কলকাতা : গতকাল ইউনেসকোর (UNESCO) তরফ থেকে দুর্গা পুজোকে (Durga Puja) হেরিটেজ তকমা দেওয়া হয়েছে। আজ পুরভোটের প্রচারে গিয়ে সেই প্রসঙ্গ তুলে আবেগে ভাসলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বললেন, ‘আমার গায়ে কাঁটা দিচ্ছে।’ ২০১৬ থেকে দুর্গা পুজোকে আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ে যেতে তৎপর ছিলেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। সেই সঙ্গে দুর্গা পুজো প্রসঙ্গে জবাব দিতে ছাড়েননি বিরোধীদের। মমতা বলেন, ‘আজ তো ওদের মুখে চুন-কালি পড়া উচিৎ।’
এ দিন মমতা বলেন, ‘গতকাল যা পেয়েছি, আমার হৃদয় ভরে গিয়েছে। বাংলা বিশ্ব বাংলা হয়ে গিয়েছে। বাংলা বিশ্ব সেরা হয়ে গিয়েছে। আমি যখন বলছি, আমার গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। আপনাদের গায়েও নিশ্চয় কাঁটা দিচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি ২০১৬ থেকে চেষ্টা করছিলাম। পুজো কার্নিভাল মাথা থেকে বের করেছিলাম। ক্লাবগুলোকে আমরা ৫০ হাজার টাকা করে দিই।’ মমতার কথায়, আমাদের পুজো বর্ণময়, ছন্দময়, সংস্কৃতিময়।
বিরোধীদের জবাব দিয়ে মমতা বলেন, ‘কেউ কেউ বলত মমতা দিদি দুর্গা পুজো করতে দেন না। আজ তাদের মুখে চুন-কালি পড়া উচিৎ। কারণ আজ দুর্গা পুজো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হয়ে গিয়েছে।’ প্রত্যেকের গর্ব করা উচিৎ বলে মন্তব্য় করেন তিনি।
গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলায় প্রচারে এসে দুর্গা পুজো নিয়ে অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি নেতৃত্ব। আক্রমণ করেছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। সেই সঙ্গে বঙ্গের অন্যান্য় বিজেপি নেতাদের মুখেও বারবার শোনা গিয়েছে একই অভিযোগ।
অমিত শাহ বিধানসভা ভোটের প্রচারে এসে বলেছিলেন, বাংলায় দুর্গা পুজো হওয়া উচিৎ। তৃণমূল সরকার মাফিয়া, কাটমানির সরকার বলে আক্রমণ করে তিনি বলেছিলেন, এখানে সরস্বতী পুজো করতে চাওয়ায় শিক্ষকদের মারধর করা হয়, এই সরকার বেশি দিন চলতে পারে না। বিজেপি সরকার গঠন করলে এখানে দুর্গাপুজো ও সরস্বতী পুজো কেউ আটকাতে পারবে না। সেই সব মন্তব্যেরই এ দিন জবাব দিয়েছেন মমতা।
ইউনেসকোর ইনট্যানজিবল হেরিটেজের স্বীকৃতি পেয়েছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গা পুজো। ১৩ ডিসেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফ্রান্সের প্যারিসে আয়োজিত হচ্ছে ইন্টারগভর্নমেন্ট কমিটির ১৬ তম অধিবেশন। সেই অধিবেশনেই ‘কলকাতার দুর্গাপুজো’-কে ইউনেসকোর ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটির তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে।
ইউনেসকোর ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে, “দুর্গা পুজাকে ধর্ম ও শিল্পের সর্বজনীন মিলন ক্ষেত্রের সর্বোত্তম উদাহরণ হিসাবে দেখা হয় এবং সহযোগী শিল্পী ও ডিজাইনারদের জন্য একটি সমৃদ্ধ ক্ষেত্র হিসাবে দেখা হয়। এই উৎসব শহুরে এলাকায় বড় আকারের পালিত হয় এবং মণ্ডপগুলির পাশাপাশি রয়েছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢাক এবং দেবীর পূজা।” উৎসব চলাকালীন সব শ্রেণি, ধর্ম এবং জাতিগত বিভাজন ভেঙে দর্শকদের ভিড়ের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে এবং এই গোটা প্রক্রিয়াই ভীষণভাবে প্রশংসিত হয়েছে ইউনেসকোর দরবারে।
আরও পড়ুন : KMC Election 2021: পুরভোটে কোনও বাধা এলে রাজ্য অচল হবে! হঁশিয়ারি শুভেন্দু-সুকান্তের