ওয়াশিংটন : আসন্ন শীতের মরশুম খুব একটা ভালোভাবে কাটবে না। ওমিক্রন আতঙ্কের মধ্যে এমনই সতর্কবার্তা দিলেন মার্কিন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফৌসি। রবিবার এই বিষয়ে নতুন করে সতর্ক করেছেন তিনি। একদিকে যেমন কঠোরভাবে বিধি-নিষেধ মেনে চলার বার্তা দিয়েছেন তিনি, অন্যদিকে হাসপাতালগুলির পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে অ্যান্টনি ফাউসি বলেন, ‘একটা বিষয় স্পষ্ট যে, ওমিক্রন নজিরবিহীন গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে, গোটা বিশ্ব জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ওমিক্রন।’
ওমিক্রন নিয়ে খুব ইতিবাচক ধারনা না রাখাই ভালো, এমনটাই দাবি করেছেন ফৌসি। ওমিক্রন যে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এসেছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হয়, সেখানে আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রবণতা কম বলেই জানা যাচ্ছে। সেই প্রসঙ্গ তুলে ফাউসি বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকায় ডেল্টার তুলনায় ওমিক্রনের ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রবণতা কম ঠিকই, তবে তার অন্যতম কারণ হতে পারে আগের সংক্রমণ থেকে তৈরি হওয়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।’
তাঁর দাবি, উপসর্গ যতই মৃদু হোক না কেন, একসঙ্গে যখন অনেকের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে, তখন পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হবে। আগামী ১-২ সপ্তাহের মধ্যে আমেরিকার হাসপাতালগুলিতে ভিড় বাড়বে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি। যাদের এখনও টিকা নেওয়া হয়নি, তাঁদের অবিলম্বে টিকা নেওয়ার উপদেশ দিয়েছেন তিনি।
ভারতে মোট ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ পার করেছে। এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সের (AIIMS) ডিরেক্টর ডঃ রণদীপ গুলেরিয়াও। রবিবার তিনি বলেন, “যে হারে ব্রিটেনে সংক্রমণ বাড়ছে, তা মাথায় রেখে ভারতকে যে কোনও পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।”
তিনি আরও বলেন, “যখনই বিশ্বের কোনও প্রান্তে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, আমাদের উচিত দেশের পরিস্থিতির উপর কড়া নজরদারি রাখা এবং যে কোনও পরিস্থিতির জন্য নিজেদের প্রস্তুত রাখা। বিনা প্রস্তুতিতে বিপদের মুখে না পড়ে, তার তুলনায় প্রস্তুতি নিয়ে রাখাই উচিত।”
ব্রিটেন জুড়ে দ্রুত হারে বাড়ছে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা। কয়েকদিনের ব্যাবধানেই দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে আক্রান্তের সংখ্য়া, এই পরিস্থিতিতে আরও ভয়ের কথা শুনিয়েছে ব্রিটেন সরকারের পরামর্শদাতারা। তাদের দাবি, এটা কেবল হিমশৈলের চূড়া। সংক্রমণের শিকড় ছড়িয়ে গিয়েছে দেশের অন্দরে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম খোঁজ পাওয়া ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ইতিমধ্যেই শতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। সব থেকে বেশি সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রিটেন ও ডেনমার্কে। ২৪ ঘণ্টাতেই প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি আক্রান্তের খোঁজ মেলায়, শুক্রবারই ব্রিটেনে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার ছুঁয়েছে।