নয়া দিল্লি: সত বছর পূর্ণ হল প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনার (Pradhan Mantri Jan-Dhan Yojna)। ২০১৪ সালে ১৫ অগস্ট, স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানেই দেশের সমস্ত নাগরিকদের জন্য এই প্রকল্পের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। বর্তমানে প্রায় ৪৩ কোটি গ্রাহক জন ধন যোজনার সুবিধা পান। এ বার এই প্রকল্পের গ্রাহকদের জীবন বিমা ও দুর্ঘটনার বিমাও দেওয়া হবে, এ দিন এই ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক (Finance Ministry)।
শনিবার অর্থ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতিতে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনার গ্রাহকদের এ বার প্রধানমন্ত্রী জীবন জ্যোতি বিমা যোজনা ও প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা যোজনার অধীনেও আনা হবে। ইতিমধ্যেই ব্যাঙ্কগুলিকে এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় অর্থ পরিষেবার ওয়েবসাইট অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী জীবন জ্যোতি বিমা যোজনার অধীনে প্রতিদিন এক টাকারও কম অর্থের অর্থ জমা রাখলে ২ লক্ষ টাকার আর্থিক সহায়তা পাওয়া যায়। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা যোজনার অধীনে দুর্ঘটনায় মৃত্যু বা বিকলাঙ্গ হয়ে গেলে ২ লক্ষ টাকা এবং আংশিক পঙ্গুত্বের জন্য ১ লক্ষ টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয় কেন্দ্রের তরফে। এক্ষেত্রে বছরে মাত্র ১২ টাকা জমা করতে হয়।
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন (Nirmala Sitharaman) বলেন, “প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনার অধীনে বিগত সাত বছরে সাধারণ মানুষ দারুণ উপকৃত হয়েছেন। সমাজের দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম ব্যক্তির কাছেও আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সাধারণ মানুষদের যেমন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হয়েছে, তেমনই সমস্ত পরিষেবার সুযোগও সমাজের প্রতিটি কোণে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।”
অর্থমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রের তরফে জনধন যোজনার সঙ্গে জীবন বিমা যোজনাগুল্র সংযুক্তিকরণের পাশাপাশি জন ধন যোজনার গ্রাহকদের মধ্যে ডিজিটাল লেনদেনের সুবিধা পৌঁছে দেওয়ারও চেষ্টা করা হচ্ছে। মাইক্রো ক্রেডিট ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগের সুযোগ সুবিধাও তুলে ধরা হচ্ছে।
অর্থমন্ত্রকের তথ্য অনযায়ী, ২০১৫ সালে যেখানে জন ধন যোজনার গ্রাহক ছিলেন ১৭.৯ কোটি ভারতীয়, বর্তমানে তা ৪৩.০৪ কোটিতে বেড়ে দাঁড়িয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনে অ্যাকাউন্ট গ্রাহকদের মধ্যে ৫৫.৪৭ শতাংশ মহিলা রয়েছেন। আবার গ্রাহকদের ৬৬.৬৯ শতাংশই গ্রামীণ বা শহরাঞ্চলের বাসিন্দা।
অর্থমন্ত্রকের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ২০১৪ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে প্রতি দুটি ব্য়াঙ্ক অ্যাকাউন্টের মধ্যে একটি প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনার অধীনে খোলা হয়েছে। দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণার ১০ দিনের মধ্যে সমস্ত গ্রাহক আর্থিক ক্ষতিপূরণও পেয়ে গিয়েছিলেন। বর্তমানে করোনাকালেও সরাসরি ব্য়াঙ্ক ট্রান্সফারের ক্ষেত্রেও জন ধন যোজনার অ্য়াকাউন্ট বিপুল পরিমাণে ব্যবহৃত হয়েছে।
অর্থপ্রতিমন্ত্রী ভগৎ করাদ জানান, প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা কেবল ভারতেই নয়, গোটা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম সফল আর্থিক যোজনা, যা প্রতিটি ঘরে পৌঁছে গিয়েছে। তিনি বলেন, “আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করা সরকারের অন্য়তম লক্ষ্য়। এতে গরিবরা যেমন নিজেদের পুঁজি সুরক্ষিত জায়গায় জমিয়ে রাখতে পারে, তেমনই পরিবারে বিপদের সময় বা কোনও প্রয়োজনে লেনদারদের কাছে না গিয়ে সরাসরি নিজস্বন অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে ব্যবহার করা যায়।” আরও পড়ুন: বাড়িতে সোনা রাখতে ভয়? এক ক্লিকেই কিনে ফেলুন ডিজিটাল সোনা, মিলবে হরেক সুবিধাও