Indian Rupee: ডলারের জায়গা নিতে চলেছে ভারতীয় মুদ্রা? রাশিয়ার পর টাকাকে বেছে নিচ্ছে আরও ৩৫টি দেশ

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

Jan 04, 2023 | 9:54 AM

Indian Rupee: ডলার ছেড়ে ভারতীয় মুদ্রায় বৈদেশিক বাণিজ্য শুরু করেছে মস্কো। রাশিয়া এই পদক্ষেপ করার পর, বিশ্বের প্রায় ৩৫টি দেশ ভারতীয় টাকাকেই বাণিজ্যের মাধ্যম করার কথা ভাবছে।

Indian Rupee: ডলারের জায়গা নিতে চলেছে ভারতীয় মুদ্রা? রাশিয়ার পর টাকাকে বেছে নিচ্ছে আরও ৩৫টি দেশ
প্রতীকী ছবি

Follow Us

নয়া দিল্লি: ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে একের পর এক নিষেধাজ্ঞার জালে বন্দি হয়েছে রাশিয়া। এই অবস্থায় ডলার ছেড়ে ভারতীয় মুদ্রায় বৈদেশিক বাণিজ্য শুরু করেছে মস্কো। প্রথম বিদেশী রাষ্ট্র হিসেবে এই পথে পা বাড়িয়েছে তারা। তবে রাশিয়া এই পদক্ষেপ করার পর, বিশ্বের প্রায় ৩৫টি দেশ ভারতীয় টাকাকেই বাণিজ্যের মাধ্যম করার কথা ভাবছে। রাশিয়ার পর, শ্রীলঙ্কা এবং মরিশাসও মার্কিন ডলারের পরিবর্তে ভারতীয় মুদ্রাকে বৈদেশিক বাণিজ্যের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তাদের মতোই ডলারের ঘাটতি রয়েছে বাংলাদেশ, নেপাল এবং মায়ানমারের মতো ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলিরও। তাদেরও বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারতীয় মুদ্রা ব্যবহারের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। ২০২২ সালের জুলাই মাসেই ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বা আরবিআই ভারতীয় মুদ্রায় বাণিজ্য নিষ্পত্তির ব্যবস্থা তৈরি করেছিল। তারপর থেকে টাকা নিয়ে একের পর এক দেশের আগ্রহ বাড়ছে।

সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাজিকিস্তান, কিউবা, লুক্সেমবার্গ এবং সুদানও এই মুদ্রা ব্যবস্থা ব্যবহার করার বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করছে। এই চারটি দেশ ভস্ট্রো অ্যাকাউন্ট নামে বিশেষ মুদ্রা অ্যাকাউন্ট খোলার বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে। সেই সুবিধা পাওয়ার জন্য ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলির পদক্ষেপের অপেক্ষা করছে তারা। ইতিমধ্যেই, মরিশাস এবং শ্রীলঙ্কাকে বিশেষ ভস্ট্রো অ্যাকাউন্ট খোলার অনুমোদন দিয়েছে আরবিআই।

এতে ভারতের কী লাভ?

অপরিশোধিত তেল-সহ বেশিরভাগ আমদানির ক্ষেত্রে ভারতকে লেনদেন করতে হয় মার্কিন ডলারে। তাই মার্কিন ডলার কিনতে ভারতীয় মুদ্রা বিক্রি করতে হয়। উল্লেখ্য, ভারতীয় মুদ্রা সম্পূর্ণরূপে রূপান্তরযোগ্য নয় বলে এর ক্রেতা পাওয়া প্রাশয়ই কঠিন হয়। বিভিন্ন দেশ ভারতীয় মুদ্রায় বাণিজ্য করা শুরু করলে, আরবিআই-কে ডলার কেনার জন্য ভারতীয় মুদ্রার ক্রেতা খুঁজতে হবে না।

এখনও পর্যন্ত বিশ্বের সর্ববৃহৎ রিজার্ভ কারেন্সি হল মার্কিন ডলার। তাই বিশ্বের বেশিরভাগ লেনদেনই ডলারে হয়। ধরা যাক ভারতের কোনও ক্রেতা, কোনও ইউরোপীয় দেশের বিক্রেতার সঙ্গে লেনদেন করছেন। এই ক্ষেত্রে অর্থপ্রদানের জন্য ভারতীয় ক্রেতাকে প্রথমে টাকাকে মার্কিন ডলারে রূপান্তর করতে হবে। বিক্রেতা, আবার ঐ ডলার পাওয়ার পর তা ইউরোতে রূপান্তরিত করবেন। সাধারণত দুই পক্ষই এই রূপান্তরের ব্যয় বহন করে এবং বৈদেশিক মুদ্রার হার ওঠানামার ঝুঁকি বহন করে। ভারত এমন দেশগুলিকে টাকায় লেনদেনের প্রক্রিয়ায় আনতে চাইছে, যাদের মার্কিন ডলারের ঘাটতি রয়েছে। গত কয়েক মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আমদানির উপরই ডলারের অভাবের প্রভাব পড়েছে। এর ফলে একটি বিকল্প অর্থ ব্যবস্থার প্রয়োজন তৈরি হয়েছে। এই জায়গাটাই নিতে চাইছে ভারতীয় মুদ্রা।

একটি ভস্ট্রো অ্যাকাউন্টের সাহায্যে, মার্কিন ডলার ব্যবহারের পরিবর্তে, ভারতীয় মুদ্রাতেই পণ্য ও পরিষেবার আমদানি করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। যখন কোনও ভারতীয় ক্রেতা, বিদেশী ব্যবসায়ীর সঙ্গে টাকায় লেনদেন করবেন, তখন সেই অর্থ এই ভস্ত্রো অ্যাকাউন্টে জমা হবে। ভারতীয় রপ্তানিকারকের পণ্য সরবরাহের জন্য অর্থ প্রদানের প্রয়োজন হলে, এই ভস্ত্রো অ্যাকাউন্টটি থেকে তা কেটে নেওয়া হবে, এবং অর্থ জমা পড়বে রপ্তানিকারকের অ্যাকাউন্টে।

কোনও মুদ্রা ব্যবস্থার ‘আন্তর্জাতিক’ হয়ে ওঠার জন্য সারা বিশ্বে সেই মুদ্রাকে বাণিজ্য বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করাটা প্রটোজনীয়। সেই জায়গায় এখনও পৌঁছতে পারেনি ভারতীয় মুদ্রা। তবে, আরবিআই-এর মতে, ভারতীয় মুদ্রায় বাণিজ্য নিষ্পত্তির আগ্রহ ক্রমে বাড়ছে। এটা ভারতের মার্কিন ডলার, ইউরো এবং ইয়েন-সহ অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রার উপর নির্ভরতা কমাবে।

Next Article