নয়া দিল্লি: একসময় দেশের অন্যতম বড় ও প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান হিসেবেই চিহ্নিত হত ‘সাহারা গ্রুপ’। মঙ্গলবার রাতে সেই সংস্থার কর্ণধার সুব্রত রায়ের মৃত্যু হয়েছে মুম্বইয়ের কোকিলাবেন হাসপাতালে। সাম্প্রতিককালে তাঁর অসুস্থতার খবর শোনা গেলেও শেষের দিকে কার্যত অন্তরালেই ছিলেন সুব্রত রায়। একসময় দেশের তাবড় নেতা-সেলিব্রিটিদের সঙ্গে ওঠাবসা ছিল তাঁর। সফল ব্যবসায়ী হিসেবে সুব্রত রায়ের নাম ওপরের দিকেই থাকত। কিন্তু একটা সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে সামনে আসতে থাকে একের পর এক অভিযোগ, জেলেও যেতে হয় তাঁকে।
সংবাদসংস্থার রিপোর্ট বলে একটি চিঠিই সাহারা গ্রুপকে বড়সড় ধাক্কা দিয়েছিল। ওই চিঠিতেই সাহারা-র বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। ২০১০ সালের ৪ জানুয়ারি ন্যাশনাল হাউজিং ব্যাঙ্কে রোশন লালের নামে একটি চিঠি আসে।
ওই চিঠিতে রোশন লাল জানিয়েছিলেন তিনি ইন্দোরের বাসিন্দা এবং পেশায় একজন সিএ। সাহারা ইন্ডিয়া রিয়েল এস্টেট কর্পোরেশন এবং সাহারা হাউজিং ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন-এর বন্ড নিয়ে তদন্ত করার জন্য এনএইচবিকে অনুরোধ করেছিলেন তিনি। ওই বন্ড নিয়ম মেনে ইস্যু করা হয়নি বলে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। ব্যাঙ্ক এই চিঠিটি সেবি-র কাছে পাঠিয়ে দেয়।
এদিকে, আমেদাবাদের ‘অ্যাডভোকেসি গ্রুপ ফর ইনভেস্টমেন্ট প্রোটেকশন’-এর কাছ থেকে একটি নোট পেয়েছিল সেবি। ২০১০ সালের ২৪ নভেম্বর সেবি নির্দেশ দিয়েছিল যাতে সাহারা গ্রুপ জনসাধারণের কাছ থেকে আর টাকা না তোলে। এরপর বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছায়। সেখানে শুনানির পর, আদালত সাহারা গ্রুপকে নির্দেশ দিয়েছিল ১৫ শতাংশ বার্ষিক সুদে বিনিয়োগকারীদের ২৪,০২৯ কোটি টাকা ফেরত দিতে হবে।
এরপরই সেবি আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে সাহারা-র বিরুদ্ধে। নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও যখন সাহারা গ্রুপের সংস্থাগুলি বিনিয়োগকারীদের টাকা দিতে ব্যর্থ হয়, তখনই জেলে যেতে হয়েছিল সুব্রত রায়কে। ২০১৪ সালের ৪ মার্চ তাঁকে তিহার জেলে পাঠানো হয়েছিল। এরপরই তাঁর ব্যবসা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০১৬ সালের ৬ মে মায়ের মৃত্যুর পর, সুব্রত রায়কে শেষকৃত্যে যোগ দেওয়ার জন্য প্যারোল দেওয়া হয়েছিল।