হায়দরাবাদ: ফের উঠল গেরুয়া ঝড়। হিন্দি বলয়ে জয়জয়কার বিজেপির। মধ্য প্রদেশ তো নিজেদের ঝুলিতে রেখেছেই বিজেপি, একইসঙ্গে কংগ্রেসের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে রাজস্থান ও ছত্তীসগঢ়ের গদিও। একমাত্র হার তেলঙ্গানাতে। বিআরএস-কে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে কংগ্রেস। গত নির্বাচনের তুলনায় বেশি আসন পেয়েছে বিজেপি। তবে বিজেপির আসল প্রাপ্তি হল কেভি রামানা রেড্ডি। একইসঙ্গে বিদায়ী ও সম্ভাব্য- দুই মুখ্যমন্ত্রীকেই হারিয়েছেন তিনি। আর এই ফলাফল দিয়েই তেলঙ্গানায় বিজেপির ভরসা হয়ে উঠেছেন প্রদীপ কেভি রামানা রেড্ডি।
তেলঙ্গানার হাইভোল্টেজ নির্বাচনে শুরু থেকেই নজর ছিল কামারেড্ডি আসনের উপরে। এই আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিআরএস প্রধান কে চন্দ্রশেখর রাও। তাঁর বিপরীতে কংগ্রেসের হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন রেভন্ত রেড্ডি। রবিবার সকালে গণনার শুরু থেকেই মুখ্যমন্ত্রী কেসিআরকে পিছনে ফেলে এক নম্বরে ছিলেন রেভন্ত। তাঁর জয় প্রায় নিশ্চিত ছিল। কিন্তু গণনার শেষ হতে হতে খেলা ঘুরে যায়। রেভন্তকে দ্বিতীয় স্থানে পাঠিয়ে শীর্ষে উঠে আসেন বিজেপি প্রার্থী কেভি রামানা।
বিজেপি প্রার্থী কাতিপাল্লি ভেঙ্কট রামানা রেড্ডি বা কেভি রামানা রেড্ডি পেশায় ব্যবসায়ী। এক সময়ে তিনি শাসক দল ভারত রাষ্ট্রীয় সমিতি বা বিআরএসের সদস্য় ছিলেন। পরে দলবদল করে বিজেপিতে যোগ দেন। পকেটে কলেজের ডিগ্রিও নেই, কিন্তু কেভি রামানা রেড্ডির সম্পত্তির পরিমাণ চোখ কপালে ওঠার মতো। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ৪৯.৭ কোটি।
দীর্ঘদিন ধরে বিজেপি করলেও, অনেকের কাছেই অচেনা মুখ ছিলেন কেভি রামানা। তাঁকেই বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী কেসিআরের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর সাহস দেখিয়েছিল বিজেপি। প্রসঙ্গত, তেলঙ্গানা অন্ধ্র প্রদেশ থেকে আলাদা হওয়ার পর, ২০১৪ সাল থেকেই কামারেড্ডি আসনে জয়ী হয়েছে বিআরএস। জয় নিশ্চিত, এই ভেবেই হয়তো কামারেড্ডি আসন থেকে প্রার্থী করা হয়েছিল কেসিআরকে। কিন্তু সকলকে চমকে জয়ী হন কেভি রামানা রেড্ডি।
নির্বাচনের সম্পূর্ণ ফল প্রকাশের পর দেখা যায় মোট ৬৬ হাজার ৬৫২টি ভোট পেয়েছেন বিজেপি প্রার্থী কেভি রামানা রেড্ডি। বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রীকে কেসিআরকে ৬,৭০০ ভোটে এবং সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রী রেভন্ত রেড্ডিকে ১২ হাজার ভোটে হারিয়েছেন তিনি। একসঙ্গে দুই হেভিওয়েট নেতাকে হারানোর রহস্য়টা কী?
জয়ের পর রামানা রেড্ডি জানান, প্রতিদ্বন্দ্বীকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দেখেননি তিনি। বিআরএস ও কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবেই দেখেছিলেন এবং সেই অনুযায়ীই প্রতিপক্ষ দলকে হারাতে নিজের ১০০ শতাংশ দিয়েছিলেন। আর তাতেই বাজিমাত।