পানাজি : ভোট ভাগাভাগি করতে নয়, ভোট ঐক্যবদ্ধ করতে গোয়ায় এসেছি। বিজেপির বিকল্প শক্তি হতে পারে একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেস এবং তৃণমূলী জোট। সৈকত রাজ্যে এসে সোমবার ফের একবার তৃণমূলী জোটের প্রসঙ্গ উস্কে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ত্রিপুরার পৌরভোটে খুব একটা আশানুরূপ ফল হয়নি। তাই এবার তৃণমূল সুপ্রিমোর সব নজর সৈকত রাজ্য গোয়ায়। কয়েক মাস পরই গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। আর তৃণমূলের জাতীয় স্তরে সংগঠন সম্প্রসারণের লড়াইয়ে এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাখির চোখ গোয়া। আর সেই লড়াইয়ে বন্ধু দলগুলির বিরুদ্ধে যেতেও যে তিনি তৈরি, আজ ঠারেঠোরে সেই কথাই আবারও বুঝিয়ে দিলেন। বললেন, “আমি ভোট ভাগাভাগি করতে আসিনি। আমি ভোট ঐক্যবদ্ধ করতে এসেছি। তৃণমূল কংগ্রেস এবং তৃণমূলের জোটকে জেতাতে এসেছি।”
তৃণমূল সুপ্রিমোর কথায়, “বিজেপির বিকল্প শক্তি হতে পারে একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেস এবং তৃণমূলী জোট। যদি কেউ আমাদের সমর্থন করতে চায়, তাহলে সেই সিদ্ধান্ত তাদের উপর। আমাদের তো সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছি। লড়াই হবে, কিন্তু কোনওভাবেই লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে দেওয়া হবে না।”
মমতার মুম্বই সফরের পর থেকেই জোর জল্পনা শুরু হয়েছিল। ইউপিএ জোটকে একেবারে অস্বীকার করে সমান্তরাল বিরোধী জোটের বার্তা দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর থেকেই শিবসেনাকে দেখা গিয়েছে কংগ্রেসের পাশে দাঁড়াতে। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চাও ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তারা কংগ্রেসের পাশেই থাকবে। এই পরিস্থিতিতে মমতা জাতীয় রাজনীতিতে বন্ধু হারাতে পারেন বলে জোর চর্চা শুরু হয়েছিল। কিন্তু আজ গোয়ায় মমতা বুঝিয়ে দিলেন, তিনিও হাল ছাড়বেন না। তৃণমূলী জোট যে থাকবেই, সেই কথা আজ স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা। বললেন, আমাদের সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে, যদি কেউ এই জোটের সঙ্গে আসতে চায়, তাদের স্বাগত।
উল্লেখ্য, রবিবারই আম আদমি পার্টির গোয়ার দায়িত্বে থাকা অতিসি মারলেনা এক টুইটে জানিয়েছিলেন, “আমি সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে বলছি যে তৃণমূলের সঙ্গে জোট হবে না। তাই তাদের সঙ্গে কোনও আলোচনার প্রশ্নই আসে না। আমরা গোয়াকে ভাল প্রার্থী দিয়ে একটি নতুন বিকল্প দিতে চাই এবং এক সৎ দুর্নীতিমুক্ত সরকার গঠন করতে বদ্ধপরিকর।”
তৃণমূলের সর্বভারতীয় স্তরে অস্তিত্ব প্রমাণের লড়াইয়ে নেমেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। আর তার জন্য বাংলার বাইরে দলের সম্প্রসারণে বিশেষ নজর দিয়েছেন তিনি। একই ধরনের দলীয় সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে তৃণমূলের ‘বন্ধু’ দল আম আদমি পার্টিও। মমতা এবং কেজরিওয়াল দু’জনেরই নজরে গোয়া বিধানসভা নির্বাচন। আর এরই মধ্যে মমতার এই বার্তা নিঃসন্দেহে বিরোধী শক্তিগুলির এককাট্টা হওয়ার বিষয়টি নিয়ে আবারও এক প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।