বেঙ্গালুরু: গাছে কাঁঠাল থাকতে থাকতেই গোঁফে তেল দিতে শুরু করেছেন কর্নাটক প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা। ১০ মে নির্বাচন। তার আগে মুখ্যমন্ত্রী কে হবে, এই প্রশ্নে দলের অন্দরে ফাটল ধরার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। দিন কয়েক আগেই এক সর্বভারতীয় সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে, বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা সিদ্দারামাইয়াকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছিল, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডি কে শিবকুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করবে না হাই কমান্ড। মঙ্গলবার সেই মন্তব্য অস্বীকার করে টুইট করেন সিদ্দারামাইয়া। একদিন পরই এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ডিকে শিবকুমারও বকলমে মুখ্যমন্ত্রী পদে নিজের দাবি জানিয়ে রাখলেন। কর্নাটক প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির আশা, নির্বাচনে দল জয়লাভ করলে হাইকমান্ড তাঁর আনুগত্য এবং পরিশ্রমের ‘পুরস্কার’ দেবে।
ডি কে শিবকুমার বলেছেন, “আমি দলের প্রতি অনুগত থেকেছি, কখনও বিশ্বাসঘাতকতা করিনি। কঠিন সময়ে যারা দলের পাশে দাঁড়িয়েছে, দলের হাইকমান্ড তাদের পুরস্কৃত করবে। আমি দিনের পর দিন না ঘুমিয়ে রাজ্যের প্রতিটি কোণায় কোণায় গিয়েছি। আমরা সংগঠনকে শক্তিশালী করেছি বিজেপির বিরুদ্ধে দলকে ঐক্যবদ্ধ করেছি।” মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য সিদ্দারামাইয়ার সঙ্গে তাঁর কোনও লড়াই নেই বলে দাবি করেছেন তিনি। শিবকুমার বলেছেন, “আমরা সকলে একসঙ্গে আছি। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য বিজেপিকে হারানো এবং কর্নাটকের সম্মান পুনরুদ্ধার করা। ১৭৫টি আসনে প্রার্থী ঠিক হয়ে গিয়েছে। প্রায় ১৪০টির মতো আসন জেতার বিষয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী।”
চলতি সপ্তাহের শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবি নিয়ে সিদ্দারামাইয়ার একটি মন্তব্য নিয়ে জোরালো বিতর্ক শুরু হয়েছিল। সংবাদ প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল যে, সিদ্দারামাইয়া বলেছেন, ডিকে শিবকুমারকে কংগ্রেস হাই কমান্ড কখনই মুখ্যমন্ত্রী করবে না। মঙ্গলবার সিদ্দারামাইয়া অবশ্য সেই মন্তব্য অস্বীকার করেন। কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সংবাদমাধ্যমে যা বলা হয়েছে, তা মিথ্যে। আমি বলেছিলাম যে, মুখ্যমন্ত্রী বাছাই একটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। আমি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার একজন দাবিদার। ডিক শিবকুমারও মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আরেক দাবিদার। কিন্তু, সংবাদমাধ্যমে যা বলা হয়েছে তা একেবারে ভুল।”
সিদ্দারামাইয়া এবং ডিকে শিবকুমার দুজনেই কর্নাটক কংগ্রেসের দুই অত্যন্ত প্রভাবশালী নেতা। কংগ্রেস জিতলে, দুজনেই মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার বড় দাবিদার হবেন। কংগ্রেস দলের পক্ষ থেকে দলে কোনও রকম ফাটলের সম্ভাবনা অস্বীকার করা হয়েছে। তবে, তলায় তলায় তাঁদের মধ্যে যে একটা টানাপোড়েন রয়েছে, তা দুই নেতার ধারাবাহিক মন্তব্যেই স্পষ্ট। বস্তুত দীর্ঘ কয়েক দশক ধরেই কর্নাটক কংগ্রেসে কে বড়, এই নিয়ে সিদ্দারামাইয়া এবং শিবকুমারের মধ্যে প্রতিযোগিতা রয়েছে। ‘ভারত জোড়ো যাত্রার’ সময়ে দুই নেতার মধ্যে বিরল ঐক্যের ছবি দেখা গিয়েছিল। তবে, তারপরই ফের দু’জনের দূরত্ব বেড়েছে।