নয়া দিল্লি: উৎসবের মরশুমে ব্যাপক ছাড় দিচ্ছে অনলাইন শপিং সাইটগুলি। কোথাও জলের দরে বিক্রি হচ্ছে জামা-কাপড়, কোথাও আবার ৭০ হাজারের আইফোন বিক্রি হচ্ছে ৪০ হাজার টাকায়। উৎসবের মরশুমে ৫০ থেকে ৮০ বা ৯০ শতাংশ অবধি ছাড় মিলছে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। কিন্তু প্রশ্নটা উঠছে, কীভাবে এত ছা়ড় দিচ্ছে অনলাইন সংস্থাগুলি? তারা কি নিজেদের আর্থিক ক্ষতি করে পণ্য বিক্রি করছে?
উত্তরটা হল, এই বিপুল ছাড় দিলেও সংস্থাগুলির কোনও আর্থিক ক্ষতি হয় না। বরং ছাড়ের লোভে বিপুল সংখ্যক মানুষ হরেক জিনিস কেনায়, অনলাইন সংস্থাগুলির বিপুল লাভ হয়। বিপুল ছাড় দেওয়ার পিছনে আরও একটি রহস্য হল, এমএসএমই ও স্থানীয় সংস্থা বা ব্য়বসাগুলির প্রচার। ছোট-খাটো ব্যবসা, যেখানে জিনিসপত্রের দাম তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম থাকে, তাদের থেকেই পণ্যগুলি কিনে বিক্রি করে ফ্লিপকার্ট, অ্যামাজনের মতো অনলাইন সংস্থা।
সম্প্রতিই অ্য়ামাজন সংস্থার তরফে জানানো হয়েছিল, লক্ষাধিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসার কয়েক কোটি পণ্য নিয়ে গ্রাহকেরা সন্তুষ্ট। অ্যামাজন ডট ইনে রেজিস্ট্রার করা লক্ষাধিক সংস্থার পণ্য বিক্রি শুরু হতেই ব্যবসা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। প্রতি মিনিটে কমপক্ষে আটটি করে পণ্য বিক্রি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ফ্লিপকার্ট ও অ্যামাজন, উভয় সংস্থাই মহিলা উদ্যোগপতিদের সঙ্গে ব্যবসায় বিশেষ জোর দেয়। কম দামে ছোট ব্যবসাগুলির কাছ থেকে পণ্য কেনে বলেই, ন্যূনতম লাভের অঙ্ক রেখেই কম দামে ভাল মানের পণ্য বিক্রি করতে পারে ফ্লিপকার্ট-অ্যামাজন। ফ্লিপকার্টের ফ্যাশন, লাইফস্টাইল সংক্রান্ত যাবতীয় পণ্য, তা সে সুটকেট হোক, বা রানিং শু, জিন্স, জামা মূলত শহরতলির গ্রাহকরাই কেনেন। বিগত এক বছরে ফ্লিপকার্টের ‘টপ সেলিং প্রোডাক্ট’গুলির বিক্রি প্রায় ৪৫ শতাংশ বেড়েছে। একইভাবে অ্যামাজনের বিক্রিও কয়েকগুণ বেড়েছে।
অনলাইনের তুলনায় অফলাইনে অনেক সময়ই দামের বিস্তর ফারাক দেখা যায়। আবার অনেক সময় অ্য়ামাজন-ফ্লিপকার্টে বিক্রি হওয়া পণ্যের দাম সেই সংস্থার ওয়েবসাইটের তুলনায় কম থাকে। সেই কারণেও অনেকেই সরাসরি সংস্থার ওয়েবসাইটের বদলে ফ্লিপকার্ট, অ্যামাজন থেকেই সেই পণ্য কিনতে পছন্দ করেন। তবে এত কম লভ্যাংশ রাখলেও কীভাবে দিনের শেষে লাভ করে সংস্থাগুলি? এই প্রশ্নও ওঠে। এর উত্তর হল , বিপুল সংখ্যক অর্ডার। একটি পণ্যের উপরে ৫০-৬০ শতাংশ বা তার বেশি ছাড় দিলে প্রচুর মানুষ সেই পণ্য কেনেন। এই বিপুল সংখ্যক অর্ডারের কারণেই লাভের হার কম রেখেও, আর্থিক লাভ করতে পারে অনলাইন সংস্থাগুলি।
নিজের পণ্যের বিজ্ঞাপন না দিয়েও বা খুব কম বিজ্ঞাপন দিয়েই বিপুল লাভ করতে পারে বিক্রয়কারী সংস্থাগুলি। সেই কারণে তারাও ই-কমার্স সাইটগুলির সঙ্গে ব্যবসা করতে আগ্রহ দেখায় ছোট ছোট ব্যবসাগুলি। এছাড়া কোনও একটি সংস্থার ওয়েবসাইট থেকে কোনও পণ্য খুঁজে বের করার তুলনায়, অনেক কম পরিশ্রমে ই-কমার্স সাইটগুলিতে সেই পণ্য খুঁজে পাওয়া যায়।