Malda: এটাও সম্ভব? সিরাজুলের জমির কাগজ দেখতেই চোখ কপালে ভূমি দফতরের
Malda: কিন্তু রেকর্ডের আবেদনের উপর ভূমি দফতর সরজমিনে যেতেই সামনে এল কেলেঙ্কারি, চক্ষু চড়কগাছ আধিকারিকদের। ওয়ারিশ সার্টিফিকেটে আছে ম্যাজিস্ট্রেটের সই, অথচ জমি বিক্রি নিয়ে কিছুই জানে না সংশ্লিষ্ট দফতর। জমি মাফিয়া আর অসাধু চক্র নিয়ে উঠছে প্রশ্ন? শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
মালদহ: চোখের সামনে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে সরকারি জমি? যা নিয়ে তুমুল চাঞ্চল্য। সরকারি দফতরের ঘেরা জায়গা বিক্রির অভিযোগ। যা নাকি বিক্রি হয়ে গিয়েছে দেড় কোটি টাকায়। মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরে সেচ দফতরের ছয় বিঘা জমি রয়েছে। অভিযোগ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক বাসিন্দা সেই জমি বিক্রি করল দেড় কোটি টাকায়। হয়ে গিয়েছে রেজিস্ট্রিও। কিন্তু রেকর্ডের আবেদনের উপর ভূমি দফতর সরজমিনে যেতেই সামনে এল কেলেঙ্কারি, চক্ষু চড়কগাছ আধিকারিকদের। ওয়ারিশ সার্টিফিকেটে আছে ম্যাজিস্ট্রেটের সই, অথচ জমি বিক্রি নিয়ে কিছুই জানে না সংশ্লিষ্ট দফতর। জমি মাফিয়া আর অসাধু চক্র নিয়ে উঠছে প্রশ্ন? শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতাল সংলগ্ন রাজ্য সরকারের সেচ দফতরের মহানন্দা এমব্যাঙ্কমেন্টের অন্তর্গত প্রায় ১৩ বিঘা জমি রয়েছে। দফতরের পক্ষ থেকে ঘিরে রাখা হয়েছে সেই জমি। সেখান থেকেই ছয় বিঘা জমি দক্ষিণ ২৪ পরগনার দীপেন্দ্র কুমার মিশ্র নামে এক ব্যক্তি হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার কাউয়ামারী গ্রামের সিরাজুল হকের কাছে প্রায় দের কোটি টাকায় বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ। সেই জমির যে ওয়ারিশ সার্টিফিকেট রয়েছে সেখানে আলিপুর আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটের স্বাক্ষর। যেখানে এটি রায়তি সম্পত্তি বলে উল্লেখ রয়েছে। সেই কাগজের ভিত্তিতে আবার তুলসীহাটা সাব রেজিস্ট্রার অফিস সরকারি এই জমি সিরাজুল হকের নামে রেজিস্ট্রি করে দেয় বলে খবর।
তারপরে সিরাজুল হক যখন ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে রেকর্ডের জন্য আবেদন করেন। তখন বেশ কিছু কারণে সন্দেহ দানা বাঁধে কর্মীদের মনে। তাঁরা খতিয়ে দেখার জন্য সরজমিনে যান। মাপযোপ করেন।তারপরেই কার্যত চক্ষুচড়ক গাছ। দেখা যায় বিক্রি হয়ে গিয়েছে সরকারি জমি। সঙ্গে-সঙ্গেই বাতিল করা হয় রেকর্ডের আবেদন। পাশাপাশি এই ঘটনায় সরকারি দুই দফতরের সাব রেজিস্ট্রার এবং ভূমি দফতরের মধ্যে একটা সংঘাতও সামনে এসেছে।
সাব রেজিস্টারের দাবি, তিনি ওয়ারিশ সার্টিফিকেট দেখে রেজিস্ট্রি করে দিয়ে ছিলেন। যেখানে আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটের স্বাক্ষর ছিল। আলিয়া ভট্টাচার্যের নামে ছিল রায়তি এই সম্পত্তি। অন্যদিকে যিনি জমি কিনেছেন তাঁর দাবি, তাঁকে রেকর্ড করে না দিলে লিখিত দিতে হবে রেকর্ড না করে দেওয়ার কারণ। তিনি সমস্ত কাগজপত্র দেখে এই জমি কিনেছেন। পরবর্তীতে নয়ত তিনি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন।
মুখ্যমন্ত্রীর কঠোর বার্তার পরে এই জমি কেলেঙ্কারি সামনে আসতে ফের প্রশ্ন উঠেছে অসাধু চক্র নিয়ে। এই কীভাবে হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার সরকারি জমি সুদূর দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার এক ব্যক্তি বিক্রি করতে পারলেন?তবে কি বড় কোনও চক্র রয়েছে এর পিছনে? উঠেছে প্রশ্ন?
হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর রেভিনিউ অফিসার হিমাংশু কুমার মণ্ডল বলেন, “একটা দলিলের ওয়ারিশ সার্টিফিকেট দেখে সন্দেহ হয়। বুঝি সরকারি জমি। সেই কারণে মাপজোপ করা হয়েছে”। সেচ দফতরের মহানন্দা এনভাইরনমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার রাকেশ লালা বলেন, “আমরা কোনও তথ্য জানতাম না। জানলাম যে রেজিস্ট্রি হয়েছে। শুনলাম ছ’বিঘা জায়গা বিক্রি হয়েছে।” সাব রেজিস্ট্রার রমজান আলি বলেন, “জায়গাটা কিন্তু সরকারের নামে নেই। আলেয়া ভট্টাচার্যের নামে। ওরাশিট সার্টিফিকেট কিন্তু এসেছে আলিপুর থেকে।”জমি ক্রেতা সিরাজুল হক বলেন,”আমি সবটা দেখে কিনেছি। কম্পিউটারে দেখেছি যার জমি তার থেকে কিনেছি। রেজিস্ট্রার রেজিস্ট্রি করে দেখে দিয়েছে। সেটা তো বাতিল করতে পারত। যদি ভুল থাকত তখনই বলতে পারতেন।”