Kohinoor: রাজা চার্লসের ক্যানসার, কোহ-ই-নূর হিরের অভিশাপ? ফেরত দেবে ব্রিটেন?

Kohinoor curse: এই হিরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক অন্ধকার অভিশাপের কাহিনি। মনে করা হয়, এই পৃথিবী বিখ্যাত হিরেটি তার পুরুষ মালিকদের জন্য দুর্ভাগ্য বয়ে আনে। রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর, উত্তরাধিকার সূত্রে হিরেটি পেয়েছেন রাজা তৃতীয় চার্লস। আর তারপর, তাঁর জীবনেও কিন্তু নেমে এসেছে দুর্ভাগ্য। সম্প্রতি ধরা পড়েছে তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত।

Kohinoor: রাজা চার্লসের ক্যানসার, কোহ-ই-নূর হিরের অভিশাপ? ফেরত দেবে ব্রিটেন?
রাজা দ্বিতীয় চার্লসের উপর নেমে এল কহ-ই-নূরের অভিশাপ?Image Credit source: Twitter
Follow Us:
| Updated on: Feb 08, 2024 | 9:36 AM

লন্ডন: কোহ-ই-নূর, সম্ভবত পৃথিবীর সবথেকে বিক্যাত হিরে। ১০৫.৬ ক্যারেটের এই হিরেটি ভারত থেকে লুঠ করে নিয়ে গিয়েছিল ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকরা। বর্তমানে, ব্রিটেনের রাজমুকুটে শোভা পায় হিরেটি। ফার্সি ভাষায় কোহ-ই-নুরের অর্থ ‘আলোর পর্বত’। কিন্তু, এই হিরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক অন্ধকার অভিশাপের কাহিনি। মনে করা হয়, এই পৃথিবী বিখ্যাত হিরেটি তার পুরুষ মালিকদের জন্য দুর্ভাগ্য বয়ে আনে। রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর, উত্তরাধিকার সূত্রে হিরেটি পেয়েছেন রাজা তৃতীয় চার্লস। আর তারপর, তাঁর জীবনেও কিন্তু নেমে এসেছে দুর্ভাগ্য। সম্প্রতি ধরা পড়েছে তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত। এরপর, কোহ-ই-নূর হিরের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা অভিশাপ নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হয়েছে। কী এর অভিশাপের ইতিহাস? আসুন জেনে নেওয়া যাক –

কাকাতিয়া রাজবংশের আমলে গোলকোন্ডার কোল্লুর খনি থেকে পাওয়া গিয়েছিল কোহ-ই-নূর হিরা। এরপর থেকে শাসকদের মধ্যে এক অতি লোভনীয় রত্ন হয়ে উঠেছিল হিরেটি। এই হিরের দখল নিয়ে বহু শাসকের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। ১৬২৮ সালে, মুঘল সম্রাট শাহজাহান, বহু রত্ন-খচিত ময়ূর সিংহাসন তৈরি করেছিলেন। বহু মাণিক, পান্নার সঙ্গে এই সিংহাসনে ছিল কোহ-ই-নূর হিরেও। সিংহাসনটির খ্যাতি দিক-দিগন্তে ছড়িয়ে পড়েছিল ঠিকই, কিন্তু এই হিরে মুঘল সাম্রাজ্যে অশান্তিও ডেকে এনেছিল।

এরপর বহু যুদ্ধের মধ্য দিয়ে হাত বদল হয়েছিল কোহ-ই-নূর হিরের। পারস্য শাসক নাদির শাহ এই হিরেটি তাঁর বাহুবন্ধনীতে রেখেছিলেন। হিন্দু, পারস্য, মুঘল, আফগান শাসকদের হাত ঘুরে অবশেষে হিরেটি এসে পৌঁছেছিল শিখ শাসক রঞ্জিত সিং এর দখলে। ১৮৪৯ সালে, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি রঞ্জিত সিংয়ের পরিবারকে বন্দী করে এবং কোহ-ই-নূর হিরের দখল নেয়। বস্তুত, ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, যখনই কোনও শাসক এই হিরে অধিকার করেছেন, তাঁর পতন ঘটেছে। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিও এর বাইরে নয়। ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহ, কোম্পানির শাসনকে প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছিল। এরপরই, কোহ-ই-নূর’এর অভিশাপ সম্পর্কে সচেতন হয়েছিল ব্রিটিশ রাজ পরিবার। পুরুষ উত্তরাধিকারীদের হাতে যাতে এই হিরে না আসে, সেই বিষয়ে সতর্ক ছিল ব্রিটিশরা।

অভিশাপ এড়াতে, এরপর থেকে শুধুমাত্র ব্রিটিশ রাজপরিবারের মহিলা সদস্যরাই কোহ-ই-নূর পরিধান করেছেন। রানী ভিক্টোরিয়া, রানী আলেকজান্দ্রা, রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথরা কোনও বিশেষ অনুষ্ঠান থাকলে এই হিরে খচিত মুকুট পরতেন। রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের পর, বিরেটি এখন রাজা তৃতীয় চার্লসের দখলে এসেছে। ভারতীয়রা দীর্ঘদিন ধরেই ব্রিটেনের কাছে কোহ-ই-নূর ফেরত দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর এই দাবি আরও জোরাল হয়েছিল। কিন্তু, ব্রিটিশরা এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি। রাজা তৃতীয় চার্লস অসুস্থ হওয়ার পর কি তারা আবার কোহ-ই-নূর ফেরানোর কথা ভেবে দেখবে?