কিয়েভ : রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলু খাগড়ার প্রাণ যায়। বহুল প্রচলিত একটি প্রবাদ বাক্য। বাস্তবে এই প্রবাদের প্রতিফলন আগেও দেখা গিয়েছে। আর এই প্রবাদের কড়া দাওয়াই হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন ইউক্রেন ও রাশিয়ার সাধারণ নাগরিকরা। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতির প্রভাব শুধুমাত্র সেই দুই দেশের সীমানাতে আটকে নেই। সীমানা পেরিয়ে তা গোটা বিশ্বকেই প্রভাবিত করেছে এই দুই দেশের যুদ্ধ। এক দেশে যুদ্ধ পরিস্থিতি। অন্য দেশে খাবার, জ্বালানি ও অন্যান্য জরুরি পরিষেবার জন্য হাহাকার। দ্বীপরাষ্ট্রে এখন টালমাটাল পরিস্থিতি। বিভিন্ন পরিষেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিদেশি অর্থ তলানিতে ঠেকেছে। গলা অবধি ঋণে জর্জরিত এই দেশ অর্থনৈতিক সঙ্কটের পাশাপাশি ভুগছে রাজনৈতিক সঙ্কটেও। আর শ্রীলঙ্কায় এই পরিস্থিতির কারণ রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ! এমনটাই জানালেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। তিনি অভিযোগ করেছেন রাশিয়ার কারণেই বিশ্ব জুড়ে খাদ্য সঙ্কট ও মূল্যস্ফীতি বেড়ে গিয়েছে।
বুধবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কি বলেছেন, ‘ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনে বেশ কিছু কৌশলকে হাতিয়ার করেছে তারা। তার মধ্যে একটি হল অর্থনৈতিক বিপর্যয় সৃষ্টি করা।’ দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিওলে এশিয়াম লিডারশিপ কনফারেন্সে বলেছেন, ‘খাবার ও জ্বালানির দাম বাড়ায় সমাজে বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। কেউ জানে না এর শেষ কোথায়। এবং কীভাবে তা শেষ হবে।’ উল্লেখ্য, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে বিশ্ব বাজারে বেড়েছিল জ্বালানির দাম। বেশ কিছু নিত্য় প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দামেও এর প্রভাব পড়েছিল। ফলে বিভিন্ন দেশের মানুষের হেঁশেলেই তার প্রভাব পড়তে দেখা গিয়েছে। বেড়েছিল সারের দামও।
রাষ্ট্রসঙ্ঘের খাদ্য ও কৃষিজ সংস্থা (Food and Agricultural Organisation) অনুযায়ী ইউক্রেনের ওডেসা বন্দরে এখনও ২০ মিলিয়ন টন শস্য আটকে রয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সেদেশে আমদানি-রফতানি ব্যাহত হয়েছে। বিশ্বে ইউক্রেন হল পঞ্চম বৃহত্তম গম রপ্তানিকারক। কিন্তু যুদ্ধের কারণে সেই রফতানি বন্ধ থাকায় বিশ্বে দাম বেড়েছে গমজাত দ্রব্যের। এদিকে পাঁচ মাস হতে চলল ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করেছে রাশিয়া। একাধিকবার যুদ্ধ বিরতি নিয়ে দুই তরফে বৈঠক হলেও সুরাহা মেলেনি কোনও।