নয়া দিল্লি: করোনার ধাক্কায় প্রায় এক বছরের জন্য দেশের অর্থনীতি থমকে দাঁড়ালেও, সেই ধাক্কা সামলিয়ে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে অর্থনীতি। চলতি অর্থবর্ষে দেশের অর্থনীতিতে ৯.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে, এ কথা আগেই জানিয়েছিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাশ। সম্প্রতি বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক বিভিন্ন সূচকও সেই দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে জানালেন তিনি।
দেশের অর্থনীতির হাল ফেরানোর জন্য শক্তিকান্ত দাশ আরবিআইয়ের পাশাপাশি কেন্দ্রকেও কৃতিত্ব দিলেন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। তিনি জানান, করোনাকালে দেশের অর্থনীতির যে হাল হয়েছিল, তা থেকে পুনরুত্থানের জন্য সরকারের তরফে রাজস্ব ও কর আদায় নিয়ে যে বিভিন্ন সিদ্ধান্তগুলি নেওয়া হয়েছে, তা বিশেষ সাহায্য করেছে। আগামিদিনেও এই পদক্ষেপগুলি অর্থনীতির বৃদ্ধিতে বিশেষ সাহায্য করবে বলে জানান তিনি। তবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে যথাসাধ্য সাহায্য করা হলেও এ বার সরকারকেই অর্থনীতির হাল ধরতে হবে, এ কথাও জানান তিনি।
করোনাকালে কীভাবে দেশের অর্থনীতিকে ধরে রাখতে সাহায্য করেছিল সরকার, তার উল্লেখ করে আরবিআইয়ের গভর্নর বলেন, “২০২০ সালের মার্চ মাসে যখন দেশে করোনার ঢেউ আছড়ে পড়ল, তখন সরকারের তরফে জ্বালানির উপর করে ছাড়, টেলিকম ক্ষেত্রে করে ছাড় সহ এয়ার ইন্ডিয়ার বিক্রি, একাধিক সরকারি ব্যাঙ্কের মালিকানা ছেড়ে দেওয়ার মতো একাধিক বড় পদক্ষেপ নিতে হয়েছিল। এই বড় বড় সিদ্ধান্তগুলির লাভের ফলই মিলছে এখন।”
তিনি আরও বলেন, “বিশ্ব বাজারে ক্রুড তেলের মূল্যবৃদ্ধি থেকে শুরু করে একাধিক ভৌগলিক ও রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েও সব মিলিয়ে দেশের অর্থনীতির যে বৃদ্ধি হয়েছে, তা আমাদের কাছে যথেষ্ট আশাজনক। আমি নিশ্চিত যে দেশের জিডিপি আগামিদিনেও বৃদ্ধি পাবে এবং চলতি অর্থবর্ষে আর্থিক প্রবৃদ্ধি ৯.৫ শতাংশে বেড়ে দাঁড়াবে।”
তবে ৯.৫ শতাংশ বৃদ্ধির সম্ভাবনার আগেও একটি প্রশ্নচিহ্ন থেকেই যাচ্ছে বলে জানান তিনি। এই মন্তব্যের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “বহু দেশ, যারা আমাদের আগে দ্রুত আর্থিক মন্দা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছিল, তাদের অর্থনৈতিক বৃদ্ধিও বর্তমানে কিছুটা ঢিলে তালে হয়ে গিয়েছে। এখনও অনেক ইউরোপীয়ান, এশিয়ান ও আমেরিকান দেশ এই প্যান্ডেমিকের সঙ্গে লড়াই করছে। তাই আত্মতুষ্টি করার মতো পরিস্থিতি নেই এখন আর।”