ছবি ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে বা সাদা রঙ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। জনসমক্ষে খুন হওয়ার ভয়ে বোরখার দোকানগুলিতেও মহিলাদের লম্বা লাইন দেখা গিয়েছে।
Taliban: New Govt to Be Announced Soonhttps://t.co/jae6Z3WtIX pic.twitter.com/9FPtwlD94R
— TOLOnews (@TOLOnews) August 22, 2021
কাবুলের এক হিজাব বিক্রেতা ফইজ আঘা জানান, আগে দিনে ৪-৫টা হিজাব বিক্রি হতো। এখন দিনে ১৫ থেকে ১৭টাও বিক্রি হয়। তালিবান ফেরার পরই এই বিক্রি বেড়েছে তাঁর। বিক্রি বেড়েছে টারবানেরও। ৩০০ থেকে ৩ হাজার টাকা অবধি দরেও তা বিক্রি হচ্ছে। আগে যেখানে দিনে ৬টা বিক্রি হত, এখন সে সংখ্যা বেড়ে ৩০ পর্যন্ত হচ্ছে। আরও পড়ুন: ‘তালিবানকে মেনে নিয়েছি, সমর্থন তো করিনি! দু’টোর পার্থক্য রয়েছে’, তালিব-যোগ নিয়ে মুখ খুললেন ঘানির ভাই