অবশেষে মুখ খুলল তালিবান, সরকার গঠন ও নাগরিক পরিষেবা নিয়ে কী সিদ্ধান্ত হল বৈঠকে?

তালিব সূত্রে খবর, আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী সরকারে দেশের সমস্ত বর্ণের মানুষদেরই জায়গা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

অবশেষে মুখ খুলল তালিবান, সরকার গঠন ও নাগরিক পরিষেবা নিয়ে কী সিদ্ধান্ত হল বৈঠকে?
ছবি:PTI
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 01, 2021 | 8:55 AM

কাবুল: মার্কিন সেনা বিদায় নিতেই স্বস্তির নিশ্বাস নিচ্ছে তালিবানরা। আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনেই তারা সম্পূর্ণ নজর রাখতে চায়। দ্রুত সরকার গঠনের লক্ষ্যেই শনিবার থেকে সোমবার অবধি কান্দাহারে বিশেষ বৈঠক করলেন তালিবানের শীর্ষ নেতারা। মঙ্গলবার টুইটে এই বৈঠকের কথাই জানালেন তালিবান মুখপাত্র জাবিদুল্লাহ মুজাহিদ।

কাবুল দখলের পরই একে একে তালিবান শীর্ষনেতারা আফগানিস্তানে ঘাঁটি গেড়েছেন। ধাপে ধাপে বৈঠকও হয়েছে সরকার গঠন, শাসন-আইন ব্যবস্থা ইত্যাদি নিয়ে। ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে ৩৩টিতেই গভর্নর ও পুলিশ প্রধান নিয়োগ করা হয়েছে। তিনদিনের বৈঠকে এ বার আফগানিস্তানের রাজনৈতিক, সামাজিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করা হল।

তালিব মুখপাত্র জাবুদুল্লাহ মুজাহিদ টুইটে লেখেন, “ইসলামিক এমিরেটসের প্রধান নেতা শেক আল-হাদিথ হিবাউল্লাহের নেতৃত্বের এই বৈঠক করা হয়েছে। বর্তমানে আফগানিস্তান রাজনৈতিক, সামাজিক ও নিরাপত্তা নিয়ে যে সমস্যাগুলির মুখে পড়ছে, তা নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে।”

বৈঠকে তালিবান নেতারা জিনিসপত্র্র সংরক্ষণ, বিভিন্ন পরিষেবা নিশ্চিত করা এবং সাধারণ মানুষদের নতুন পরিষেবা সহ নানা সুবিধা দেওয়া নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে বলেই জানানো হয়েছে। এছাড়াও নতুন ইসলামিক সরকার গঠন নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সরকার গঠনের নানা পদক্ষেপ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। জাবিদুল্লাহ জানান, বৈঠক শেষে ইসলামিক এমিরেটসের শীর্ষ নেতা সকলকে নিজেদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন।

গত ১৫ অগস্ট ক্ষমতা দখলের পর থেকেই নতুন সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে তালিবান। গত ৩১ অগস্ট মার্কিন সেনা প্রত্যাহারও সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় এ বার জোরকদমে সরকার গঠনের প্রস্তুতি শুরু নিচ্ছে তালিবান নেতারা। তালিবানের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল, যতদিন না বিদেশী শক্তিগুলি আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যাচ্ছে, ততদিন সরকার গঠন নিয়ে কোনও ঘোষণা করা হবে না।

এ দিকে, মঙ্গলবারই পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি বলেন, “আগামি কয়েকদিনের মধ্যেই আফগানিস্তানে নতুন সরকার গঠন হবে। আমরা আশা করছি সকলের মতৈক্যেই একটি মিলিত সরকার গঠন হবে।” তালিব সূত্রে খবর, আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী সরকারে দেশের সমস্ত বর্ণের মানুষদেরই জায়গা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তালিবান। তাদের পরিকল্পনা, দেশের সমস্ত মানুষকে একজোটে শাসন করতে বিভিন্ন বর্ণের মানুষদের হাতে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হবে। এদের মধ্যে পস্তুন থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রদেশের ছোট জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরাও থাকবেন।

আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তালিবানের তরফে জানানো হয়েছে, ইসলামিক এমিরেটস অব আফগানিস্তানের দায়িত্বভার পালনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারে একজন “আমির-উল-মোমিনিন” অর্থাৎ শীর্ষনেতার বিশ্বাসভাজন কোনও তালিবান কম্যান্ডার এই দায়িত্ব পাবেন।  ইতিমধ্যেই তালিবানের শীর্ষ নেতারা আগামিজদিনের তালিব সরকার ও তার মন্ত্রী কারা হবেন, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া শুরু করেছেন। নয়া সরকারের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে আইন ব্যবস্থা, অন্তর্বর্তী সুরক্ষা, প্রতিরক্ষা, বিদেশমন্ত্রক, অর্থ, তথ্যমন্ত্রকে। এছাড়াও কাবুলকে ঘিরে একটি বিশেষ মন্ত্রক গঠনের পরিকল্পনা চলছে। আরও পড়ুন: তালিবানি ‘গান’-এর ভয়ে কাবুলে বন্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীত, প্রিয় নেহা কক্করও যেন আলোকবর্ষ দূরে