নয়া দিল্লি: দেশে পরিযায়ী শ্রমিকের (Migrant labours) সংখ্যা নেহাত কম নয়। করোনা মহামারীর সময়ই তার একটা স্পষ্ট ছবি পাওয়া গিয়েছে। বিশেষ অনুষ্ঠানের সময় ছাড়াও প্রায় সারা বছরই কম-বেশি পরিযায়ী শ্রমিকেরা দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাতায়াত করেন। কিন্তু, সাধারণ ট্রেনে টিকিটের চাহিদা অতিরিক্ত থাকায় তাদের দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকতে হয়। তাই এবার পরিযায়ী শ্রমিক-সহ সমগ্র শ্রমিক শ্রেণির চাহিদা মেটাতে নন-এসি, সাধারণ ক্যাটাগরির বিশেষ ট্রেন চালু করার পরিকল্পনা করছে রেলওয়ে বোর্ড (Railway board)। যে সমস্ত রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা বেশি, সেই সমস্ত রাজ্যগুলিকে চিহ্নিত করে সেখানেই এই বিশেষ ট্রেন চালানো হবে। এক বিশেষ সমীক্ষার পরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে রেলওয়ে বোর্ডের তরফে জানানো হয়েছে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী বছরের গোড়ায় অর্থাৎ ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকেই পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বিশেষ ট্রেন চালু হবে। নতুন ট্রেনগুলিতে নন-এসি এলএইচবি কোচ থাকবে এবং শুধুমাত্র স্লিপার এবং সাধারণ বিভাগের পরিষেবা থাকবে। রেল কর্তৃপক্ষ এখনও এই ট্রেনগুলির কোনও নাম ঠিক করেনি। আগে এই ধরনের বিশেষ ট্রেন শুধুমাত্র উৎসব বা পিক সিজনে চালু করা হত। কিন্তু, যাত্রীবাহী ট্রেনে অতিরিক্ত ভিড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে ওঠায় এই ধরনের ব্যবস্থা স্থায়ী করার প্রস্তাব এসেছে। এর আগে করোনভাইরাস সঙ্কটের সময় রেলওয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের তাদের নিজেদের স্থানে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য অভিবাসী বিশেষ ট্রেন চালিয়েছিল।
কোন-কোন রাজ্য থেকে বিশেষ ট্রেন চলবে?
রেলওয়ে বোর্ডের মতে, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ, পঞ্জাব, অসম, গুজরাট, দিল্লি, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যগুলির জন্য নতুন বিশেষ ট্রেনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। রেল আধিকারিকদের মতে, এই রাজ্যগুলির বেশিরভাগ দক্ষ-অদক্ষ শ্রমিক, কারিগর, শ্রমিক এবং অন্যান্যরা কাজের জন্য দেশের মেট্রো এবং বড় শহরে যান। তাঁদের জন্য এই বিশেষ ট্রেন চালানো হবে, যেখানে শুধুমাত্র স্লিপার-জেনারেল ক্লাস কোচ ব্যবহার করা হবে। রেলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, অভিবাসী বিশেষ ট্রেনগুলিতে সর্বনিম্ন ২২ থেকে সর্বোচ্চ ২৬টি কোচ থাকবে। কেবল সিজন নয়, সারা বছরই স্থায়ীভাবে এই বিশেষ ট্রেন চালানো হবে।
সময়-কোচ পরিকল্পনা
অভিবাসী বিশেষ ট্রেনগুলি নিয়মিত টাইম টেবিলে অন্তর্ভুক্ত করা হবে, যাতে যাত্রীরা আগে থেকেই রিজার্ভেশন করতে পারবেন। রেল আধিকারিকরা জানান, আগামী দিনে ভারতীয় রেলের ট্রেনে শুধুমাত্র দুই ধরনের কোচ- এলএইচবি কোচ এবং বন্দে ভারত কোচ থাকবে। বর্তমানে ২৮ ধরনের কোচ সার্ভিসে রয়েছে। রেলের একজন কর্মকর্তা বলেন, কোচের প্রকার কমলে সংস্কারের খরচ কমবে এবং যাতায়াতও সস্তা হবে।