‘বঙ্গবাসীর ঘায়ে মলম লাগানোর চেষ্টা চলছে’, দুর্গা অঙ্গন নিয়ে খোঁচা অমিত শাহর
সোমবার দুর্গা অঙ্গনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন শাহের আলোচনায় প্রচ্ছন্নভাবে ছিল সে প্রসঙ্গ। আর তা নিয়ে কথা বলতে গিয়েই অমিত শাহ চিটফান্ড দুর্নীতি, নিয়োগ দুর্নীতি, রেশন দুর্নীতি, আবাস-একশো দিনের কাজের দুর্নীতি নিয়ে মুখ খোলেন।

কলকাতা: বছর ঘুরতেই বিগ চ্যালেঞ্জ। তার আগে বাংলার হাল হকিকত খতিয়ে দেখতে এসেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তবে এই সফর এবার তাঁর পুরোটাই কলকাতাকেন্দ্রিক। মঙ্গলবার কলকাতায় সাংবাদিক বৈঠক করেন শাহ। এদিনের তাঁর বৈঠকেই সিংহভাগই জুড়ে ছিল অনুপ্রবেশ ইস্যু। আর এটাই যে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির হাতিয়ার হতে চলেছে, তা খানিকটা স্পষ্ট। অনুপ্রবেশ ইস্যু থেকে শুরু করে দুর্নীতি, নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেফতারি-সমস্ত বিষয় ছুঁয়ে গিয়েছেন শাহ। ডাক দিয়েছেন ছাব্বিশের এপ্রিলের পর বাংলায় বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে কথা বলেন মন্দির-মসজিদ রাজনীতি প্রসঙ্গেও। বাংলায় একাধিক দুর্নীতি, নারী নির্যাতনের অভিযোগের পরও কীভাবে ‘বঙ্গবাসীর ঘায়ে মলম লাগানোর ‘ চেষ্টা চলছে, তা তুলে ধরেন।
সোমবার দুর্গা অঙ্গনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন শাহের আলোচনায় প্রচ্ছন্নভাবে ছিল সে প্রসঙ্গ। আর তা নিয়ে কথা বলতে গিয়েই অমিত শাহ চিটফান্ড দুর্নীতি, নিয়োগ দুর্নীতি, রেশন দুর্নীতি, আবাস-একশো দিনের কাজের দুর্নীতি নিয়ে মুখ খোলেন। তাঁর প্রশ্ন, “মুখ্যমন্ত্রী কি জবাব দিতে পারবেন, আপনারই মন্ত্রীর ঠিকানা থেকে ২৭ কোটি টাকা পাওয়া যায়, যা গুনতে গুনতে নোট গোনার মেশিনও গরম হয়ে বন্ধ হয়ে যায়।”
মুখ্যমন্ত্রী যখন ২ লক্ষ বর্গ ফুটের দুর্গা অঙ্গনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করছেন, সে প্রসঙ্গ সরাসরি না টেনে অমিত বঙ্গে নারী নির্যাতনের একাধিক অভিযোগের প্রেক্ষিত তুলে ধরেন। টেনে আনেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে গণধর্ষণকাণ্ড। কসবা ল কলেজ থেকে শুরু করে সন্দেশখালির ঘটনা কিংবা দুর্গাপুরে মেডিক্যাল ছাত্রীর ওপর নির্যাতন-প্রত্যেকটি ইস্যু বেছে বেছে উল্লেখ করেন তিনি। তারপরই মুখ্যমন্ত্রীর একটি মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বলেন, “এখানে কীভাবে মহিলাদের বলা হয়, সন্ধ্যার ৭টার পর ঘর-হস্টেল থেকে যেন না বেরোয়। আমরা কোন যুগে বাস করছি?” উল্লেখ্য, দুর্গাপুরে মেডিক্যাল ছাত্রীর নিগ্রহের পর, মুখ্যমন্ত্রীর একটি বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। যদিও মুখ্যমন্ত্রী পরে দাবি করে, তাঁর মন্তব্য বিকৃত করা হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে বাংলায় ‘দুর্গা অঙ্গনে’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এখন ‘বাঙালির ঘায়ে মলম লাগানোর চেষ্টা’ বলে উল্লেখ করেন শাহ। তাঁর কথায়, “বঙ্গবাসীর হৃদয়ের ঘা এতটাই গভীর কোনও মলম কাজ করবে না।”
