ব্রিটেন : বছর দুয়েক হয়ে গিয়েছে মানব জীবনে থাবা বসিয়েছে করোনা (Coronavirus)। এখনও সেই সংক্রমণের চিকিৎসা নিয়ে নিরন্তর গবেষণা চলছে। ইতিমধ্যেই বিশ্বের বেশির ভাগ দেশেই শুরু হয়েছে করোনার টিকাকরণ। তবে এখনও ওষুধ নিয়ে চলছে পরীক্ষা-নিরিক্ষা। করোনা নিরাময়ের কোনও নির্দিষ্ট ওষুধ নিয়ে এখনও নিশ্চিত নন চিকিৎসকেরা। তবে মোলনুপিরাভির (Molnupiravir) নামে একটি ওষুধ নিয়ে গবেষণা চলছিল অনেক দিন ধরেই। এবার সেই ওষুধই অনুমোদন পেল ব্রিটেনে (Britain)।
মার্কিন সংস্থা মার্ক অ্যান্ড রিজব্যাক বায়োথেরাপিউটিকস (Merck and Ridgeback Biotherapeutics) এই ওষুধ বাজারে আনছে। এটি কোভিডের অ্যান্টি ভাইরাল পিল হিসেবে কাজ করবে। করোনা অতিমারির বিরুদ্ধে লড়াইতে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলে মনে করা হচ্ছে। ব্রিটেনের মেডিসিন অ্যান্ড হেল্থকেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি এজেন্সির (Medicines and Healthcare products Regulatory Agency) তরফ থেকে এই ওষুধটিকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, করোনা পরীক্ষা করার বা করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ার পাঁচ দিনের মধ্যেই এই ওষুধ খেতে হবে।
করোনায় খাওয়ার ওষুধ হিসেবে এটিই প্রথম অনুমোদন পেল। এর আগে রেমিডেজ়িভির নামে ইঞ্জেকশন ব্যবহার করা হয়েছে করোনার চিকিৎসার জন্য। সাধারণত করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে এই ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। ব্রিটেনের সরকারের তরফেও মোলনুপিরাভির করোনা চিকিৎসার ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হবে বলে জানানো হয়েছে। ব্রিটেনে এখনও করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। গত সাতদিনে দৈনিক সংক্রমণ ৪০ হাজারের বেশি হয়েছে।
আগেই গবেষকরা জানিয়েছিলেন নতুন এই অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধ মোলনুপিরাভির ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সংক্রমণ রুখতে সক্ষম। করোনা রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত রেমিডেজ়িভির বা ফ্যাবিপিরাভির কিছুটা কার্যকর হলেও সংক্রমণ রোধে সম্পূর্ণ সফল নয় কোনওটিই। তবে জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির এক গবেষক দল মোলনুপিরাভির নামে এই ওষুধটি তৈরি করেছেন। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে সক্ষণ এই ওষুধটি করোনা সংক্রমণ রুখতেও সফল বলেই দাবি করা হয়েছে গবেষণাপত্রে।
যেহেতু এই ওষুধ বাকি আর পাঁচটা ওষুধের মতোই সরাসরি খাওয়া যায়, সেই কারণে আগেভাগেই করোনা রোগীর চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব। এর মূল তিনটি উপকারি দিক হল- সংক্রমণ গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছনোর আগেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। দ্রুত সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, যার ফলে রোগীকে বেশিদিন আইসোলেশনে কাটাতে হয় না। তৃতীয়ত ও সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করে ফেলায় বাকিদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে না।
গবেষকরা ইতিমধ্যেই ল্যাবরেটরিতে প্রাণীর উপরও গবেষণা চালিয়ে দেখা গিয়েছে যে এই ওষুধ ব্যবহারের পর সংক্রমিত প্রাণীর সংস্পর্শে থাকলেও কোনওভাবেই সংক্রমণ ছড়ায় না। আপাতত গবেষণার দ্বিতীয় ধাপে রয়েছে এই ওষুধ।
আরও পড়ুন : Delhi Air Pollution: বাড়ছে বিষ-কণা, সূচক বলছে রাজধানীর বাতাস ‘বিপজ্জনক’