কলকাতা: কোভিডে কড়া রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কোভিড বিধি বাধ্যতামূলক, প্রত্যেক প্রার্থীকে দেওয়া হয়েছে নির্দেশ। পুরভোটে জমায়েতে রাশ টানতেও এবার জারি হল নতুন নির্দেশিকা। নির্বাচনী সভায় ৫০০-র পরিবর্ত ২০০ লোকের জমায়েত হবে। প্রসঙ্গত, ১৭ পর্যবেক্ষকের পাঁচ জনই বর্তমানে কোভিড আক্রান্ত। তার জেরে নতুন পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। ফলে নির্বাচনী গাইডলাইনেও দুটি ক্ষেত্রে আনা হয়েছে পরিবর্তন।
নির্বাচন কমিশনের পুরনো গাইড লাইন অনুযায়ী দুটি বিষয় নিয়ে উঠেছিল বিস্তর প্রশ্ন। প্রথমত, খোলা মাঠে মিটিং ৫০০-র বেশি জনসমাগম নয়। অডিটোরিয়াম হলে ২০০ জন সর্বাধিক। কিংবা আসন সংখ্যার অর্ধেক অনুমতি পাবেন। এই দুটি বিষয় নিয়েই জলঘোলা হচ্ছিল। প্রশ্ন উঠছিল, একসঙ্গে ৫০০ জন মাঠে জমায়েত করলে, কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি পালন হবে সেখানে? কীভাবে বজায় থাকবে সামাজিক দূরত্ববিধি?
শেষ পর্যন্ত পিছু হটেছে কমিশন। বুধবার আরও একটি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। ২০০-র বেশি লোক জমায়েত করা যাবে না কোনও সভাতেই। পাশাপাশি বহু ক্ষেত্রে দেখা যায়, অডিটোরিয়াম হল ভাড়া করেও রাজনৈতিক নেতৃত্বরা বৈঠক করেন। অডিটোরিয়ামের আসন সংখ্যার ৫০ শতাংশ ভর্তি করে বৈঠক করা যাবে। সেক্ষেত্রে অনেকে উত্তরপ্রদেশের প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন। তাঁদের বক্তব্য, উত্তরপ্রদেশে যেখানে কোভিডের কথায় মাথায় রেখে সব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে বাংলার চার পুরসভার ভোটের ভবিষ্যৎ কী?
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারই এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি রয়েছে আদালতে। মামলাকারী বিমল ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ২২ জানুয়ারির ভোট বন্ধ করতে হবে। প্রশ্ন হচ্ছে, মনোনয়নপত্র দাখিল হয়ে গিয়েছে, স্ক্রুটিনি হয়ে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে ভোট বন্ধ কি আদৌ সম্ভব? পাশাপাশি আইনজীবী মহলের একাংশ মনে করছেন, এরপর ২৭ ফেব্রুয়ারি ভোট রয়েছে। সেটি ১০০-র বেশি পুরসভা নিয়ে। আইনজীবীদের বক্তব্য, হাইকোর্ট যদি ২২ জানুয়ারির ভোট বন্ধের কথা নাও বলে, তাহলে কি কোভিডের বাড়বাড়ন্ত দেখে ২৭ ফেব্রুয়ারির ভোট বন্ধ করবে আদালত?
আইনজীবীদের বক্তব্য, এই নিয়ে উদ্যোগ নেওয়া উচিত রাজ্য নির্বাচন কমিশনেরই। চিঠি লেখা উচিত রাজ্য সরকারকে। যদিও নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য, একমাত্র রাজ্যই পারে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে।
আগামী ২২ জানুয়ারি, শিলিগুড়ি, আসানসোল, চন্দননগর, বিধাননগর– চার পুরসভার ভোট। বুধবার দুপুরে নিরাপত্তা বৈঠক হয় বুধবার দুপুরে নিরাপত্তা বৈঠকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে।
একনজরে পুরভোটের বাকি গাইডলাইন
♦ কোন রোড শো কিংবা পদযাত্রা নয়। গত পুরসভায় ৪টে পর্যন্ত রোড শো ছিল। এবার গাড়ি, বাইক র্যালি সব বাদ। এক্ষেত্রে আগে অনুমতি নেওয়া থাকলেও রোড শো বাতিল করতে হবে।
♦ প্রতি পুরসভায় নোডাল হেলথ অফিসার নিয়োগ করা হবে।
♦ প্রার্থী, কাউন্টিং এজেন্ট, পোলিং অফিসার- সকলেরই ডবল বা সিঙ্গল ভ্যাকসিন নেওয়া থাকতে হবে।
বাড়িতে প্রচারে প্রার্থী-সহ পাঁচের বেশি অনুমতি নেই।
♦ প্রচারের সময় কমানো হয়েছে। সকাল ৯ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রচার।
♦ সাইলেন্স জোন বাড়িয়ে হচ্ছে ৭২ ঘণ্টা।
আরও পড়ুন: Gangasagar Mela: গঙ্গাসাগর মেলা কি আদৌ হবে? আজই রাজ্য জানাবে আদালতকে