চাকরি পাওয়ার পরই মানুষ কী কী করে? এমন কোনও প্রশ্ন করা হলে অনেকেই বলবেন তাঁরা হয়তো প্রথমেই একটা সুন্দর বাড়ি বা ফ্ল্যাট কিনেছেন। কেউ হয়তো বাবা-মায়ের কোনও স্বপ্ন পূরণ করেছেন। আবার কেউ নিজের কোনও ফোন, গাড়ি বা ক্যামেরার শখ পূরণ করেছেন। কিন্তু চাকরি পেয়েই এই কাজ করা কি আদৌ সঠিক? বিশেষজ্ঞ থেকে মেটা এআই, বলছে চাকরি পাওয়ার পরই সবার আগে যেটা করতে হবে সেটা হল ফাইন্যান্সিয়াল প্ল্যানিং। আর সেই ফাইন্যান্সিয়াল প্ল্যানিং করতে আপনাকে সাহায্য করবে TV9 বাংলা।
টার্ম ইন্সিওরেন্স বা জীবন বিমা
চাকরি পাওয়ার পরই সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেমেয়েরা অনেক সময়ই বেহিসেবি খরচ করে ফেলে। কিন্তু চাকরি পেয়ে কিছু কেনার আগেই সবচেয়ে জরুরি যেটা সেটা হল টার্ম ইন্সিওরেন্স কেনা। কোনও মানুষের বাৎসরিক যা উপার্জন তার ১৫ থেকে ২০ গুণ অঙ্কের টার্ম ইন্সিওরেন্স কেনা যুক্তিযুক্ত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কারও বাৎসরিক আয় যদি ৪ লক্ষ টাকা হয় তবে তাঁর ৬০ থেকে ৮০ লক্ষ টাকার টার্ম ইন্সিওরেন্স নেওয়া অবশ্যই দরকার।
মেডিক্লেম বা স্বাস্থ্য বিমা
বর্তমানে দেশে চিকিৎসা খরচ যে পরিমাণে বাড়ছে তাতে আমজনতার কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়তে বাধ্য। তাই উপার্জন শুরু করে সবার আগে টার্ম ইন্সিওরেন্স নেওয়ার পরেই নিজের ও নিজের পরিবারের জন্য মেডিক্লেম বা স্বাস্থ্য বিমা নেওয়াটাও জরুরি। কিন্তু কত টাকার স্বাস্থ্য বিমা নেওয়া যেতে পারে? মেটা এআই বলছে বাবা বা মা কোনও ১ জনের জন্য হলে ৭-১০ লক্ষ টাকা ও দু’জনের একসঙ্গে হলে ৮-১৫ লক্ষের মেডিক্লেম নেওয়া উচিৎ। এমন বিমা নিতে হবে যাতে এই টাকার অঙ্ক যেন ভবিষ্যতে বাড়ানো যায়। আর নিজের জন্য অন্তত ৫ লক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ১ কোটির মেডিক্লেম নেওয়া যেতে পারে।
আপৎকালীন তহবিল
নিজের ও পরিবারের জন্য স্বাস্থ্য বিমা নেওয়ার পর তৃতীয় কাজ হবে একটি আপৎকালীন তহবিল তৈরি করা। যেখানে আপনার ৬ মাসের খরচ যা, সেই পরিমাণ অর্থ রাখতে হবে। এই আপৎকালীন তহবিলের ১০ শতাংশ অর্থ বাড়িতে রাখা যেতে পারে ক্যাশ হিসাবে। ২০ শতাংশ অর্থ রাখা যেতে পারে সেভিংস অ্যাকাউন্টে, যেখান থেকে চাইলেই সেই টাকা তোলা যেতে পারে। সঙ্গে সেই অ্যাকাউন্টে অটো স্যুইপ অন করে রাখা যেতে পারে। আর বাকি ৭০ শতাংশ টাকা এমন কোথায় ফিক্সড ডিপোজিট করা উচিৎ যেখানে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে এফডি ভাঙলে কোনও জরিমানা দিতে না হয়।
বিনিয়োগ
এরপর বিনিয়োগ শুরু করতে পারেন ওই ব্যক্তি। একদম নভিস হিসাবে প্রথমে সোনায় কিছু অর্থ বিনিয়োগ করতে পারেন। সেক্ষেত্রে অনলাইনে বা দোকান থেকে সোনা না কিনে সোভেরেইন গোল্ড বন্ড কেনা যেতে পারে। এতে সোনা কেনার সময় বাজারের মূল্যের তুলনায় কিছুটা হলেও ছাড় পাবেন। আর যে মূল্যের সোনা কিনবেন সরকার থেকে সেই অর্থের উপর প্রতি বছর ২.৫ শতাংশ হারে সুদ দেবে। আর সোভেরেইন গোল্ড বন্ড না পেলে দ্বিতীয় লক্ষ্য হতে পারে গোল্ড ইটিএফ কেনা। সেক্ষেত্রে বাজারে সেই মুহূর্তে সোনার যে দাম, সেই দামেই সোনা কিনতে পারবেন।
এরপর কোনও ইনডেক্স ফান্ডে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। নিয়মিত বিনিয়োগ করতে এসআইপি করতে পারেন। আর এরচেয়ে বেশি কোথাও বিনিয়োগ করতে চাইলে ডিরেক্ট শেয়ারে বা অন্য বিভিন্ন রকম মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন।
শেয়ারে বিনিয়োগ করতে চাইলে সেই শেয়ারের বিষয়ে যথাযথ তথ্যানুসন্ধান ও অ্যানালিসিস করুন। এই ভিডিয়ো শুধুমাত্র শিক্ষাগত উদ্দেশ্যে। TV9 বাংলা বিনিয়োগের কোনও উপদেশ দেয় না।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: যে কোনও বিনিয়োগে বাজারগত ঝুঁকি রয়েছে। ফলে, আগে বিনিয়োগ সংক্রান্ত সমস্ত নথি সাবধানে পড়ে নেবেন। তারপর বিনিয়োগ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।