কলকাতা: নির্বাচনী জ্বরে কাবু গোটা দেশ। শাসক থেকে বিরোধী, সামনে আসছে একের পর এক দলের প্রার্থী তালিকা। বাংলা থেকে বিহার, দিল্লি থেকে তামিলনাড়ু, ভোটের হাওয়ায় তপ্ত কাশ্মীর উত্তর ভারত থেকে দক্ষিণ ভারতের সব রাজ্যেই। এদিকে ভোটমুখী দেশে বড় পর্দায় মুক্তি পেতে চলেছে একাধিক রাজনৈতিক ছবি। ইতিমধ্যেই মুক্তি পেয়েছে হৃত্বিক-দীপিকা অভিনীত ‘ফাইটার’। পুলওয়ামা হামলা ও পরবর্তী বালাকোট বিমান হামলার প্রেক্ষাপটের সঙ্গে যোগ রয়েছে এই ছবির। প্রতিবারই নির্বাচনের সময় একঝাঁক রাজনৈতিক ছবি মুক্তি পেতে দেখা যায়। এবারেও লোকসভা নির্বাচনের বছরে তালিকায় রয়েছে কঙ্গনা রানাওয়াতের ‘এমার্জেন্সি’ ছাড়াও, ‘স্কাই ফোর্স’, ‘দ্য আনটোল্ড স্টোরি অফ সি. শঙ্করন নায়ার’ এবং সানি দেওলের ‘লাহোর ১৯৪৭’-এর মতো ছবিগুলি। এই ছবিগুলিও শীঘ্রই মুক্তি পেতে চলেছে। কিন্তু, সাম্প্রতিক বক্স অফিস কালেকশনের ইতিহাস কিন্তু খুব একটা আশার কথা বলছে না। সোজা কথায় জনমানসে ঝড় তুলে মুক্তি পেলেও সাম্প্রতিককালে রাজনৈতিক ছবিগুলি খুব একটা ভাল ব্যবসা করতে পারেনি। তাতেই চিন্তায় পড়েছেন প্রযোজকেরা।
তবে প্রেক্ষাগৃহে মুখ থুবড়ে পড়লেও ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলিতে মুক্তি পাওয়া ‘তাণ্ডব’, ‘মহারানি’ এর মতো সিরিজগুলিকে নিয়ে ভালই চর্চা দেখা গিয়েছে। অন্যদিকে সরাসরি চেনা কোনও রাজনৈতিক দল, ঘটনা, টানাপোড়েনের উল্লেখ না থাকলেও আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক গল্পের আধারে তৈরি একাধিক সিরিজও কিন্তু ভালই চলেছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলিতে। এই ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্যা ‘মিরজাপুর’, ‘পঞ্চায়েত’ এর মতো সিরিজগুলি। একই ছবি বড় পর্দার ক্ষেত্রে। ভাল উপার্জন করেছে শাহরুখ খানের জওয়ান বা পাঠানের মতো ছবি। অনেকেই বলেছেন প্রেক্ষাগৃহের মালিক থেকে প্রযোজকদের আরও ভাল ব্যবসার জন্য আরও বেশি করে এই ধরনের ছবি দরকার।
‘উরি’ এবং ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ বাদ দিলে, রাজনৈতিক বিষয়ের উপর নির্মিত বেশিরভাগ ছবিকে প্রেক্ষাগৃহে মুখ থুবড়ে পড়তে দেখা গিয়েছে। ‘তাসখন্দ ফাইলস’, ‘কেরলা স্টোরি’ নিয়ে বিস্তর চর্চা হলেও বক্স অফিসে এমন কিছু ভাল ব্যবসা করতে পারেনি এই ছবিগুলি। এর বাইরে ‘ম্যান অটল হু’,
‘অপারেশন ভ্যালেন্টাইন’, ‘আর্টিকেল ৩৭০’ এবং ‘দ্য ভ্যাকসিন ওয়ার’-এর মতো ছবিগুলিও মোটা টাকা ঘরে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে। শুধু তাই নয়, ২০১৯ সালের নির্বাচনের সময় মুক্তি পাওয়া বিবেক ওবেরয় অভিনীত ‘পিএম নরেন্দ্র মোদি’ ছবিটিও খুব একটা ভাল ব্যবসা করেনি। বলছে পরিসংখ্যান। সেখানে পুলওয়ামা হামলা এবং পরবর্তী বালাকোট বিমান হামলার সঙ্গে সম্পর্কিত ছবি ফাইটার তৈরিতে খরচ হয়েছে ২৫০ কোটি। এখনও পর্যন্ত ঘরে এসেছে ২০০ কোটি।
অন্যদিকে, শাহরুখের পাঠান, জওয়ান, রণবীর সিংয়ের ‘রকি অউর রানি কি প্রেম কাহিনি’, রণবীর কাপুরের ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ এবং ‘অ্যানিম্যাল’-এর মতো মশলা ছবিগুলি আয়ের নতুন রেকর্ড তৈরি করেছে। আলোড়ন পড়েছে বক্স অফিসে। তবে কি রাজনীতি বাদে শুধুই নিখাদ বিনোদন চাইছে সিনেপ্রেমীরা? প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছে বক্স অফিসের অন্দরে।