লন্ডন: হঠাৎ একের পর এক মন্ত্রীর ইস্তফা। প্রথমদিন যে সংখ্যাটা ৪-এ সীমাবদ্ধ ছিল, তা পরের দিন বেড়ে ৫০-এ পৌঁছয়। ইস্তফার হিড়িকে এবং দলীয় কর্মীদের চাপের মুখে পড়েই মাথা নত করতে হয়েছে বরিস জনসনকে। বৃহস্পতিবারই তিনি জানান যে, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে তিনি ইস্তফা দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মেয়াদ সম্পূর্ণ করতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। তবে নতুন প্রধানমন্ত্রী যেই হন না কেন, তাঁর প্রতি পূর্ণ সমর্থন থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এদিকে, হঠাৎ প্রধানমন্ত্রীর পদ চলে যাওয়ায় বেশ কিছুটা বিপাকেই পড়েছেন বরিস জনসন (Boris Johnson), এমনটাই সূত্রের খবর। চলতি মাসের শেষভাগেই তাঁর বিয়ে উপলক্ষে একটি বিলাসবহুল পার্টি দেওয়ার কথা রয়েছে। এবার সেই পার্টির কী হবে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
একাধিক বিতর্কে জড়িত প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গত বছরই করোনা সংক্রমণের ঢেউয়ের মাঝেই লুকিয়ে বিয়ে সেরেছিলেন ক্যারি জনসনের সঙ্গে। সেই সময় পার্টি দেওয়া সম্ভব হয়নি করোনাবিধি নিষেধের কারণে। ব্রিটিশ দৈনিক সংবাদপত্র দ্য মিররের প্রতিবেদন অনুযায়ী, করোনা সংক্রমণ কমায় চলতি মাসের শেষভাগেই বরিসের সরকারি বাসভবন চেকারস কাউন্টিতে একটি বড় পার্টি দেওয়ার কথা ছিল।
সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীর গদি হারালেও, স্ত্রীর মন ভাঙতে নারাজ বরিস। সেই কারণেই তিনি মনস্থির করেছেন, যাই-ই হোক না কেন, বিয়ে উপলক্ষে পার্টি অবশ্যই দেবেন। তাও আবার বড় মাপেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কনজারভেটিভ পার্টির এক নেতা জানিয়েছেন, নতুন প্রধানমন্ত্রী বাছাই না হওয়া অবধি বরিস জনসনই দলনেতা থাকবেন। প্রধানমন্ত্রীর যাবতীয় দায়িত্বও তিনি পালন করবেন। তবে একইসঙ্গে স্ত্রীকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালনেও বদ্ধপরিকর বরিস।
বর্তমানে বরিস জনসন লন্ডনের ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের একটি বাড়িতে থাকলেও, প্রায় সকল ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীরাই ১৬ শতাব্দীতে তৈরি চেকারস কাউন্টি হাউস ব্যবহার করেছেন বিশ্বনেতাদের জন্য আয়োজিত নানা অনুষ্ঠান,পার্টির জন্য। এই বাড়িতেই নিজের বিয়ের পার্টি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বরিস জনসনের। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর পদ আর না থাকায়, তিনি ওই বাড়িতে পার্টি দিতে পারবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে।
সূত্রর খবর, আগামী ৩০ জুলাই এই পার্টি হওয়ার কথা। বিলাসবহুল পার্টি বলতে যা বোঝায়, তার যাবতীয় ব্যবস্থাই রাখা হবে এই পার্টিতে। ইতিমধ্যেই পরিবার, বন্ধু-বান্ধবদের নিমন্ত্রণ করা হয়ে গিয়েছে। কমপক্ষে প্রায় হাজার থেকে দুই হাজার অতিথি আসার কথা এই পার্টিতে। সেই কারণেই বরিস জনসন চাইছেন না এই পার্টি কোনওভাবেই বাতিল হোক। প্রায় ১ হাজার ফুটবল মাঠের আয়তনের সমান ৬০০ হেক্টর জমির উপরে তৈরি চেকার্স কাউন্টিতেই বিয়ের পার্টি দিতে বদ্ধপরিকর বরিস জনসন। এরমাঝেই যদি নতুন প্রধানমন্ত্রী বাছাই করা হয়, সেক্ষেত্রে পার্টির জন্য অন্য কোনও জায়গাই খুঁজতে হবে বরিস জনসনকে।