কলকাতা: সকলের কাছেই এখন বিষয়টা খুবই স্পষ্ট, জাতীয় রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিকতার লক্ষ্যে পশ্চিমের গোয়া ও উত্তর পূর্বের ত্রিপুরাকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে তৃণমূল। আগামী বছরের শুরুতেই গোয়াতে বিধানসভা নির্বাচন। তাই এই মূহুর্তে গোয়াই তৃণমূলের কাছে প্রাধান্য পাচ্ছে। সম্প্রতি গোয়া সফরে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সফর সঙ্গী ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। জানা গিয়েছে বছর শেষে আরও একবার গোয়া সফরে যাচ্ছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গোয়া সফর শেষেই ত্রিপুরাতে যাবেন তৃণমূলের ঘোষিত ‘নম্বর দুই’।
সূত্রের খবর, ২৬ থেকে ২৮ ডিসেম্বর গোয়াতে থাকবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন, সামনেই নতুন বছর। শীতকালীন এই উৎসব গোয়াতে বিশাল বড় করে উদযাপন করা হয়। গোয়ার বাসিন্দাদের পাশাপাশি দেশ বিদেশ থেকে বিভিন্ন মানুষ এই সময়ে গোয়াতে আসেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, গোয়ার সবথেকে বড় উৎসবে সংগঠনকে মজবুত করার পাশাপাশি জনসংযোগও সেরে ফেলতে চাইছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
বৃহস্পতিবার, প্রথমবার কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচারে নেমেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশাল রোড শো শেষে জাতীয় রাজনীতি নিয়ে বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি বিজেপিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ। তিনি বলছিলেন, “তৃণমূল এখন শুধু আর বাংলার রাজনৈতিক দল নয়। তৃণমূল ত্রিপুরাতে ঢুকেছে, গোয়াতে ঢুকেছে, মেঘালয়তে ঢুকেছে। এটা ডিসেম্বর মাস। ফেব্রুয়ারিতে গোয়া বিধানসভা নির্বাচন। এখানে উপস্থিত সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের সাক্ষী রেখে বলে যাচ্ছি, গোয়া নির্বাচনে হয় তৃণমূল কংগ্রসে জিতবে নইলে প্রধান প্রতিপক্ষ হবে, এটা আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি।”
অভিষেকের ত্রিপুরা সফরও যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। গোয়া সফরের পরই ২৯ ও ৩০ ডিসেম্বর ত্রিপুরাতে থাকবেন অভিষেক। তৃণমূল মনে করছে, খুবই অল্প সময়ের ব্যবধানে ত্রিপুরা পুরনির্বাচনে বিজেপির ব্যাপক সন্ত্রাস সত্ত্বেও ভাল ফল করেছে তৃণমূল। নির্বাচনের ফল বেরোনোর পর তৃণমূলের কোনও শীর্ষস্থানীয় নেতা ত্রিপুরা যাননি। তাই দলীয় কর্মীদের মনোবল বৃদ্ধি ও সাংগঠনিক অগ্রগতি খতিয়ে দেখতেই ত্রিপুরা যাচ্ছেন অভিষেক। বৃহস্পতিবার, ত্রিপুরা নিয়েও আত্মবিশ্বাসের সুর শোনা গিয়েছিল অভিষেকের গলায়। “ত্রিপুরাতে ৩ মাসের মধ্যে আমরা পা রেখে ২৪ শতাংশ ভোট পেয়েছি। ভারতের কোনও রাজনৈতিক দল এই নজির তৈরি করতে পারেনি। তৃনমূল আর যাই হোক মেরুদণ্ড বিক্রি করবে না। বিজেপির কাছে আত্মসমর্পণ না করে শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত তৃণমূল লড়বে।” বলেছিলেন অভিষেক।
উল্লেখ্য, বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ২১৩ আসন পেয়ে বাংলার ক্ষমতা ধরে রাখার পর, দলকে অন্য রাজ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার গুরুদায়িত্ব ‘ভাইপো’ অভিষেকের হাতেই তুলে দিয়েছিলেন মমতা। সেই মতোই রণকৌশল সাজিয়েছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। একাধিক রাজ্যে পা ফেলেছে তৃণমূল। গোয়া ও ত্রিপুরা নিয়ে তৃণমূলের এই তৎপরতা কতটা ফলপ্রসূ হয়, তার উত্তর দেবে সময়।