ওয়াশিংটন: আমেরিকায় মৃত্যুদণ্ডের জন্য প্রথমবার ব্যবহার করা হল এক নয়া পদ্ধতি। সেই দেশের আলাবামা প্রদেশে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক ব্যক্তিকে ফাঁসি দেওয়া বা ইলেকট্রিক চেয়ার বা প্রাণঘাতী ইনজেকশন দেওয়ার বদলে, বিষাক্ত গ্যাস শুকিয়ে হত্যা করা হল। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমেরিকায় ফের খুঁচিয়ে উঠল মৃত্যুদণ্ড নিয়ে বিতর্ক। আলাবামা সরকারের দাবি, এটা, ফাঁসি বা মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার অন্যান্য পদ্ধতির চেয়ে অনেক বেশি মানবিক পদ্ধতি। তবে সমালোচকরা একে নিষ্ঠুর এবং পরীক্ষামূলক বলে অভিযোগ করেছেন।
১৯৮৮ সালে কন্ট্র্যাক্ট কিলিং অর্থাৎ, অর্থের বিনিময়ে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল কেনেথ ইউজিন স্মিথকে। যাকে আমরা সুপারি কিলিং বলে থাকি। এক ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ নিয়ে, তার স্ত্রীকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল ইউজিন। ২০২২ সালেও তাঁকে একবার মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু, কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে তা কার্যকর করা যায়নি।
এরপর, এই নয়া মৃত্যুদণ্ডের পদ্ধতির বিরুদ্ধে মামলা করেছিল সে। স্মিথের আইনজীবীরা দাবি করেছিলেন যে রাষ্ট্র তাকে শাস্তির পদ্ধতি নিয়ে পরীক্ষা করার জন্য গিনিপিগ হিসেবে ব্যবহার করছে। এটা নিষ্ঠুর কাজ এবং এই অস্বাভাবিক পদ্ধতি সাংবিধানিক নিষেধাজ্ঞাকে লঙ্ঘন করছে। মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট, বৃহস্পতিবার রাতে স্মিথের আবেদন খারিজ করে দেয়।
আইনি লড়াইয়ে হেরে যাওয়ার পর, বৃহস্পতিবার রাতেই ইউজিন স্মিথকে নাইট্রোজেন শ্বাসের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তাকে অক্সিজেন মাস্কের মতো একটি মাস্ক পরানো হয়। তারপর, সেই মাস্কের মধ্য দিয়ে নাইট্রোজেন গ্যাস পাঠানো হয়। এর ফলে অক্সিজেনের অভাবে তার মৃত্যু হয়। আলাবামা কারাগারে স্থানীয় সময় রাত ৮টা ২৫ মিনিটে স্মিথকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
আমেরিকায় এই প্রথম কাউকে নাইট্রোজেন গ্যাস শুঁকিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হল। ১৯৮২ সালে আমেরিকায় প্রাণঘাতী ইনজেকশনের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিধান শুরু হয়েছিল। তারপর থেকে সাধারণত মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিই গ্রহণ করা হত। এবার সেই শাস্তির পদ্ধতি বদলে গেল।