ব্যাঙ্কক: বিয়ের ২০ বছর পর আচমকা ৩ কোটি টাকার লটারি জিতেছেন স্ত্রী। অভিযোগ, এই জ্যাকপট জেতার পরই তিনি স্বামীকে ফোন করে জানান, তাঁর সঙ্গে আর থাকতে চান না। স্বামীর বিস্ময় কাটতে না কাটতেই অন্য এক পুরুষকে বিয়েও করে নিয়েছেন তিনি। সেই পুরুষ নাকি তাঁর গোপন প্রেমিক, যার কথা এতদিন জানতেই পারেননি স্বামী। এই অবস্থায় মানসিকভাবে পুরোপুরি বিধ্বস্থ স্বামী। এখন তিনি আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন। স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। দাবি করেছেন, লটারিতে জেতা পুরস্কার মূল্যের অর্ধেক তাঁকে দিতে হবে। তিনি বলেছেন, “আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। কী করব বুঝতে পারছিলাম না। আমি আশাই করিনি যে বিয়ের ২০ বছর পর আমার স্ত্রী, আমার সঙ্গে এমন করবে।”
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে থাইল্যান্ডের ইসানে। ৪৭ বছরের নারিনের সঙ্গে সুখেই সংসার করছিলেন ৪৩ বছরের চাউইওয়ান। তাঁদের দুই মেয়েও রয়েছে। পরিবারের ঋণ শোধ করতে ঘরবাড়ি ছেড়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় কাজ করতে গিয়েছিলেন নারিন। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি চাউইওয়ানের কাছ থেকে তাঁর ফোনে একটি কল এসেছিল। আর সেই ফোনকলই নারিনের জীবনে ওলটপালট করে দিয়েছে। ফোনে চাউইওয়ান বলেছিলেন, নারিনের সঙ্গে তিনি আর থাকতে চান না। তাঁদের মধ্যে ভালবাসা আর অবশিষ্ট নেই। বেশ কয়েক বছর আগেই তাঁদের সম্পর্কের মাধুর্য নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
নারিনের দাবি, সেই সময় ঘুণাক্ষরেও লটারি জেতার কথা তাঁকে জানাননি চাউইওয়ান। পরে মেয়েদের কাছ থেকে স্ত্রী-এর ভাগ্য খুলে যাওয়ার খবর পেয়েছিলেন তিনি। ৩ মার্চ থাইল্যান্ডে ফিরে আসেন তিনি। প্রাক্তন স্ত্রী-এর সঙ্গে সামনাসামনি কথা বলতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, খোঁজ খবর করতে গিয়ে দেখেন, চাউইওয়ান তাঁকে পিছনে ফেলে অনেকদূর এগিয়ে গিয়েছেন। লটারি জিতে তিনি অন্য এক পুরুষকে বিয়ে করেছেন। এরপরই ভেঙে পড়েন নারিন। অবশ্য প্রতিশোধ নিতে প্রাক্তন স্ত্রীকতে তিনি আদালতে টেনে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।
নারিন বলেছেন, “আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মাত্র ৬০,০০০ ভাট (ভারতীয় মুদ্রায় ১ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা) পড়ে আছে। কারণ আমি ওকে মাসে মাসে টাকা দিতাম। আমি ন্যায়বিচার চাই এবং আমার প্রাপ্য অর্থ ফেরত চাই।” সমস্যা হল, নারিন এবং চাউইওয়ান কখনই আইনত গাঁটছড়া বাঁধেননি। তাই তাঁরা যে দুই দশক ধরে একসঙ্গে ছিলেন, তা প্রমাণ করার জন্য নারিনের কাছে তাঁদের বিয়ের কোনও শংসাপত্র নেই। কিন্তু তাঁর আইনজীবীর মতে, পারিবারিক সদস্যরা তাঁদের দীর্ঘদিনের সম্পর্কের প্রমাণ দিতে পারবেন। কাজেই নারিন তাঁর স্ত্রীয়ের জেতা অর্থের অর্ধেক পাবেন।
অন্যদিকে, চাউইওয়ান জানিয়েছেন, নারিনের সঙ্গে বেশ কয়েক বছর আগে তাঁর বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। তিনি নারিনের বিরুদ্ধে পাল্টা মানহানির অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর দাবি পাড়া প্রতিবেশীরা তাঁকেই সমর্থন করবেন। লটারি জেতার কথাও তিনি নারিনের কাছ থেকে লুকোননি বলেই দৈাবি তাঁর। এই ঘটনার বিষয়ে আপতত পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। কে সত্যি বলছেন, আর কে বলছেন না, তা তদন্তেই উঠে আসবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।