জেনেভা: কেবল একটি-দুটি দেশ নয়, গোটা বিশ্বজুড়েই দাপট দেখাচ্ছে ওমিক্রন (Omicron) সংক্রমণ। ইউরোপ, আমেরিকায় দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে সংক্রমণ। মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(World Health Organization)-র ইউরোপের প্রধান সমস্ত দেশকেই করোনার বাড়তি সংক্রমণ নিয়ে প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দেন। একইসঙ্গে সংক্রমণ রেখার জন্য বুস্টার ডোজ় (Booster Dose) প্রয়োগের কথাও বলেন তিনি।
গত নভেম্বর মাসেই দক্ষিণ আফ্রিকায় ধরা পড়েছিল ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। কমপক্ষে ৩০ থেকে ৫০ বার অভিযোজিত হওয়ায়, গবেষকরা আশঙ্কা করেছিলেন যে, ডেল্টার থেকেও দ্রত হারে ছড়িয়ে পড়তে পারে ওমিক্রন। অধিক শক্তিশালী হওয়ায়, করোনার টিকাকেও ফাঁকি দিতে পারে এই ভ্যারিয়েন্ট, এমন আশঙ্কাও করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে এটিকে “উদ্বেগের কারণ” হিসাবেও চিহ্নিত করা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপীয় অঞ্চলে অন্তর্গত ৫৩টি দেশের মধ্যে ৩৮টি দেশে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে ওমিক্রন সংক্রমণ। ডেনমার্ক, পর্তুগাল, ব্রিটেন সহ একাধিক জায়গায় ওমিক্রনই ডমিন্যান্ট ভ্যারিয়েন্টের আকার ধারণ করেছে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপীয় প্রধান হান্স ক্লুগ (Hans Kluge) বলেন, “সংক্রমণের আরেকটা ঝড় আসছে, তা আমরা দেখতেই পাচ্ছি। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এই অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত বাকি দেশগুলিতেও ডমিন্যান্ট ভ্যারিয়েন্টের আকার ধারণ করবে ওমিক্রন। ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে বিপদের দিকে ঠেলে দিয়েছে ওই নতুন সংক্রমণ।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য় সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহে বিশ্বের বাকি দেশগুলির তুলনায় ইউরোপের দেশগুলিতেই সংক্রমণ সর্বাধিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ওমিক্রন আসার আগেও এই অঞ্চলে সংক্রমণ বেশি ছিল। মার্চ মাসের মধ্যে ৭ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হবে বলে সতর্কতা জারি করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা।
জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান দফতর থেকে যাদের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি, তাদের বুস্টার ডোজ় দেওয়ার পরামর্শ দিলেও, ক্লুগ বলেন, “বুস্টার ডোজ়ই ওমিক্রনের বিরুদ্ধে লড়াই করার এরমাত্র শক্তিশালী হাতিয়ার। সুতরাং এখন সকলের বুস্টার ডোজ়ের উপরই জোর দিতে হবে।” যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য় সংস্থার মুখপাত্র এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু জানাননি।
কিলুগ জানান, ইউরোপে ওমিক্রন আক্রান্তদের মধ্যে ৮৯ শতাংশেরই সাধারণ করোনার উপসর্গ, যেমন কাশি, গলা ব্যাথা বা জ্বর হচ্ছে। আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই আবার ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মধ্যে। মূলত শহরগুলিতে কর্মক্ষেত্র বা সামাজিক ক্ষেত্র, যেখানে জমায়েত বেশি, সেখানেই এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে।
নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা বিপুল হারে বৃদ্ধি পাওয়ায়, হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে। এরফলে স্বাস্থ্য ব্য়বস্থা ও পরিকাঠামোর উপরও অতিরিক্ত চাপ পড়বে। অন্যান্য় অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবার উপরও একইভাবে চাপ বৃদ্ধি হবে বলে জানান ক্লুগ। আসন্ন কঠিন পরিস্থিতির জন্য সরকার ও কর্তৃপক্ষকে প্রস্তুত থাকার পরামর্শও দেন তিনি।
আরও পড়ুন: Afghanistan Budget: ২০ বছরে প্রথমবার, বিদেশী সাহায্য ছাড়াই অর্থ বাজেট পেশ করবে তালিব সরকার