ওয়াশিংটন: ইজরায়েল হামাস যুদ্ধের মধ্যেই পশ্চিম এশিয়ায় সংঘাত আরও বাড়ল। শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) ভোর থেকে ইয়েমেনে হুথি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যৌথ হামলা শুরু করল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন। গত বছরের শেষ থেকে লোহিত সাগরে একের পর এক পণ্যবাহী জাহাজে আক্রমণ করেছে ইয়েমেনের এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী। যার ফলে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য। এর প্রতিশোধেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেন ইয়েমেনে হুথি গোষ্ঠীর ঘাঁটিগুলিতে বিমান হামলা শুরু করল বলে, জানিয়েছেন এক মার্কিন সামরিক কর্তা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ব্রিটেন অবশ্য এখনও সরকারিভাবে এই হামলার ঘোষণা করেনি। তবে, ইয়েমেনের রাজধানী সানা এবং বন্দর নগরী আল হুদাইদাহ থেকে প্রচণ্ড বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গিয়েছে।
গৃহযুর ফলে রাজধানী সানা-সহ ইয়েমেনের বেশিরভাগ অংশের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে এই বিদ্রোহী হুথি গোষ্ঠীর হাতেই। তাদের খোলাখুলি সমর্থন করে ইরান। যাদের সঙ্গে এখন মার্কিন যুক্তরাষ্টড্রে সম্পর্ক সাপে-নেউলের মতো। প্যালেস্তাইনের হামাস যোদ্ধা গোষ্ঠীর প্রতি প্রথম থেকেই সংহতি দেখিয়েছে হুথিরা। গাজায় ইজরায়েলের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে তারা লোহিত সাগরে ইজরায়েলের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত জাহাজে হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছিল। তারপর থেকে এই গুরুপূর্ণ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পথে বহু জাহাজ অপহরণ করেছে এবং বহু জাহাজের উপর হামলা চালিয়েছে হুথিরা। তবে, এই জাহাজগুলির অনেকগুলির সঙ্গেই ইজরায়েলের কোনও স্পষ্ট যোগাযোগ ছিল না।
BREAKING: BRITISH MINISTRY OF DEFENSE PUBLISH VIDEO OF AIRCRAFT TAKING OFF TO TARGET YEMEN pic.twitter.com/L6Eds8BR1e
— Sulaiman Ahmed (@ShaykhSulaiman) January 12, 2024
লোহিত সাগরে এই হামলাগুলির ফলে অনেক দেশেরই সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাহত হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামও নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে না। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার ইরানের নৌবাহিনী ওমানের উপকূলে একটি তেলের ট্যাঙ্কার আটক করে। পাশাপাশি, এডেন উপসাগরে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যপথে হুথিরা একটি জাহাজ-বিধ্বংসী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে বলে দাবি করে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। একই দিনে, মার্কিন বিদেশমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন মধ্যপ্রাচ্যে বেশ কয়েকটি দেশে সফর শেষ করেন। এর কয়েক ঘন্টা পরই মার্কিন বাহিনীর নেতৃত্বে ইয়েমেনে বিমান হামলা শুরু হয়েছে। মার্কিনীরা বলেছে, এই হামলার লক্ষ্য হুথিদের উত্সে গিয়ে আঘাত করা। এর আগেই অবশ্য বাণিজ্য জলপথে জাহাজগুলিতে ড্রোন এবং অ্যান্টি-শিপ মিসাইল হামলা চালালে তার ফল ভুগতে হবে বলে সতর্ক করেছিল বাইডেন প্রশাসন। এর ফলে, ২০১৬ সালের পর এই প্রথম ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হামলা চালাল।
Hodeidah #Yemen pic.twitter.com/sPOGj4E4v1
— Santo Agustian (@AgustianSa47630) January 12, 2024
ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, মার্কিন প্রশাসনের এই বিমান হামলার আহ্বান জানায়। এরপর, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক সেই হামলার অনুমোদন দেন। তারপর থেকে একটানা বিমান হামলা চলছে ইয়েমেনের বিভিন্ন জায়গায়। ইরান যেহেতু হুথিদের খোলাখুলি সমর্থক। তাই এই হামলার পর তারা কী প্রতিক্রিয়া জানায়, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরাসরি ইরান বনাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সংঘাতের সম্ভাবনাও আর উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।