US-Russia Power: কিসমে কিতনা হ্যায় দম…রাশিয়া নাকি আমেরিকা, মহাসাগরে কার ক্ষমতা বেশি?
US-Russia Power: মৃত অর্থনীতি বলে ট্রাম্পের কটাক্ষ, আর তারপরই প্রাক্তন রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের 'ডেড হ্যান্ড' অস্ত্রের হুঁশিয়ারি। মস্কোর কড়া জবাবে রুষ্ট হয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পাঠিয়েছেন দুটি মার্কিন সাবমেরিন।

ওয়াশিংটন: ঠান্ডাযুদ্ধের কথা মনে আছে? ১৯৪০ থেকে ১৯৯০-র দশকের প্রথমার্ধ পর্যন্ত রাশিয়া-আমেরিকার মধ্যে এই ঠান্ডা যুদ্ধ চলেছিল। সরাসরি যুদ্ধে জড়ায়নি দুই শক্তিধর দেশ, বরং তারা ‘প্রক্সি ওয়ার’ বা ছায়াযুদ্ধেই লিপ্ত ছিল। বিশ্ব জুড়েই সর্বদা একটা আতঙ্ক থাকত যে এই বুঝি পরমাণু যুদ্ধ হল। আবার কি সেই ঠান্ডা যুদ্ধের আবহই ফিরে আসছে?
মৃত অর্থনীতি বলে ট্রাম্পের কটাক্ষ, আর তারপরই প্রাক্তন রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের ‘ডেড হ্যান্ড’ অস্ত্রের হুঁশিয়ারি। মস্কোর কড়া জবাবে রুষ্ট হয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পাঠিয়েছেন দুটি মার্কিন সাবমেরিন। এই সাবমেরিন পাঠিয়েই কি তিনি মহাসাগরে নিজের ক্ষমতা জাহির করতে চাইছেন? মহাসাগরে আসলে কার দাদাগিরি চলে? একবার দেখে নেওয়া যাক, দুই দেশের কার ক্ষমতা কতটা-
আমেরিকা-
আমেরিকার হাতে রয়েছে ওহিও ক্লাস মার্কিন ব্যালিস্টিক মিসাইল সাবমেরিন। এর পোশাকি নাম ‘বুমার্স’। এই মুহূর্তে আমেরিকার কাছে রয়েছে ১৪টি। এই সাবমেরিন পরমাণু অস্ত্র বহনকারী, লুকিয়ে জলের নিচ থেকে হামলা করতে পারে। এক একটি সাবমেরিন একসঙ্গে ২০টি ‘সাবমেরিন লঞ্চড ব্যালিস্টিক মিসাইল’ বা SLBM বহনে সক্ষম। এই সাবমেরিনের প্রাথমিক অস্ত্র হল লকহিড মার্টিনের বানানো ‘ট্রাইডেন্ট’ নামের SLBM।
এছাড়াও ট্রাম্পের সেনার হাতে রয়েছে মার্কিন ফাস্ট অ্যাটাক সাবমেরিন। তিন রকমের পরমাণু জ্বালানি চালিত SSN সাবমেরিন রয়েছে, এগুলি হল- ভার্জিনিয়া ক্লাস, সে-উল্ফ ক্লাস ও লস অ্যাঞ্জেলস ক্লাস। আমেরিকার কাছে ভার্জিনিয়া ক্লাসের সাবমেরিন-ই রয়েছে অন্তত ২৪টি। যার মধ্যে ইউএসএস হাওয়াই, ইউএসএস মিসৌরি আধুনিকতম। এই সাবমেরিনগুলিতে থাকে টমাহক মিসাইল, হারপুন ও টরপেডো। এক একটি এসএসএন ক্লাস ৫০টি অস্ত্র বহন করতে পারে। তাড়া করে শত্রুর সাবমেরিন ধ্বংস করতে এগুলি সিদ্ধহস্ত। প্রয়োজনমতো জলের উপর দ্রুত ভেসে উঠতে ও ডুব দিতে ওস্তাদ এই সাবমেরিনগুলি।
রাশিয়া-
আমেরিকার হাতে একগুচ্ছ সাবমেরিন থাকলে, রাশিয়াও পিছিয়ে নেই। রাশিয়ার কাছেও আছে ব্যালিস্টিক মিসাইল সাবেরমিন। বরং বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম সাবমেরিন বাহিনী রয়েছে রাশিয়ারই। অন্তত ৬৪টি বড় মাপের সাবমেরিন রয়েছে মস্কোর ভাঁড়ারে। যার মধ্যে ১৪টি ব্যালিস্টিক মিসাইল সাবমেরিন এসএসবিএন। এর মধ্যে রয়েছে বোরেই ক্লাস ও ডেলটা ৪ ক্লাসের ডুবোজাহাজ।
রুশ নৌসেনার কাছে রয়েছে ৮টি বোরেই ক্লাস সাবমেরিন, যার পেটে ১৬টি ‘বুলাভা’ ব্যালিস্টিক মিসাইল ও ৬টি টরপেডো লঞ্চার থাকে। শত্রুর হামলাকে ঠেকাতে এই জাহাজ থেকে আন্টি-সাবমেরিন রকেট ছোড়া যায়। ডেলটা ক্লাসের ৬টি সাবমেরিনে অন্তত ১৬টি করে ‘সিনেভা’ ব্যালিস্টিক মিসাইল থাকে। রুশ নৌসেনার শিরদাঁড়া এই “ডেল্টা ৪”।
পুতিনের অস্ত্রভাণ্ডারে রয়েছে ফাস্ট অ্যাটাক সাবমেরিন। রুশ নৌসেনার কাছে ৪ রকমের ইয়াসিন ক্লাস পরমাণু হামলায় সক্ষম সাবমেরিন রয়েছে। এক একটি এই সাবমেরিনের পেটে ৫টি করে ক্যালিবার মিসাইল থাকে। ভিতরে থাকে ৪ টি করে পি-৮০০ ওনিকস মিসাইল। এগুলি লং রেঞ্জে হামলা করতে পারে।
তবে রুশ নৌসেনার ‘সাইলেন্ট কিলার’ অকুলা ক্লাসের পাঁচটি সাবমেরিন। জলের নিচে হাঙরের মতো মারণক্ষমতা, তাই নাম অকুলা। রুশ ভাষায় মানে হাঙর। মার্কিন লস অ্যাঞ্জেলস ক্লাসের সাবমেরিনকে জবাব দিতে রাশিয়ার মোক্ষম অস্ত্র। এই সাবমেরিনের পেটে থাকে ক্যালিবর, ওনিক্স ও গ্রানিতের মতো মিসাইল ও টরপেডো।
তবে সংঘাত চায় না দুই দেশই। অন্তত সরাসরি সংঘাতে কেউ জড়াতে চাইবে না পরিস্থিতি খুব খারাপ না হলে। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

