কলকাতা: হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ শুক্রবারই জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে কলকাতার পুরভোট (kmc election 2021) নয়। তবে একইসঙ্গে তারা জানিয়েছে কোনও রকম অশান্তি কিংবা হিংসার ঘটনা ঘটলে তার জবাবদিহি করতে হবে পুলিশ কমিশনার, ডিজিকে। অর্থাৎ কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য পুলিশের হাতেই পুরভোটের শৃঙ্খলার ভার। এই নির্দেশের দিনই পুলিশি প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে ময়দানে দেখা গেল পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্রকে।
আগামী ১৯ ডিসেম্বর কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডে নির্বাচন। তার আগে শুক্রবার পুরসভা নির্বাচনে পুলিশি প্রস্তুতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখলেন স্বয়ং পুলিশ কমিশনার। কলকাতার শহরে যতগুলি ডিসি অফিস আছে প্রত্যেকটিতে তিনি নিজে উপস্থিত হন। পুলিশ প্রশাসন কতটা প্রস্তুত এবং নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ হয় তা খতিয়ে দেখেন পুলিশ কমিশনার।
এরপরই কলকাতার পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র বলেন, “আগামী ১৯ তারিখ নির্বাচন। তাই আমাদের অফিসারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে প্রস্তুতি খতিয়ে দেখছি। আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত। এ বছর অনেকগুলি নির্বাচনে কাজ করেছি। এই ভোটটাও যাতে শান্তিপূর্ণ হয় তার জন্য আমাদের প্রস্তুতি যথেষ্ট রয়েছে। রাজ্য পুলিশ থেকে যে বাহিনী আসার কথা, তা ইতিমধ্যেই চলে এসেছে। পাশাপাশি শহরের প্রত্যেকটি জায়গায় যাতে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয় তার ব্যবস্থা আমরা করছি। আমরা আশাবাদী প্রত্যেকটি জায়গায় আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করাতে পারব প্রত্যেকটি ডিসি অফিসের যে কর্মী রয়েছেন, তাঁদের কী করণীয় তা যথাযথভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছি।”
এর আগে নজরুল মঞ্চে ট্রাফিকের একটি সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নগরপাল সৌমেন মিত্র জানান, পুরভোটে কলকাতা পুলিশের সঙ্গে থাকবে রাজ্য পুলিশও। পাশাপাশি তিনি জানান, নিরাপত্তা নিয়ে ‘ফোর্স ডিপ্লয়মেন্ট’ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাঠানো হয় কমিশনে। কমিশন যেমন নির্দেশ দেবে সেই অনুযায়ীই বাহিনী মোতায়েন করা হবে। শহরবাসীকে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে কলকাতা পুলিশ বদ্ধপরিকর, এদিন সে কথাও জানান সৌমেন মিত্র। একইসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ভোট করানোর জন্য কলকাতা পুলিশের হাতে পর্যাপ্ত বাহিনী রয়েছে।
শুক্রবার আদালতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী জানান, বুথে সিসিটিভি রাখা হচ্ছে। একাধিকবার পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে কমিশনের বৈঠক হয়েছে। পুরভোটে বাহিনীর কোনও প্রয়োজন নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি। আইনজীবী বলেন, ‘বুথে একজন সশস্ত্র পুলিশ থাকছেন। কমিশন আশ্বাস দিচ্ছে, কোনও সন্ত্রাস হবে না।’
এরপরই সবপক্ষের কথা শুনে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে বিজেপির দায়ের করা মামলাতে আদালত তাদের পর্যবেক্ষণ শোনায়। আদালত বলে, কলকাতা ও রাজ্য পুলিশ দিয়েই কলকাতার পুরভোট করানো যেতে পারে। শুক্রবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে ছিল এই মামলার শুনানি। এর আগে সিঙ্গল বেঞ্চেও খারিজ হয়ে যায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর আর্জি। যদিও এদিনই আবার সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে বিজেপি। শনিবার সে মামলার শুনানি রয়েছে।
আরও পড়ুন: বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো! এই বুঝি কী হয় কী হয়…মামলার ফাঁসে থমকে বিপজ্জনক বাড়ির সংস্কার