EMI: বৃষ্টিতে ভেস্তে গেল সরকারের পরিকল্পনা, আগামী এক বছরেও কমবে না সুদের হার
EMI: অর্থনীতিবিদদের মতে সরকার এবং আরবিআই সুদের হার কমানোর যে পরিকল্পনা করেছিল, ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির কারণে তা চলতি আর্থিক বছরের শেষ বা পরের আর্থিক বছর পর্যন্ত স্থগিত করতে হতে পারে। সিঙ্গাপুর ডিবিএস-এর অর্থনীতিবিদ রাধিকা রাও জানিয়েছেন, তাঁদের অনুমান অনুযায়ী চলতি আর্থিক বছরের বাকি সময়ে আর সুদের হারে কোনও রদবদল করবে না আরবিআই।
নয়া দিল্লি: সরকার এবং আরবিআই-এর পরিকল্পনা ভেস্তে দিল জুন এবং জুলাই মাস। মে মাসে মূল্যবৃদ্ধি ৪.২৫ শতাংশে নেমে এসেছিল। সরকার এবং আরবিআই আশা করেছিল, জুন এবং জুলাই মাসে খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধি ৪ শতাংশ বা তার নীচে থাকবে। ফলে, অগস্ট থেকে অক্টোবরের মধ্যে সুদের হার কমিয়ে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দেওয়া যাবে। কিন্তু, সরকার এবং আরবিআইয়ের এই পরিকল্পনায় জল ঢেলে দিয়েছে বৃষ্টি। এই অনিয়মিত বৃষ্টির পর, অর্থনীতিবিদ এবং আর্থিক সংস্থা এবং ব্যাঙ্কগুলি ভারতের অর্থনীতি যে পূর্বাভাস দিচ্ছে, তাতে সাধারণ মানুষের উদ্বেগ বাড়বে বই কমবে না। সকলেই এক সুরে জানিয়েছেন, অন্তত আগামী এক বছরে সুদের হার কমার কোনও সম্ভাবনা নেই। সাধারণ মানুষের ইএমআই কমার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। উপরন্ত, মূল্যবৃদ্ধির হার যদি আরও বাড়ে, অক্টোবর বা ডিসেম্বর নাগাদ সরকারের পক্ষ থেকে সুদের হার আরও একবার বাড়ানো ছাড়া উপায় থাকবে না।
অর্থনীতিবিদদের মতে সরকার এবং আরবিআই সুদের হার কমানোর যে পরিকল্পনা করেছিল, ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির কারণে তা চলতি আর্থিক বছরের শেষ বা পরের আর্থিক বছর পর্যন্ত স্থগিত করতে হতে পারে। সিঙ্গাপুর ডিবিএস-এর অর্থনীতিবিদ রাধিকা রাও জানিয়েছেন, তাঁদের অনুমান অনুযায়ী চলতি আর্থিক বছরের বাকি সময়ে আর সুদের হারে কোনও রদবদল করবে না আরবিআই। ২০২৪-এর মার্চে বা পরবর্তী আর্থিক বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে সুদের হার হ্রাস কমতে দেখা যেতে পারে। বস্তুত, বিশ্বজুড়ে অস্থিতিশীল মূল্যবৃদ্ধির কারণে অধিকাংশ দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলিই সুদের হার বাড়াতে বাধ্য হয়েছে। ভারতে বর্তমানে সবজি, ডাল, চালের দামে যে মাত্রাছাড়া বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে, তাতে ভারতের মূল্যবৃদ্ধির ছবিটা আরও খারাপ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী ৮-১০ অগস্ট মুদ্রানীতির সভা হবে।
জুন মাসে ভারতের মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ৪.৮ শতাংশ। ইতিমধ্য়েই, কৃষি উৎপাদনের ক্ষেত্রে অনিয়মিত মৌসুমি বৃষ্টির ক্ষতিকর প্রভাব দেখা যাচ্ছে। এই কারণেই আগামী কয়েক মাসে মূল্যবৃদ্ধি আরও বাড়তে পারে। জুলাইয়ের মূল্যবৃদ্ধির পরিসংখ্যান এখনও আসেনি। তবে, ইতিমধ্যেই টমেটোর দাম আকাশচুম্বী। খুচরো বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকার আশপাশে। গত বছরের তুলনায় ডাল ও অন্যান্য শস্যের ফলন অনেক কম হয়েছে। এই অবস্থায় মনে করা হচ্ছে, এই মাসে মূল্যবৃদ্ধি পৌঁছতে পারে ৬.৫ শতাংশ। এইচএসবিসির অর্থনীতিবিদ প্রাঞ্জল ভান্ডারি জানিয়েছেন, ধানের ফলন নিয়ে চিন্তিত তাঁরা। উত্তর-পশ্চিম ভারতে বন্যা এবং দক্ষিণ ও পূর্বের রাজ্যগুলিতে কম বৃষ্টি হওয়ার কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কেন্দ্র ইতিমধ্যেই চাল রফতানিতে আংশিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। দাম নিয়ন্ত্রণে বাইরে থেকে ডাল আমদানি করা হচ্ছে। এই অবস্থায় বাজারের প্রবণতায় কোনও পরিবর্তনের আশা করছেন না অর্থনীতিবিদরা।