Red Sea cables: লোহিত সাগরের নীচে ছিঁড়ল তার, চলবে তো ইন্টারনেট? বাড়ছে উদ্বেগ
Red Sea cables: লোহিত সাগরের নীচে গুরুতর ক্ষতি হল টেলিকমিউনিকেশন কেবল-এর। হংকংয়ের টেলিকম সংস্থা, 'এইচজিসি গ্লোবাল কমিউনিকেশনস' জানিয়েছে, চারটি প্রধান টেলিকম নেটওয়ার্কের তার কেটে দেওয়া " হয়েছে। যার ফলে, উল্লেখযোগ্য ব্যাঘাত ঘটেছে এশিয়া, ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের টেলিকমিউনিকেশন এবং ইন্টারনেট নেটওয়ার্কগুলির।
সানা: বন্ধ হয়ে যাবে ইন্টারনেট সংযোগ? হামাস-ইজরায়েল যুদ্ধের প্রেক্ষিতে অশান্ত লোহিত সাগর। ইজরায়েলের মিত্রপক্ষের জাহাজগুলির উপর লাগাতার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। এই গুরুত্বপূর্ণ জলপথে, হামলার মুখে পড়ছে একের পর এক বাণিজ্যিক জাহাজ। যার জেরে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাহত হয়েছে। এবার, লোহিত সাগরের নীচে গুরুতর ক্ষতি হল টেলিকমিউনিকেশন কেবল-এর। হংকংয়ের টেলিকম সংস্থা, ‘এইচজিসি গ্লোবাল কমিউনিকেশনস’ জানিয়েছে, চারটি প্রধান টেলিকম নেটওয়ার্কের তার কেটে দেওয়া ” হয়েছে। যার ফলে, উল্লেখযোগ্য ব্যাঘাত ঘটেছে এশিয়া, ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের টেলিকমিউনিকেশন এবং ইন্টারনেট নেটওয়ার্কগুলির। এক চতুর্থাংশের মতো ইন্টারনেট ট্রাফিক ঘুরপথে নিয়ে যেতে হচ্ছে সরবরাহকারী সংস্থাগুলিকে। প্রসঙ্গত, কয়েক সপ্তাহ আগেই ইয়েমেনি সরকার সতর্ক করেছিল, হুথি বিদ্রোহীরা সাগরের নীচে থাকা এই তারগুলিকে নিশানা করতে পারে।
সোমবার, এইচজিসি গ্লোবাল কমিউনিকেশনস জানিয়েছে, এশিয়া এবং ইউরোপের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের ২৫ শতাংশ ট্রাফিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে তাদের অনুমান। গ্রাহকদের উপর যাতে এর প্রভাব না পড়ে, তার জন্য ঘুরপথে এই ট্রাফিক চালু রাখা হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার সংস্থা ‘সিকম’-এর তারও কাটা পড়েছে। তারা জানিয়েছে, মেরামতের কাজ শুরু করতে কমপক্ষে আরও এক মাস লাগবে। কারণ মধ্য প্রাচ্যে এই ধরনের কাজ করতে গেলে অনেক অনুমতি নিতে হয়। তার জন্যই সময় অনেক বেশি লাগবে। সিকমের চিফ ডিজিটাল অফিসার প্রেনেশ পদয়াচি বলেছেন, ইয়েমেনি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এই বিষয়ে অনুমতি পেতে আট সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। ততদিন পর্যন্ত, ঘুরপথেই চালু থাকবে ইন্টারনেট।
ক্ষতি হয়েছে, এশিয়া-আফ্রিকা-ইউরোপ ১ নেটওয়ার্কেরও। ২৫,০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নেটওয়ার্ক দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াকে মিশর হয়ে ইউরোপের সঙ্গে যুক্ত করে। ক্ষতি হয়েছে ইউরোপ ইন্ডিয়া গেটওয়ে বা ইআইজি-রও। ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য এবং ভারতকে যুক্ত করে ইআইজি। এই নেটএওয়ার্কের প্রধান বিনিয়োগকারী ব্রিটেনের ভোডাফোন সংস্থা। সমুদ্রের নীচে পাতা ৮০টি তার ব্যবহার করে ১০০টি দেশে ইন্টারনেট ট্রাফিক পাঠায় সংস্থাটি। বেশিরভাগ বড় টেলিকম সংস্থাই সমুদ্রের নীচে পাতা এই ধরনের একাধিক তার-ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে। তাই, কোনও তার ছিঁড়ে গেলে, তারা নিরবচ্ছিন্ন পরিষেবা নিশ্চিত করতে ট্রাফিককে ঘুরপথে নিয়ে যায়। এই ক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছে।
আসলে বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট সংযোগের পিছনে, অদৃশ্য শক্তির মতো কাজ করে এই সাগরের নীচ দিয়ে যাওয়া তারগুলি। গুগল, মাইক্রোসফ্ট, অ্যামাজন এবং মেটার মতো ইন্টারনেট জগতের বড় সংস্থাগুলির টাকাতেই এই তারগুলি পাতা হয়েছে সমুদ্রের নীচে। এই তারগুলির ক্ষতি হলে, ব্যাপক এলাকা জুড়ে ইন্টারনেট এবং টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ব্যহত হয়। ২০০৬ সালে তাইওয়ানে ভূমিকম্পের পর, সমুদ্রের নীচে ছড়িয়ে থাকা এই তারগুলি ক্ষতি হয়েছিল। এছাড়া, সমুদ্রের নীচে থাকা তারগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আর কোনও নিদর্শন নেই।
তবে, কারা এই তার কেটে দিয়েছে, বা তারের ক্ষতির জন্য দায়ী, সেই নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এইচজিসি সংস্থা এই সম্পর্কে কিছু জানায়নি। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে তারের ক্ষতির জন্য হুথিদের দায়ী করা হয়েছে। কিন্তু, হুথি নেতা আবদেল মালেক আল-হুথি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ইন্টারনেট সরবরাহকারী এই তারগুলিকে নিশানা করার কোনও ইচ্ছা তাদের নেই। উল্টে, ওই এলাকায় মোতায়েন ব্রিটিশ ও মার্কিন সামরিক বাহিনীগুলির উপর এই ক্ষতির দায় চাপিয়েছে তারা।