ওয়াশিংটন: কিডনিতে পাথর হয়েছিল। অস্ত্রোপচার করে সেই পাথর বাদ দিতে গিয়েছিলেন ৪১ বছর মহিলা লুসিন্ডা মুলিনস। কেনটাকির এক হাসপাতালে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছে। অস্ত্রোপচারের সময় স্বাভাবিকভাবেই তাঁকে সংজ্ঞাহীন করে নিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। জ্ঞান ফেরার পর, নিজের অবস্থা দেখে আর মুখ দিয়ে কথা সরেনি তাঁর। কী দেখেছিলেন? তাঁর দুই পায়ের কোনোটিই নেই। হাঁটু থেকে কেটে বাদ দিয়েছেন চিকিৎসকরা! তাঁকে আরও জানানো হয়, তাঁর জীবন বাঁচাতে কনুই থেকে দুই হাতও কেটে বাদ দিতে হবে। অর্থাৎ, কিডনির চিকিৎসা করাতে গিয়ে পুরোপুরি বিকলাঙ্গ হয়ে গিয়েছেন তিনি।
কয়েক সপ্তাহ আগেই তাঁর কিডনিতে পাথর ধরা পড়েছিল। পরে চিকিৎসকরা লুসিন্ডাকে জানান, তাঁর কিডনির পাথরে সংক্রমণ হয়েছে এবং সেপটিক হয়ে গিয়েছে। তাই দ্রুত অস্ত্রোপচার করা দরকার। এরপরই কেনটাকির ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। আর অস্ত্রোপচারের পর ওই দুঃসংবাদ পান তিনি।
কয়েকদিন অবসাদগ্রস্ত ছিলেন। একবার তিনি জেগে উঠলে, তিনি দেখতে পান যে ডাক্তাররা তার জীবন বাঁচাতে হাঁটু থেকে তার উভয় পা সরিয়ে দিয়েছেন। তাকে আরও বলা হয়েছিল যে তার কনুইয়ের নীচের দুটি হাতও সরিয়ে ফেলতে হবে। লুসিন্ডা বলেছেন, “হাঁটু থেকে আমার দুই পা-ই আমি হারিয়ে ফেলেছি। আমার দুই হাতও সম্ভবত কনুইয়ের নীচ থেকে কেটে ফেলতে হবে। যে ডাক্তার আমার চিকিৎসা করছেন, তিনি জানিয়েছেন, আমার জীবন বাঁচাতে তাঁদের যা করতে হয়েছে, তাঁরা করেছেন। আর তার ফলেই আমি বিকলাঙ্গ হয়ে পড়েছি।”
তবে, এই বিধ্বংসী খবরেও ইতিবাচক চিন্তাভাবনা এবং জীবনমুখিতা হারিয়ে যায়নি লুসিন্ডার। প্রাথমিকভাবে অবশ্যই তাঁকে গ্রাস করেছিল অবসাদ। পরে অবশ্য তিনি বিষয়টিকে অন্যভাবে দেখা শুরু করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর এই নতুন পরিস্থিতির ফলে, তিনি এখন তাঁর স্বামী এবং দুই ছেলের সঙ্গে বেশি সময় কাটাতে পারছি।
তিনি বলেছেন, “আমি যে বেঁচে আছি, তাতেই আমি খুশি। আমি আমার বাচ্চাদের সবসময় দেখতে পাচ্ছি। আমার পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারছি। স্বামীর সঙ্গে অনেক বেশি সময় কাটাতে পারছি। এগুলোকে ছোটখাটো বিষয় বলে মনে হতে পারে। কিন্তু, এখন এটাই আমার জীবন। প্রতিটি দিন আমি মনে করি ঈশ্বরের আশীর্বাদ। তাঁর অলৌকিক কাজকর্মের কোনও তুলনা নেই। “