মুম্বই : ভারতকে ৫ লাখ কোটি ডলারের অর্থনীতির দেশ হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছে মোদী সরকার। আর এই স্বপ্ন পূরণ করতে হলে আগামী পাঁচ বছরে ভারতে অন্ততপক্ষে মোট ৭.৮ লাখ কোটি ডলারের প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ দরকার। সম্প্রতি ডেলয়েটের এক রিপোর্টে এমনটাই উল্লেখ রয়েছে।
এই ৭.৮ লাখ কোটির এফডিআই লক্ষ্যমাত্রা স্পর্শ করতে হলে ভারতে এখনও কমপক্ষে ৪০ হাজার কোটি ডলার নতুন বিদেশি বিনিয়োগ টানতে হবে। সম্প্রতি যে রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ২০২১ আর্থিক বছরে ৮ হাজার কোটি ডলার বিদেশি বিনিয়োগ এলেও তার মাত্র ৩ শতাংশই গ্রস ক্যাপিটাল হিসেবে বেরিয়ে এসেছে।
ক্য়াপিটাল বলতে বোঝায় কোনও একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মোট যে পরিমাণ মূলধন আসে। রিপোর্টে বলা হচ্ছে, ভারতে বিগত পাঁচ বছরে বিশাল অঙ্কের বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে। কিন্তু এই বিশাল অঙ্কের বিদেশি বিনিয়োগ সেই অনুপাতে জিডিপি এবং গ্রস ক্যাপিটালে পরিবর্তিত হয়নি। শেষ পাঁচ বছরে মোট বিদেশি বিনিয়োগের মাত্র ৪ শতাংশই জিসিএফ(গ্রস ক্যাপিটাল ফর্মেশন)-এ রূপান্তরিত হয়েছে।
এদিকে কেন্দ্র ২০২৬ আর্থিক বছরের মধ্যে ৫ লাখ কোটি ডলারের অর্থনীতির শিখরে দেশকে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। সেই জন্য বিনিয়োগের প্রভূত পথও খুলে দিয়েছে কেন্দ্র। চালু করা হয়েছে ন্যাশনাল মনেটাইজ়েশন পাইপলাইন। এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থাকে বেশ কিছু কম লাভজনক সংস্থার কিছু অংশের শেয়ার বেসরকারি সংস্থাগুলিকে দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে কেন্দ্রের আওতাধীন ওই সংস্থার মালিকানা কেন্দ্রের হাতেই থাকছে এবং একইসঙ্গে ধুকতে থাকা সংস্থাটির আর্থিক মুনাফাও হচ্ছে।
তবে আশার কথা এই যে করোনা পরিস্থিতির কারণে ৫ লাখ কোটি ডলারের অর্থনীতি স্পর্শ করার লক্ষ্যমাত্রা ২০২৬ সালের বদলে এক বছর পিছিয়ে ২০২৭ করা হয়েছে।
এই মুহূর্তে কেন্দ্রের লক্ষ্য একটাই। যত বেশি সম্ভব ক্যাপিটাল তৈরি করা। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইলেকট্রনিক্স, টেক্সটাইল, ফার্মাসিউটিক্যাল, কেমিক্যাল, ফুড প্রসেসিং, ক্যাপিটাল গুডস এবং অটোমোটিভ সেক্টরে বিনিয়োগে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। এই সাতটি ক্ষেত্রকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে ভারত আগামী পাঁচ বছরে অতিরিক্ত ১ লাখ কোটি কামানোর লক্ষ্যমাত্রা নিতে পারে বলে মত অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের।
তবে এর জন্য ডেলয়েটে বেশ কিছু মাপকাঠির কথাও বলা রয়েছে। সেক্ষেত্রে ইলেক্ট্রনিক সেক্টরে কর্পোরেট করের ক্ষেত্রে যে কম মাত্রা ধরে রাখা হয়েছে, তা আরও কিছুদিন বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে জোর দিতে হবে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তিতে। বিশেষ করে ফার্মা এবং টেক্সটাইল সেক্টরে বাইরের দেশের বিনিয়োগকারীরা কীভাবে সুবিধা পান, তার দিকে নজর দিতে হবে। তাহলেই তাঁরা ভারতীয় বাজারে বিনিয়োগে আরও বেশি করে আগ্রহী হবেন।
আরও পড়ুন : National Security Guard:কীভাবে নিয়োগ করা হয় ব্ল্যাক ক্যাট কমান্ডোদের? কত বেতন জানেন
অলঙ্করণ-অভীক দেবনাথ