ওয়াশিংটন: শেষ দফায় আফগানিস্তান ছেড়ে দেশে ফিরে এসেছে মার্কিন বাহিনী। তবুও সেনা প্রত্য়াহার ঘিরে দেশের অন্দরে এবং বিশ্বজুড়েই সমালোচিত হচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এক প্রকার বাধ্য হয়েই তিনি ফের একবার সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়ে সাফাই দিলেন।মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে বাইডেন জানান, অন্তর থেকে তিনি বিশ্বাস করেন যে এই সিদ্ধান্ত একদম সঠিক।
৩১ অগস্ট আফগানিস্তান থেকে উদ্ধারকার্য ও সেনা প্রত্যাহারের শেষ হওয়ার পরই সাংবাদিক বৈঠক করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হোয়াইট হাউস থেকে তিনি বলেন, “আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, আমি মন থেকে বিশ্বাস করি যে আমেরিকার জন্যে এটাই সঠিক সিদ্ধান্ত। আমরা দীর্ঘ সময় ধরে যুদ্ধে জড়িয়ে রয়েছি। যদি আপনার বয়স ২০ হয়, তবে আপনি কখনওই আমেরিকায় শান্তি দেখেননি। যখন আমি শুনি যে আফগানিস্তানে আমরা কম খরচেই অল্প খরচেই সেনা মোতায়েন করে রাখা যেত, তখন তারা বুঝতে পারেন না দেশের এই ১ শতাংশ বাসিন্দা , যারা গায়ে ইউনিফর্ম চাপিয়ে, দেশের জন্য নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিতেও প্রস্তুত, তাদের কাছ থেকে কত কিছু চাইছি আমরা।”
আফগানিস্তানের যুদ্ধ শেষ, এই ঘোষণা করে বাইডেন জানান, আমেরিকাবাসীদের কাছে তিনি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা পূরণ করেছেন তিনি। বাইডেন আরও জানান, তিনি চতুর্থ প্রেসিডেন্ট, যাকে আফগানিস্তান সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে এবং যুদ্ধ শেষ করা উচিত কিনা, তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমি যখন প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য লড়ছিলাম, তখন মার্কিনবাসীদের আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে এই যুদ্ধ শেষ করব। আজ সেই প্রতিশ্রুতিকেই পূরণ করেছি আমি। আফগানিস্তানে যুদ্ধ বা সামরিক মিশন জারি রাখার কোনও প্রয়োজন নেই আর। ২০ বছর ধরে যুদ্ধ চলার পর আমি দেশের আগামী প্রজন্মকেও এমন যুদ্ধ করতে পাঠাতে পারি না, যা অনেক আগেই শেষ হয়ে যাওয়া উচিত ছিল।”
আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান জারি রাখতে বিগত ২০ বছরে যে ২ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে, তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই দুই দশক ধরে যুদ্ধ জারি রাখার জন্য প্রতিদিন আনুমানিক ৩০০ মিলিয়ন (৩০ কোটি ডলার) খরচ হয়েছে। কম্যান্ডার-ইন-চিফ হিসাবে আমি বিশ্বাস করি, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে এটিই সঠিক সিদ্ধান্ত। বর্তমানে কী হচ্ছে, তা নিয়ে আমাদের উদ্বেগ হওয়া উচিত, দুই দশক আগে কী হয়েছিল, তা নিয়ে উদ্বেগ না করে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই জারি থাকবে।”
একইসঙ্গে গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবারে বিমানবন্দরের বাইরে হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আইসিস-কে, তোমাদের সঙ্গে এখনও হিসাব বাকি রয়েছে। বিমানবন্দরে হামলার পরেরদিনই আমরা নিজেদের ক্ষমতা দেখিয়েছি।” আরও পড়ুন: অবশেষে মুখ খুলল তালিবান, সরকার গঠন ও নাগরিক পরিষেবা নিয়ে কী সিদ্ধান্ত হল বৈঠকে?