Budget 2022: করোনা বুঝিয়েছে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর গুরুত্ব, তৃতীয় ঢেউয়ের দোরগোড়ায় বাজেটে কতটা প্রাধান্য পাবে চিকিৎসা পরিকাঠামো?
Healthcare Budget 2022: তৃতীয় ঢেউয়ের মুখে দাঁড়িয়ে তাই এবারের কেন্দ্রীয় বাজেটে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বিশেষ জোর দেওয়া হবে বলেই সূত্রের খবর।
নয়া দিল্লি: করোনার (COVID-19) একের পর এক ঢেউ চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে দেশে উন্নত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো (Healthcare Infrastructure) কতটা জরুরি। বর্তমানে ভারত তথা গোটা বিশ্বই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছে। তৃতীয় ঢেউয়ের মুখে দাঁড়িয়ে তাই এবারের কেন্দ্রীয় বাজেটে (Budget 2022) স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বিশেষ জোর দেওয়া হবে বলেই সূত্রের খবর।
অগুনতি সময়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চিকিৎসক থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর্মী, স্বাস্থ্যক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত সকলেরই ভূয়সী প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত বছরের বাজেটেও অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ২০২২ অর্থবর্ষের জন্য ২ লক্ষ ৩৪ হাজার ৮৪৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলেন। করোনা সংক্রমণের কারণে এক বছরেই সরকারকে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বাজেটের বরাদ্দ দ্বিগুণ করা হয়েছিল। এবারের বাজেটেও স্বাস্থ্যক্ষেত্রে একইভাবে বিপুল অর্থ বরাদ্দ করা হবে।
স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বরাদ্দ বৃদ্ধি:
বিগত কয়েক বছরে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে যে খামতি রয়ে গিয়েছিল, তা পূরণ করতে গতবছরেই স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ১৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। ২০২১ সালে দেশের জিডিপির ১.৮ শতাংশই স্বাস্থ্যক্ষেত্র থেকে এসেছিল। আগামী অর্থবর্ষে এই জিডিপি ২.৫ শতাংশে বেড়ে দাঁড়াতে পারে। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য সরকারের উচিত বেসরকারি ক্ষেত্রে ভর্তুকি প্রদান করা, যাতে আধুনিক চিকিৎসা সামগ্রী ক্রয় করা যায় এবং গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিতে উন্নত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গড়ে তোলা যায়। মেক ইন ইন্ডিয়া ও স্টার্টআপ ইন্ডিয়া প্রকল্পের অধীনে সরকারি-বেসরকারি সংযুক্তিকরণ বাড়ানো হয়েছে।
প্রতিরোধ ও সুস্থতা খাতে জোর:
বর্তমানে করোনা সংক্রমণের উপরই গোটা স্বাস্থ্য পরিষেবার নজর থাকলেও, প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য পরিষেবা ও সুস্থতা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি। এই লক্ষ্য অর্জনে আয়ুষ্মান ভারত বিশেষ সহায়তা করছে। তবে আরও বিনিয়োগ ও আর্থিক তহবিলের প্রয়োজন।
ভারত বিশ্বের এমন একটি দেশ, যার জনগণের ৫০ শতাংশই ২৫ বছরের কম বয়সী। করোনা সংক্রমণের কারণে তাদের স্বাস্থ্যে ব্যপক প্রভাব পড়েছে। শুধু করোনাই নয়, জীবনযাত্রা সংক্রান্ত নানা রোগও ক্রমশ বাড়ছে। সেই কারণেই চিকিৎসার পাশাপাশি প্রতিরোধ মূলক ও সুস্থতা খাতেও অর্থ বাড়ানোর প্রয়োজন। ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ ক্যানসার রোগীর চিকিৎসাই বর্তমানে সম্ভব। ফলে সঠিকভাবে যদি হেলথ স্ক্রিনিং হয়, তবে চিকিৎসা সম্ভব। পাশাপাশি সংক্রামক নয় এবং জীবনশৈলি সংক্রান্ত রোগের চিকিৎসাও সম্ভব। সেই কারণে সরকারের সচেতনতামূলক প্রচারও বাড়ানো সম্ভব।
স্বাস্থ্যবীমায় ছাড়:
প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার অধীনে একদিকে যেমন আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণির চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে, তেমনই মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে ইউনিভার্সাল স্বাস্থ্য কভারেজের অধীনে আনার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। এই লক্ষ্যে ৮০ডি ধারার অধীনে যদি বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়, তবে সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্য বীমায় বিনিয়োগ করতে বেশি আগ্রহী হবেন। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য বীমায় জিএসটিও কমানো বা প্রত্যাহার করা উচিত বলেই মত অর্থনীতি বিশেষজ্ঞদের।
টেলিমেডিসিনে জোর:
শক্তিশালী স্বাস্থ্য পরিকাঠামো তৈরি করতে নয়া বাজেটে টেলিমেডিসিন, বাড়িতে বসে চিকিৎসা ও জাতীয় ডিজিটাল স্বাস্থ্য মিশনের উপর জোর দেওয়া প্রয়োজন। টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলেও সহজেই চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। অন্যদিকে, বাড়িতে বসেই চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া গেলে হাসপাতালগুলির উপর থেকে চাপ অনেকটা কমবে। তাই আসন্ন বাজেটে ডিজিটাল স্বাস্থ্য ও উদ্ধাধনী ক্ষমতার উপর বিশেষ জোর দেওয়া প্রয়োজন।
প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা:
করোনা সংক্রমণের জেরে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে যে ব্য়পক চাপ সৃষ্টি হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্কট। পর্যাপ্ত সংখ্য়ক স্বাস্থ্যকর্মী না থাকায়, অনেক সময় উপযুক্ত পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হয় না। সেই কারণে এবারের বাজেটে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ করা উচিত দেশের যুব সম্প্রদায়কে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ও চিকিৎসায় সহায়তার প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য।
আরও পড়ুন: Budget 2022: আকাশপথেও বসেছে করোনার থাবা, আসন্ন বাজেট থেকে কী আশা করছে উড়ান শিল্প?