ভ্যাটিকান সিটি: শনিবার, ভ্যাটিকানে পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে দেখা করলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এদিন প্রায় ৪০ মিনিট ধরে পোপের সঙ্গে কথা হয় জেলেনস্কির। ভ্যাটিকানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চলমান যুদ্ধে যে সমস্ত নিরপরাধ মানুষ হতাহত হয়েছেন, তাঁদের সাহায্যের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে ব্যক্তিগত পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে আলোচনা করেছেন তিনি। পোপের কাছে কিয়েভের ১০-দফা শান্তি পরিকল্পনায় যোগ দেওয়ার আবেদন করেছেন। এছাড়া, ইউক্রেন থেকে রাশিয়ায় শিশুদের অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া নিয়েও পোপের সঙ্গে আলোচনা করেছেন তিনি। কিয়েভের দাবি, ২০২২-এর ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯,৫০০ শিশুকে রাশিয়া বা রাশিয়া-অধিকৃত ক্রিমিয়াতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়া সরকারিভাবে আক্রমণ করার পর থেকে বারবার, পোপ ফ্রান্সিস শান্তির আহ্বান জানিয়েছেন। এই বিষয়ে মস্কোর সঙ্গে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছেন। এপ্রিল মাসের শেষেই পোপ জানিয়েছিলেন, ক্যাথলিক চার্চের পক্ষ থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাতের পর, পোপ কী অবস্থান নেন, সেই দিকে চোখ রয়েছে সকলের।
এদিন, রোমে পৌঁছেই জেলেনস্কি টুইট করেন, “ইউক্রেনের জয়ের জন্য এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সফর!” পোপের সঙ্গে দেখা করার আগে জেলেনস্কি ইতালির প্রেসিডেন্ট সের্গিও মাতারেলা এবং প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। কুইরিনাল প্রাসাদে তাঁকে জমকালোভাবে স্বাগত জানানো হয়। সেই সময় বহু সাধারণ মানুষ প্রাসাদের কাছাকাছি ইউক্রেনের পতাকা হাতে ধরে তাঁধের সমর্থন ব্যক্ত করেন। ইতালি এদিন ইউক্রেনকে সম্পূর্ণ সামরিক ও আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। পাশাপাশি, ইউক্রেনকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্যপদ পাওয়ার জন্যও তারা সমর্থন করবে বলে জানিয়েছে রোম।
জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী মেলোনি সাংবাদিক সম্মেলন করে, রাশিয়ার “নিষ্ঠুর ও অন্যায় আগ্রাসনের” সমালোচনা করেছেন। “যতদিন প্রয়োজন হয়” ইটালি ইউক্রেনকে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন। অবিলম্বে সেনা প্রত্যাহার করার জন্য তিনি রাশিয়াকে আহ্বান জানিয়েছেন। এদিন, একটি ইতালীয় সরকারি বিমানে চড়ে রোমে আসেন জেলেনস্কি। ইতালীয় আকাশসীমায় প্রবেশের পর, সেটিকে বেশ কয়েকটি যুদ্ধবিমানের সুরক্ষা বলয়ে নিয়ে আসা হয়। রবিবার রোম থেকে জার্মানি যাবেন ইউক্রেনিয় প্রেসিডেন্ট।