ইসলামাবাদ: বাড়ন্ত মূল্যবৃদ্ধির সামনে নুইয়ে পড়া অর্থনীতি। পাকিস্তানের অবস্থা আপাতত এরকমই। একটি পরিসংখ্য়ান অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে পাকিস্তানের জিডিপির গড় বৃদ্ধি ছিল ০.৯২ শতাংশ। সেই একই সময়ে ভারতের জিডিপির গড় বৃদ্ধি ছিল ৭.৮ শতাংশ।
পড়শি দেশের অর্থনৈতিক হাল যে খুব একটা ভাল নয়, এই নিয়ে মুখ খুলতে দেখা গিয়েছে সেদেশের নেতা-মন্ত্রীদেরও। বিশ্ব বাজারে নিজেদের বেহাল দশা নিয়ে কোনও রাখঢাক রাখেনি পাকিস্তানও। কিন্তু এই নুইয়ে পড়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার উপায়টাই বা কী? তা নিয়ে এবার মুখ খুলতে দেখা গেল, পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রকের প্রধান উপদেষ্টা বিলাল বিন সাদিককে।
কী বললেন তিনি?
সম্প্রতি, একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার পর্বে বিলাল জানিয়েছেন, দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে মন দিয়েছে সরকার। খুব শীঘ্রই ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিংকে অনুমোদন দিয়ে বিদেশি বিনিয়োগ টানতে জোর বাড়াবে পাকিস্তান। পাশাপাশি, ক্রিপ্টোর বিনিয়োগকে নজরে রাখতে একটি ব্লকচেইন প্রযুক্তি সম্পন্ন নিয়ন্ত্রক কাঠামোও তৈরি করা হবে।
বছর কয়েক ধরে ডিজিটাল বিনিয়োগের অন্যতম মাধ্যম হিসাবে উঠে এসেছে ক্রিপ্টোকারেন্সি। বিশ্বজুড়ে বাড়ন্ত গ্রহণযোগ্যতাকে দেখে এই নতুন বিনিয়োগ মাধ্যমকে বৈধতা প্রদানে এক মুহূর্তও ভাবেনি ভারত সরকারও। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের বাজেট পেশের সময়ই ক্রিপ্টো ট্রেডিংকে দেশে বৈধতা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
কিন্তু গোটা বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলি এই নতুন পথে হাঁটার চেষ্টা করলেও, বরাবরই এই বিনিয়োগ মাধ্যম থেকে মুখ ফিরিয়ে রেখেছিল পাকিস্তান। সেদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের আশঙ্কা, ক্রিপ্টোকারেন্সি দেশে আর্থিক জালিয়াতি ও তছরুপের মতো ঘটনাকে উস্কানি দিতে পারে। তবে এবার সেই ‘ট্রেন্ডের’ হাত ধরেই নিজেদের ‘ঘুমিয়ে পড়া’ অর্থনীতিকে জাগাতে চাইছে পাকিস্তান।
এদিন উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘ইতিমধ্যেই দেড় কোটি দেশবাসী নানা উপায়ে এই ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ শুরু করেছেন। এমনকি, আমেরিকা ও আরব আমিরশাহির মতো দেশগুলিও ক্রিপ্টো-বান্ধব নীতি তৈরি করেছে। সুতরাং বলা যেতে পারে, এটাই সময় পাকিস্তানের এই ময়দানে নামার।’ তাঁর আরও দাবি, ‘এই নতুন বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশে আগের তুলনায় বিদেশি বিনিয়োগেরও পরিমাণ বাড়বে। পাশাপাশি, ক্রিপ্টো বিনিয়োগ অনুমোদন দিলে, সরকারও বাড়তি কর আদায় করতে পারবে।’
ইতিমধ্যে, পাকিস্তানে তৈরি হয়েছে ক্রিপ্টো নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান। নাম পাকিস্তান ক্রিপ্টো কাউন্সিল। এই সরকারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পড়েছে সে দেশের অর্থমন্ত্রী মহম্মদ আওরঙ্গজেবের কাঁধে। অর্থমন্ত্রকের প্রধান উপদেষ্টা বিলাল বিন সাকিব দায়িত্ব নিয়েছেন এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা হিসাবে।