চাকুরীজীবীদের কোনও বাড়তি আয়ের সুযোগ নেই। মাসে মাসে বাঁধা মাইনের মধ্য়েই সংসার খরচ চালাতে হয়। আর এই মূল্যবৃদ্ধির বাজারে সংসার খরচ সামলানো অনেকের জীবনেরই প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থায় মাসের একটা বাজেট করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটাই আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার সবথেকে কার্যকর উপায়। কিন্তু মাসের বাজেট করা খুব সহজ কাজ নয়। তবে চিন্তা করবেন না, আপনার প্রতিটি অসুবিধার সমাধান করতে আমরা আছি। আসলে, যে কোনও ব্যক্তির পরিবারের মাসিক বাজেট তার আয়, খরচ এবং সঞ্চয়ের চাহিদার কথা মাথায় রেখে তৈরি করতে হয়। এই তিনটি বিষয়ের মধ্যে সমন্বয় থাকলে আর চিন্তার কিছু নেই।
বাড়ির মাসিক বাজেট তৈরি করার সুবিধা
বাড়ির জন্য প্রতি মাসের বাজেট তৈরি করার অনেক সুবিধা রয়েছে। প্রথমত, এর ফলে সময়মতো সমস্ত বিল পরিশোধ করা যায়। ফলে, এমার্জেন্সি ফান্ড তৈরি করতে সুবিধা হয়। অন্যদিকে, গাড়ি বা বাড়ি কেনার মতো বড় খরচের জন্য সঠিকভাবে পরিকল্পনা করা যায়।
মাসিক বাজেট তৈরি করতে মেনে চলুন এই ৭টি উপায় –
মাসিক বাজেট তৈরি করাটা আনেকের কাছেই বেশ সমস্যার। আপনিও যদি এই সমস্যায় ভোগেন, তাহলে নীচে বলা পদ্ধতিগুলি আপনার কাজে লাগবে।
১. মাসিক বাজেট তৈরি করতে, প্রথমে আপনার মোট আয়ের হিসাব করুন। আপনার বেতন, বিনিয়োগ থেকে পাওয়া রিটার্ন বা সুদ বাবদ হওয়া আয় বা ভাড়া থেকে হওয়া আয় ইত্যাদি।
২. এর পর আপনার খরচের একটি তালিকা তৈরি করুন। যেমন, বাড়ি ভাড়া, রান্নাঘরের খরচ, পেট্রল বা জ্বালানি খরচ, ইন্টারনেট, বিদ্যুৎ বিল, যেকোনও ধরনের বিনিয়োগ বা ইএমআই ইত্যাদি। মনে রাখবেন প্রতিটি ছোটখাট খরচের হিসাবও লেখা উচিত। কিছুই বাদ দিলে চলবে না।
৩. খরচের তালিকা তৈরি হয়ে যাওয়ার পর, আপনি এগুলিকে বিভিন্ন বিভাগে ভাগ করতে পারেন। বাড়ি ভাড়া, ইন্টারনেট বিল, ইএমআই ইত্যাদির মতো খরচগুলি প্রতি মাসে একই থাকে, তাই এগুলিকে আলাদা বিভাগে রাখুন। আর রান্নার বা মুদিখানার খরচ, বিদ্যুতের বিল, পেট্রোল বা জ্বালানীর খরচ ইত্যাদি, অর্থাৎ যে খরচগুলি বদলাতে থাকে সেগুলিকে আলাদা বিভাগে রাখুন।
৪. খরচগুলিকে এভাবে ভাগ করলে, কোন খরচগুলি প্রয়োজনীয় এবং কোনগুলি অপ্রয়োজনীয় তা শনাক্ত করা সহজ হয়। এর ফলে, দরকার পড়লে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো যায়। সিনেমা দেখতে যাওয়া, বাইরে খাওয়া ইত্যাদিকে অপ্রয়োজনীয় খরচ হিসেবে ধরা যেতে পারে।
৫. প্রতি মাসের খরচ পর্যালোচনা করতে হবে। এক-দুই মাসের মধ্যেই বুঝে যাবেন কোথায় কোথায় অযথা খরচ করছেন। প্রতিটি ধরনের ব্যয়ের জন্য একটি নির্দিষ্ট সীমা নির্ধারণ করতে পারেন। এইভাবে অতিরিক্ত খরচের সমস্যা এড়ানো যায়।
৬. অতিরিক্ত ব্যয় কোথায় হচ্ছে তা একবার জানার পর আপনার বাজেট পর্যালোচনা শুরু করুন। বাজেটে আয়, খরচ এবং সঞ্চয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য তৈরি করুন।
৭. তবে একবার বাজেট তৈরি করে থেমে গেলেই চলবে না। কয়েক মাস পরপর মাসিক বাজেট পর্যালোচনা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে, আপনি সেই সময়ে আপনার খরচ বড়েছে না কমেছে তা গণনা করতে পারবেন। আর সেই অনুযায়ী আপনার সঞ্চয় বাড়াতে বা কমাতে পারবেন।