নয়া দিল্লি: কংগ্রেসে বাড়বে গান্ধীর সংখ্যা? উত্তর প্রদেশের পিলিভিট আসনের বর্তমান সাংসদ বরুণ গান্ধী। কিন্তু, মানেকা গান্ধীর ছেলেকে, এবার আর সেখান থেকে টিকিট দেয়নি বিজেপি। রবিবার, বিজেপি উত্তর প্রদেশের আরও ১৩টি আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, পিলভিট থেকে বিজেপির এবারের প্রার্থী জতিন প্রসাদ। প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বরুণ গান্ধী। এই অবস্থায়, তাঁকে পিলভিট থেকে প্রার্থী করতে পারে কংগ্রেস! মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) তাঁকে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিলেন কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী। অধীর চৌধুরী এদিন জানিয়েছেন, কংগ্রেসে যোগ দিতে চাইলে বরুণ গান্ধীকে ‘স্বাগত’ জানানো হবে।
এদিন মুর্শিদাবাদে এক সাংবাদিক সম্মেলন করেন অধীর চৌধুরী। তাঁর অভিযোগ, গান্ধী পরিবারে তাঁর শিকড় রয়েছে বলেই বরুণ গান্ধীকে ভোট-যুদ্ধ থেকে বাদ দিয়েছে বিজেপি। এই অবস্থায় তাঁর কংগ্রেসে যোগ দেওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন তিনি। অধীর চৌধুরী বলেন, “তাঁর (বরুণ গান্ধী) কংগ্রেসে যোগ দেওয়া উচিত। তিনি যোগ দিলে আমরা খুশি হব। তিনি একজন বড় মাপের নেতা এবং একজন সুশিক্ষিত রাজনীতিবিদ। তাঁর স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে। গান্ধী পরিবারের সঙ্গে তাঁর যোগ রয়েছে বলেই বিজেপি তাঁকে টিকিট দেয়নি। আমরা চাই বরুণ গান্ধী এখন কংগ্রেসে যোগ দিন।”
#WATCH | Murshidabad, West Bengal: On BJP MP Varun Gandhi not getting a Lok Sabha ticket from BJP, Congress candidate from Berhampore constituency Adhir Ranjan Chowdhury says, “He should come here. We would be happy. He is an educated man. He has a clean image. BJP denied him a… pic.twitter.com/2RifTmMMdz
— ANI (@ANI) March 26, 2024
বরুণ গান্ধী অবশ্য এখনও পর্যন্ত একবারও কংগ্রসে যোগ দেওয়ার কোনও ইচ্ছা প্রকাশ করেননি। পিলিভিট থেকে তাঁকে প্রার্থী না করায়, দল তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করেছে বলে মনে করছেন তিনি। তবে, তাই বলে কংগ্রেসে যোগ দেবেন এমন কোনও ভাবনা তাঁর নেই। সূত্রের খবর, লোকসভা নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না বলেই ঠিক করেছেন। পিলিভিট থেকে বরুণ গান্ধীকে প্রার্থী না করা হলেও, সুলতানপুর থেকে তাঁর মা মানেকা গান্ধীকে ফের টিকিট দিয়েছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। বিজেপি তাঁকে টিকিট না দেওয়ার পর, তাঁর নির্বাচনী রাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানাননি বরুণ গান্ধী।
তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানিয়েছে, সম্প্রতি এই বিজেপি নেতা চার সেট মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন। নির্বাচনী প্রচারের জন্য পিলিভিটের প্রতিটি গ্রামে দুটি করে গাড়ি এবং ১০টি করে মোটরসাইকেল প্রস্তুত রাখতে বলেছিলেন দলীয় কর্মীদের। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত তাঁর বদলে ২০২১ সালেই কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে আসা জিতিন প্রসাদকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। ২৭ মার্চ মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। তার আগেই কি কংগ্রেসে যোগ দেবেন বরুণ গান্ধী? নাকি নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেবেন তিনি। চলতি মাসের শুরুতেই, শোনা গিয়েছিল বিজেপি তাঁকে টিকিট না দিলে, তিনি নির্দল প্রার্থী হিসাবে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন।
বরুণ গান্ধীকে কেন প্রার্থী করল না বিজেপি? দলীয় সূত্রে খবর, উত্তর প্রদেশে যোগী আদিত্যনাথ সরকারের নিয়মিত সমালোচনা করার জন্যই শীর্ষ নেতৃত্বের বিরাগভাজন হয়েছেন তিনি। গত বছর যোগীর নাম না করেই বরুণ গান্ধী বলেছিলেন, “সাধুবাবাদের কখনও বিরক্ত করবেন না, কেউ জানে না তিনিও কোনোদিন মুখ্যমন্ত্রী হয়ে যেতে পারেন।” ২০২৩-এর সেপ্টেম্বরে, এক রোগীর মৃত্যুর পর আমেঠির সঞ্জয় গান্ধী হাসপাতালের লাইসেন্স স্থগিত করেছিল যোগী সরকার। সেই সময়ও সরকারের সমালোচনা করেছিলেন তিনি। ২০২১-এ লখিমপুর খেরির ঘটনার সমালোচনা করেছিলেন বরুণ গান্ধী এবং মানেকা গান্ধী। তারপর, তাঁদের দুজনকেই বিজেপির ৮০ সদস্যের জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল।