ওয়াশিংটন: আফগানিস্তান থেকে বহু মানুষকে এয়ারলিফট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে আমেরিকায়। মার্কিন সেনার বিভিন্ন বেসে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে তাঁদের। তাঁদের কী ভাবে রাখা হয়েছে, সেই প্রশ্নও সামনে এসেছে। এয়ারলিফট শেষ হওয়ার পর প্রথমবার সেই শরণার্থী শিবিরের ছবি প্রথমবার প্রকাশ্যে আনল জো বাইডেন প্রশাসন। তবে এখনও পর্যন্ত নিরাপত্তার স্বার্থে আফগান শরণার্থীদের সঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না সাংবাদিকদের।
অন্তত ১০ হাজার আফগান শরণার্থী রয়েছেন ওই বেসগুলিতে। তাঁদের মেডিক্যাল চেক আপ করার ব্যবস্থা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। আমেরিকায় তাঁদের পুনর্বাসন দেওয়ার আগে সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমেরিকার এই মিশনকে ‘ঐতিহাসিক’ ও ‘নজিরবিহীন’ বলে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে আমেরিকার তরফে। এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে হাজার হাজার আফগানকে নিয়ে এসে যে ভাবে আশ্রয় দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে, তেমনটা আগে ঘটেনি আমেরিকায়।
শুক্রবার আফগান শিশুদের আমেরিকার ওই শরণার্থী শিবিরের বাইরে খেলাধূলা করতে দেখা গিয়েছে। বড় বড় সাদা তাঁবুতে রাখা হয়েছে আফগান পরিবারগুলিকে। খাবারের জন্য লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে তাঁদের। কন্টেনারে ভরে তাঁদের দেওয়া হচ্ছে আফগানদের পছন্দের খাবার বাসমতী চালের ভাত ও স্টু। প্রায় সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে শরণার্থীদের জন্য এই বিশেষ অঞ্চল তৈরি করা হয়েছে। সেখানে রয়েছে এসি তাঁবু, ডাইনিং হল। যে দেশ থেকে তাঁরা এসেছে, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এক বিশেষ অঞ্চলকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
আফগানিস্তান থেকে অন্তত ৫০ হাজার আফগানকে উড়িয়ে নিয়ে আসা হয়েছে আমেরিকায়। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এমন অনেকে যাঁরা কেউ গাড়ির চালক, কেউ ট্রান্সলেটর হিসেবে কাজ করেছেন আফগানিস্তানে, সাহায্য করেছেন মার্কিন সেনাকে।
১৫ অগস্ট কাবুল দখলের পরই ব্য়স্ত হয়ে পড়েছিল কাবুলের হামিদ কারজ়াই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের কর্মী, রাষ্ট্রদূত ও দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়। বিভিন্ন দেশে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় আফগান নাগরিকদেরও। তবে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় এবং তালিবানি হুঁশিয়ারি মুখে পড়ে তড়িঘড়ি উদ্ধারকাজ শেষ করতে হয়। ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি বিমানবন্দরের বাইরে অপেক্ষারত আফগান নাগরিকদের। গত ৩১ অগস্টই আফগানিস্তানের মাটি ছাড়ে শেষ মার্কিন বিমান। তবে আফগানিস্তানেই আটকে পড়েন বহু ব্রিটিশ ও মার্কিন নাগরিক। চলতি সপ্তাহেই চার্টার্ড বিমানে কয়েকশো মার্কিন ও আফগান নাগরিকদের ফিরিয়ে আনা ঘিরে তালিবানদের সঙ্গে বিরোধ বাধে। বাধ্য হয়ে আফগান নাগরিকদের রেখেই ফিরে যায় বিমানটি। অবশেষে, গতকাল অবশেষে সচল হল কাবুল বিমানবন্দর। বৃহস্পতিবারই প্রায় ২০০ বিদেশীকে নিয়ে আফগানিস্তান থেকে প্রথম বাণিজ্যিক বিমান উড়েছে। ৩১ অগস্ট মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর এই প্রথম বাণিজ্যিক বিমান চলাচল উড়ান নিল। আগামিদিনে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আরও বিমান চালু করার সম্ভাবনা রয়েছে। আরও পড়ুন: আফগান মহিলাদের কথা শোনা হোক, সুরক্ষা পাক সংখ্যালঘুরা, রাষ্ট্রপুঞ্জে সওয়াল ভারতের