ভারতের শেয়ার বাজারে সম্প্রতি একটা কারেকশন হয়েছে। ফলে বেশ কিছু স্টকের দাম হুড়মুড়িয়ে অনেকটা করে কমে গিয়েছে। আর এর ফলে বিভিন্ন সেগমেন্টে বিনিয়োগকারীদের কাছে নতুন করে বিনিয়োগ করার একটা দিক খুলে গিয়েছে। আর এমতাবস্থায় অনেক বিশেষজ্ঞই লার্জ ক্যাপ শেয়ারে বিনিয়োগের তুলনায় স্মল ক্যাপ শেয়ারে বিনিয়োগকে গেমচেঞ্জার হিসাবে দেখছেন।
গত ২ মাসে ভারতীয় শেয়ার বাজার একটা বিরাট কারেকশন দেখতে পেয়েছে। ৩০ নভেম্বরের তথ্য অনুযায়ী, নিফটি ফিফটি ইনডেক্স তার রেকর্ড সর্বোচ্চ ২৬ হাজার ২৭৭ পয়েন্ট ছোঁয়ার পর প্রায় ৮ শতাংশ নেমে দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ১৩১-এ। অন্যদিকে, নিফটি স্মল ক্যাপ টু ফিফটি তার রেকর্ড সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ৬৮৮ পয়েন্ট থেকে প্রায় ৫.২ শতাংশ নেমে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৭১৬-তে।
নিফটি ফিফটি ইনডেক্স এতটা বেশি পতনের বেশ কয়েকটি কারণ ব্যাখ্যা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। আমেরিকায় ট্রাম্পের ক্ষমতায় ফিরে আসা ও ফেডারেল রেট কাটের কারণে খানিকটা ধাক্কা খেয়েছে ভারতের শেয়ার বাজার। আর এই ঘটনাকে সঙ্গত দিয়েছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিফটি ফিফটির মধ্যে থাকা কোম্পানি থেকে তাদের বিনিয়োগ তুলে নেওয়া।
অন্যদিকে, স্মল ক্যাপ কোম্পানিগুলোতে বিদেশি বিনিয়োগকারীর সংখ্যা তেমন উল্লেখযোগ্য নয়। ফলে, নিফটি ফিফটি কোম্পানিগুলোর মতো এত বেশি টাকা স্মল ক্যাপ ইনডেক্স থেকে বেরিয়ে যায়নি। যার ফলে, নিফটি ফিফটির মতো স্মল ক্যাপ ইনডেক্সের পতন হয়নি।
এই প্রসঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ড ডিস্ট্রিবিউটর সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায় বলছেন, “এখন স্মলক্যাপে দামের একটা সংশোধন হয়েছে। আর এর ফলে ভ্যালুয়েশনটা একটু ভাল হয়। মানে, জিনিসপত্রের দাম যেমন কমে, তেমনই কমেছে। আর প্রয়োজনীয় জিনিস আমরা কমদাম পেলে চট করে কিনে ফেলি। যদি স্মল ক্যাপ কোম্পানিগুলো সঠিকভাবে নির্বাচন করা যায়, তবে তারা মিড ক্যাপের দিকে চলে যাবে। অর্থাৎ, কোম্পানির ভ্যালুয়েশন বাড়বে। তবে, সঠিক কোম্পানি নির্বাচনটাই আসল কথা।”
তবে এই মুহূর্তে যে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করবে তার কাছে নিফটি ৫০ মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করার থেকে স্মলক্যাপ ২৫০তে বিনিয়োগ বেশি বিশ্বাসযোগ্য হবে? মিউচুয়াল ফান্ড ডিস্ট্রিবিউটর সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায় বলছেন, “আমি মনে করি এই ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞদের হাতে ছেড়ে দেওয়া উচিৎ। সেক্ষেত্রে ডাইরেক্ট বিনিয়োগ না করে স্মল ক্যাপ মিউচুয়াল ফান্ডের ন্যাভ (NAV) দেখে নিয়ে সেখানে বিনিয়োগ করলে ঝুঁকিটা অনেক কম। ব্যাপারটা হচ্ছে, হয়তো কেউ পছন্দ করে উঠতে পারছেন না কোনটা ভাল স্মল ক্যাপ। আর মিউচুয়াল ফান্ড বিশেষজ্ঞরা সারাদিন ধরে এর উপর রিসার্চ করছে। ফলে, তারা যদি কোনও স্মল ক্যাপ কোম্পানিতে টাকা রেখে থাকে, তবে তাদের প্রত্যাশা করছে এই কোম্পানিগুলো ধীরে ধীরে ভাল পারফর্ম করবে। তাহলে ওঁদের হাতে দিয়ে দিলেই তো ভাল। একসঙ্গে একগাদা টাকা লাগে না। আবার এসআইপিও করা যায়।”