জেনেভা: শীতের প্রকোপ কিছুটা কমতেই দেশ-বিদেশে কমতে শুরু করেছে করোনা সংক্রমণও (COVID-19)। কিন্তু এরইমধ্যে নতুন করে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ওমিক্রনের সাব-ভ্যারিয়েন্ট(Omicron Sub Variant), যা কিনা বাকি ভ্যারিয়েন্টগুলির তুলনায় অধিক সংক্রামক। মঙ্গলবারই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (World Health Organization) তরফে জানানো হয়, ইতিমধ্যেই বিশ্বের ৫৭টি দেশে পৌঁছে গিয়েছে ওমিক্রনের এই সাব ভ্যারিয়েন্ট। বিশ্বের একাধিক দেশে এটি ধীরে ধীরে ডমিন্যান্ট ভ্যারিয়েন্ট হিসাবেও রূপান্তরিত হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
গত বছরের নভেম্বর মাসের শেষভাগে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম খোঁজ মিলেছিল ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের। ডিসেম্বরের প্রথম ভাগের মধ্যেই বিশ্বের প্রায় ৭০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল এই ভ্যারিয়েন্ট। গত ১০ সপ্তাহ আগেই সেই দক্ষিণ আফ্রিকাতেই খোঁজ মেলে ওমিক্রনের সাব ভ্যারিয়েন্টেরও। ইতিমধ্যেই তা বিশ্বের একাধিক দেশে ডমিন্যান্ট ভ্যারিয়েন্টে পরিণত হচ্ছে।
করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সাপ্তাহিক আপডেটেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, বিগত এক মাসে সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, সংক্রমণের ৯৩ শতাংশই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট এবং এর একাধিক সাব ভ্যারিয়েন্ট যেমন বিএ.১, বিএ১.১, বিএ.২ ও বিএ.৩-র খোঁজ মিলেছে।
বিএ.১ ও বিএ১.১- এই দুটি সাব ভ্যারিয়েন্টই প্রথম চিহ্নিত করা হয়েছিল, বিশ্বের মোট ওমিক্রন সংক্রমণের ৯৬ শতাংশই এই দুটি সাব ভ্যারিয়েন্টের মাধ্যমে ছড়িয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে বর্তমানে বিএ.২ সাব ভ্যারিয়েন্টও দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আসল ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় এর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য আলাদা, কারণ এটি ফের অভিযোজিত বা মিউটেট হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হয়, বিএ.২ সিকোয়েন্সটি ৫৭টি দেশ থেকে সংগ্রহ করে জিআইএসএআইডি-তে জমা দেওয়া হয়েছে। এই ৫৭টি দেশের মধ্যে বেশ কিছু দেশেই মোট ওমিক্রন সংক্রমণের অর্ধেক অংশই এই সাব-ভ্যারিয়েন্ট। ওমিক্রনের সঙ্গে এই সাব ভ্যারিয়েন্টের পার্থক্য সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা যায়নি এখনও অবধি। এর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, সংক্রমণের ক্ষমতা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কতটা ফাকি দিতে পারে, এই সমস্ত তথ্যগুলি জানার জন্য় আরও গবেষণার প্রয়োজন।
এখনও অবধি যে’কটি গবেষণার তথ্য জানা গিয়েছে, তার প্রত্যেকটিই বিএ.২ সাব ভ্যারিয়েন্টকে আসল ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় অধিক সংক্রামক বলেই জানিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার করোনা সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ মারিয়া ভ্যান কেরকোভে মঙ্গলবার জানান, নতুন সাব ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে তথ্য অত্য়ন্ত সীমীত, তবে প্রাথমিক কিছু তথ্য অনুযায়ী বিএ.২ সাব ভ্যারিয়েন্টের বৃদ্ধির হার বিএ.১ ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় বেশি।
তিনি বলেন, “ওমিক্রন সাধারণত ডেল্টা বা অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় গুরুতর অসুস্থতা সৃষ্টি করে না বলেই জানা গেলেও, এই সাব ভ্যারিয়েন্টে কোনও পরিবর্তন এসেছে কিনা, তা এখনও জানা যায়নি। সেই কারণে এখনও সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।”