চণ্ডীগঢ়: পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নির (Punjab CM Charanjit Singh Channi) মতে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার পঞ্জাব সফরে “নিরাপত্তা বিঘ্নিত” (PM Narendra Modi Security Lapse) হওয়ায় তাঁর জীবনের জন্য “কোনও ঝুঁকি” ছিল না। TV9 ভারতবর্ষকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে, চন্নি গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, কেন্দ্র পঞ্জানে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি করার অজুহাত হিসাবে এই ইস্যুটিকে ব্যবহার করছে। চন্নি বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্র নেতা এবং একজন বয়োজেষ্ঠ হিসেবেও শ্রদ্ধা করেন। সঙ্গে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, মোদীর জন্য যদি কখনও কোনও বিপদ হয় তবে তিনিই প্রথমে তাঁর সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়াবেন।
পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নির কথায়, “যদি প্রধানমন্ত্রীর দিকে কখনও কোনও বুলেট আসে, তাহলে সেটিকে প্রথমে আমার কাছে আসতে হবে।” কিন্তু তাঁর বক্তব্য বিজেপি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে কোনও কিছু না পেয়ে এই পুরো ঘটনাটিকে বেশি রঙ চড়িয়ে দেখানোর চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, এই সফরটি কেবলমাত্র একটি প্রতিবাদের জন্য বিঘ্নিত হয়েছিল। বিজেপি বিষয়টিকে যেভাবে জাতীয়তাবাদ বা নিরাপত্তা লঙ্ঘনের সঙ্গে মিলিয়ে দেখাতে চাইছে, আসলে বিষয়টি তেমন কিছুই নয়। কেন্দ্র পঞ্জাব এবং পঞ্জাবিদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যই পুরো ঘটনাটিকে এইভাবে উপস্থাপন করছে বলে অভিযোগ চরণজিৎ সিং চন্নির।
পাশাপাশি এই ঘটনাটিকে কিছুটা লঘু করেই দেখছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের জনগণের আন্দোলনে ভয় পাওয়া উচিত নয়। প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টারে যাওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে পরিকল্পনা পরিবর্তন করা হয় বলে জানান তিনি।
চরণজিৎ সিং চন্নির মতে, বিক্ষোভকারীরা জানতেন না যে প্রধানমন্ত্রী সড়ক পথে যাচ্ছেন। তারা প্রধানমন্ত্রীর কনভয়কে আটকানোর চেষ্টা করেনি। তারা ফিরোজপুরের জনসভায় মানুষকে পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছিল। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষ যদি কোনও কারণে বা ভুলবশত কনভয়ের সামনে চলে আসে এবং প্রধানমন্ত্রীকে এক কিলোমিটার দূরে থেকে ফিরে আসতে হয়, তবে তার জীবনের ঝুঁকির বিষয়টি কোথায় ছিল? তিনি বলেন, “আমাদের আধিকারিকদের নোটিস দেওয়া হচ্ছে। যখন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় কোনও ত্রুটি নেই, তাহলে কেন তাঁদের নোটিস দেওয়া হচ্ছে? কেন্দ্রীয় সরকার মুখ্যসচিব এবং ডিজিপিকে নোটিস পাঠিয়েছে।” .
রাজ্য সরকার, পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি থেকে প্রধানমন্ত্রীর সফরের জন্য যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল, সেই সম্পর্কিত রেকর্ড সুরক্ষিত করার জন্য যে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছে, তাকে স্বাগত জানিয়েছেন চন্নি। প্রধান বিচারপতি এন ভি রামনের নেতৃত্বে একটি বেঞ্চ রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকে তাদের দ্বারা গঠিত পৃথক তদন্ত কমিটিগুলিকে “সোমবার পর্যন্ত তাদের তদন্ত প্রক্রিয়া বন্ধ রাখতে বলেছে”। সোমবার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। চন্নি বলেন, “এটা ভাল যে সুপ্রিম কোর্টে বিষয়টি শুনানি হচ্ছে এবং সেদিন কী ঘটেছিল, কার দোষ ছিল এবং নিরাপত্তার দায়িত্ব কার ছিল তা জানা ভাল।” তিনি আরও বলেন, কেন্দ্র দ্বারা গঠিত তদন্ত কমিটি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তাঁর মতে, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট তদন্ত বন্ধ করে সঠিক কাজ করেছে।
এর আগে চন্নির কনভয়কে কালো পতাকা দেখায় বিজেপি কর্মীদের একাংশ। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর গাড়ি থেকে নেমে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে করমর্দন করেন এবং কিছুক্ষণ কথা বলেন। প্রতিবেদন অনুসারে, সেখানে উপস্থিত লোকেরা প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় নিরাপত্তা লঙ্ঘনের বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন এবং মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন।
আরও পড়ুন : International Flight Guidelines: বিদেশ থেকে এলেই কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক, একগুচ্ছ নয়া নির্দেশিকা কেন্দ্রের