লন্ডন: বিধিনিষেধের বোঝা আর বয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়, সংক্রমণকে নিয়েই বসবাস করতে হবে। সেই কারণেই ওমিক্রন (Omicron) রুখতে যে বিধিনিষেধ (COVID Restriction) জারি করা হয়েছিল ব্রিটেনে(Britain), তা বৃহস্পতিবার থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে। আজ থেকে বদ্ধ জায়গায় মাস্ক পরার প্রয়োজন পড়বে না ব্রিটেনবাসীর। একইসঙ্গে বার-পাবে প্রবেশের জন্য টিকা সার্টিফিকেট (Vaccine Certificate)-ও দেখাতে হবে না।
বিগত দুই সপ্তাহ ধরেই ব্রিটেনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। গত বছরের শেষ ভাগে বা চলতি মাসের শুরুতেও সংক্রমণের যে উর্ধ্বমুখী হার দেখা যাচ্ছিল, তা সম্পূর্ণ রূপে না কমলেও, একটি সমান্তরাল রেখায় পরিণত হয়েছে। সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসতেই তাই বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নিলেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
করোনার পর ওমিক্রনের দাপট শুরু হতেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। হাসপাতালে ব্যাপক হারে রোগী ভর্তির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার পরই গত ৮ ডিসেম্বর “প্ল্যান বি” হিসাবে বিধিনিষেধ জারি করা হয়। তবে দেশবাসী খুব একটা ভালভাবে গ্রহণ করেননি সেই সিদ্ধান্ত। অধিকাংশ মানুষই ক্ষোভ উগরে দিয়ে জানিয়েছিলেন, তারা বিধিনিষেধ মানতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। তাই সাধারণ মানুষের মন রাখতেই প্রধানমন্ত্রীও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেই “প্ল্যান এ” অর্থাৎ ন্যূনতম করোনাবিধি ফিরিয়ে আনা হবে।
ব্রিটেন সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, সমস্ত বদ্ধ জায়গাতেই মাস্ক পরা বাধ্য়তামূলক। কেউ যদি মাস্ক না পরেন, তবে জরিমানা বা কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হবে। অন্যদিকে, বার, পাব, নাইট ক্লাব, ফুটবল মাঠ বা বড় কোনও অনুষ্ঠানে প্রবেশের সময় টিকা সার্টিফিকেট দেখানো বাধ্যতামূলক।
বরিস সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, খোলা জায়গায় মাস্ক পরার নির্দেশিকা জারি থাকলেও, বদ্ধ জায়গায় মাস্ক পরতে হবে না। একান্ত প্রয়োজন না থাকলে কর্মীরাও “ওয়ার্ক ফ্রম হোমে”র শিকল ভেঙে ফের অফিসে ফিরতে পারেন। বার, পাব, নাইট ক্লাব বা কোনও বড় অনুষ্ঠানে প্রবেশের জন্য করোনা টিকার শংসাপত্রও দেখাতে হবে না। ইংল্যান্ডের স্কুলগুলিতেও শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরতে হবে না। তবে গণপরিবাহনে যাত্রার ক্ষেত্রে এখনও মাস্ক পরতে হবে।
একইসঙ্গে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, বিধিনিষেধ জারি থাকলেও কেউ যদি মাস্ক না পরেন, তবে তাদের জরিমানা বা শাস্তির মুখে পড়তে হবে না।
এর আগে গত বছরের ১৯ জুলাই ইংল্যান্ডের করোনা বিধিনিষেধ প্রত্য়াহার করা হয়েছিল। ওই দিনটিকে “ফ্রিডম ডে” বলেও উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু নভেম্বরের শেষভাগে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ মিলতেই ফের বিধিনিষেধ জারি করা হয়। সে দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের কৃতিত্ব বুস্টার টিকাকরণকেই দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমাদের ভ্যাকসিন, করোনা পরীক্ষা ও অ্য়ান্টিভাইরাল শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলছে এবং সেই কারণেই আমরা ফের প্ল্যান এ-তে ফিরতে পেরেছি।”
আরও পড়ুন: Bangladesh News: আজব কাণ্ড! কেন নর্দমায় নামলেন খোদ শহরের মেয়র?