কলকাতা: পুরভোট পিছিয়ে দিতে সায় রাজ্যের। নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানাল রাজ্য। আদালতের নির্দেশের পরই রাজ্যের অবস্থান জানতে চেয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তারপরই শনিবার চিঠি দেয় নবান্ন। চিঠিতে রাজ্য জানিয়েছে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রাজ্য। তবে ভোট পিছিয়ে দিলে আপত্তি নেই। শনিবার দুপুরেই কমিশন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ভোট পিছনোর ঘোষণা করবে বলে সূত্রের খবর।
পুরভোট যেহেতু রাজ্য নির্বাচন কমিশন পরিচালনা করে তাই প্রথামাফিক সেই ভোট নিয়ে চূড়ান্ত দিনক্ষণ ঘোষণার আগে রাজ্যের কাছ থেকে রিপোর্ট চাওয়া হয়। রাজ্যের সঙ্গে কথাবার্তা বলেই ভোট ঘোষণা করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এবারও রাজ্যের সঙ্গে কথা বলেই ভোট ঘোষণা করা হয়েছিল। ২২ জানুয়ারি চার পুরনিগম আসানসোল, চন্দননগর, বিধাননগর ও শিলিগুড়িতে ভোটের দিন ঠিক হয়। কিন্তু শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট ভোটের দিনক্ষণ পিছিয়ে দেওয়া নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে বিবেচনা করতে বলার পরই নির্বাচন কমিশন রাজ্যের সঙ্গে কথা বলে। জানতে চায়, এই কোভিড পরিস্থিতিতে ভোট পিছিয়ে দেওয়া নিয়ে রাজ্য কী ভাবছে?
তারই পাল্টা রাজ্য সরকারের তরফে শনিবার চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয় রাজ্যে কোভিডের যে পরিস্থিতি রয়েছে তা সর্বতভাবে রাজ্য মোকাবিলা করছে। যা পরিস্থিতি তাতে মোকাবিলা সম্ভবও। কিন্তু আদালত যেহেতু বিষয়টি আলাদাভাবে দেখার কথা বলছে, যদি নির্বাচন কমিশন ভোট পিছিয়ে দিতে চায় তাতে রাজ্যের কোনও আপত্তি নেই। শনিবারই বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সঙ্গে কথা বলবে নির্বাচন কমিশন। তার আগে প্রাথমিকভাবে রাজ্যের সঙ্গে একটা আলোচনা প্রয়োজন ছিল। সেই আলোচনার রেশ ধরেই নবান্ন থেকে চিঠি পাঠানো হয়।
নবান্নের চিঠি দেওয়া প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “এটা তো অবধারিতই। এটা না করলে তো নিজেদের মুখ রক্ষা হবে না। তাই এখন চিঠি দিয়েছে। আদালতের নির্দেশে স্পষ্ট ভোট পিছিয়ে দিতে হবে। যে কাজটা সরকারের করা উচিৎ ছিল সেটা আদালতে গিয়ে করাতে হচ্ছে। এখন চিঠি দেওয়া বা না দেওয়ায় কোনও আলাদা গুরুত্ব আমি দেখি না। এটা তো করতেই হবে। গঙ্গাসাগর মেলা করাতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গকে তো শেষ করে দিল। এবার হাইকোর্টের নির্দেশের পর যদি ভোট করাতে চায় তাহলে তো বলতে হবে বোধবুদ্ধিহীন সকলেই।”
কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীর কথায়, “প্রথম দিন থেকেই আমি বলেছি এই ভোট নির্ভর করছে রাজ্যের উপরে। রাজ্য মনে করলে ভোট করতে পারে। রাজ্য মনে করলে ভোট না করাতে পারে। মাঝখান থেকে নির্বাচন কমিশনকে এগিয়ে দিয়ে বলি পাঁঠা করার কোনও মানেই নেই। আমি আগেও এর বিরোধিতা করেছি। নির্বাচন কমিশনের এখানে কিছুই করার নেই। নির্বাচন কমিশন বাংলায় দাঁতহীন, নখহীন একটা বাঘের মতো। সে কারণেই হাইকোর্টকে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে।”
আরও পড়ুন: TMC Clash: ‘প্রকাশ্যে মুখ খুলে বিতর্ক তৈরি করা যাবে না’, সকল তৃণমূল সাংসদদের সতর্কবার্তা