ক্যানকুন: বৃহস্পতিবার, মেক্সিকোর ক্যানকুনে ক্যারিবিয়ান রিসর্টের কাছে সমুদ্র সৈকতে দুই দুষ্কৃতি দলের গুলির লড়াইতে দুই মাদক পাচারকারীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। এই আকস্মিক গুলি চালানোর ঘটনায় বিদেশি পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এই নিয়ে কয়েক সপ্তাহে দ্বিতীয় বার মেক্সিকোতে এই ধরনের ঘটনা ঘটল। করোনা ভাইরাসের দাপট কমার পর থেকে আসতে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পর্যটন ব্যবসা। ঠিক সেই সময়েই এই ধরনের ঘটনা পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
কুইন্টানা রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে টুইট করে জানানো হয়েছে, “বাহিয়া পেটেম্পিচ, পুয়ের্তো মোরেলোসের একটি সমুদ্র সৈকতে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরোধী দলের সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।তাদের মধ্যে দুজন প্রাণ হারিয়েছেন।”
কুইন্টানা রিপাবলিক সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, কোন পর্যটক গুরুতরভাবে আহত বা অপহৃত হয়নি। সমুদ্র সৈকতের পাশের হোটেলে থাকা পর্যটকরা গুলি চালানোর ঘটনা বর্ণনা করেছেন। তার জানিয়েছেন গুলির আওয়াজ পাওয়ার পরেই পর্যটকরা নিরাপদ আশ্রয়েক খোঁজে চারিদিকে ছুটোছুটি শুরু করেছিল।
হায়াত জিভা রিভেরা ক্যানকুন রিসোর্টে থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটক মাইক সিংটন টুইট করে বলেন “অতিথিরা আমাকে বলছে যে তারা সৈকতে ভলিবল খেলছিলেন ঠিক সেই সময়েই দুষ্কৃতিরা বন্দুকধারীর কাছে এসে গুলি চালাতে শুরু করে। গুলি আওয়াজ শুনেই সবাই সমুদ্র সৈকত এবং সুইমিং পুল থেকে দৌড়তে শুরু করে। রিসর্টে কর্মচারীরা আমাদের রান্নাঘরের পিছনে লুকানো ঘরে নিয়ে গিয়েছিলেন।”
সোশ্যাল মিডিয়াতে পাওয়া ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, পর্যটকরা হোটেলের কর্মচারীদের সঙ্গে লবিতে লুকিয়ে রয়েছেন। সিংটন জানিয়েছেন, উপস্থিত পর্যটকরা এতটাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তারা একে অপরে কে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করে।
জানা গিয়েছে এই গুলি চালনার ঘটনার পরেই ফরেনসিক সার্ভিসের কর্মীরা এবং ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিলেন। সংবাদ সংস্থা এএফপির এক সাংবাদিক জানিয়েছেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে হেলিকপ্টারও পাঠানো হয়েছিল। মাদক পাচারকারী দল গুলির মধ্যে লড়াই মেক্সিকোতে প্রথম নয়। ২০০৬ সালের আগে সরকার কর্তৃক সেনা বাহিনী মোতায়েন করার আগে এই লড়াইতে প্রায় ৩ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ২০০৬ সালেই মেক্সিকোতে মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু হয়েছিল।
যদিও রিভিয়েরা মায়া, কানকুন এবং প্লেয়া ডেল কারমেন এবং তুলুম সহ অন্যান্য রিসোর্ট আবাসস্থলগুলি সাধারণত গোটা মেক্সিকো দেশের অনেকের তুলনায় নিরাপদ বলে বিবেচিত হয়, সেখানে দিনের আলোতে এই ধরনের ঘটনা যথেষ্ট উদ্বেগের বলেই মনে করা হচ্ছে। গত মাসেই, তুলুমে সন্দেহভাজন মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে জার্মানি ও ভারতের দুই পর্যটক নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছিলেন। এই ধরনের কার্যকলাপ বন্ধে মেক্সিকো সরকার কী পদক্ষেপ নেয় সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।
আরও পড়ুন Diwali 2021: দীপাবলি শুভেচ্ছা বিনিময়ে বিএসএফ ও বিজিবির মধ্যে মিষ্টি বিতরণ