চণ্ডীগড় : ভোটের আগে যখন উত্তপ্ত পঞ্জাবের রাজনীতি, তারই মধ্যে সামনে এল পারিবারিক তরজা। ভোটের (Punjab Assembly Election 2022) ঠিক আগে পঞ্জাবের কংগ্রেস প্রধান নভজ্যোত সিং সিধুর (Navjyot Singh Sidhu) দিদি সুমন টুর (Suman Toor) নিশানা করলেন সিধুকেই। তাঁর অভিযোগ, ১৯৮৬ সালে তাঁদের বাবার মৃত্যুর পর তাঁদের বৃদ্ধা মাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন সিধু। রেল স্টেশনে তাঁদের মায়ের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন সুমন। শুক্রবার চণ্ডীগড়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুমন দাবি করেন, টাকার জন্য তাঁর মাকে অনেক গঞ্জনা সহ্য করতে হয়েছে। সিধুকে একজন নিষ্ঠুর ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন তাঁর দিদি। বর্তমানে আমেরিকায় থাকেন সিধুর দিদি সুমন। সম্প্রতি ভারতে ফিরেছেন তিনি।
শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে সুমন টুর জানান, ১৯৮৬ সালে তাঁদের বাবার মৃত্যু হয়। তাঁর অভিযোগ, এরপরই তাঁকে ও তাঁর মাকে সিধু বের করে দেন বাড়ি থেকে। পরে ১৯৮৯ তে রেল স্টেশনে সর্বহারা অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর মায়ের। সুমন বলেন, ‘আমরা অনেক কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছি। আমার মা চার মাস ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। আমি যা বলছি, তার সব তথ্য প্রমাণ রয়েছে আমার কাছে।’ সম্পত্তির জন্য সিধু তাঁদের সঙ্গে এরকম ব্যবহার করেছিলেন বলেও দাবি করেন সুমন। তিনি জানান, তাঁদের বাবা রেখে গিয়েছিলেন একটি বাড়ি ও জমি। পাশাপাশি আসত বাবার পেনশনও।
শুধু তাই নয়, সিধু নিজের বাবা-মা সম্পর্কে যে দাবি করেন, সেটাও মিথ্যা বলে উল্লেখ করেছেন তাঁর দিদি সুমন। সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে সিধু জানিয়েছিলেন, তাঁর বাবা-মা আলাদা থাকতেন। কিন্তু সেই দাবি ঠিক নয় বলে উল্লেখ করেছেন সিধুর দিদি। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, তাঁর মা যে আলাদা হয়ে গিয়েছিলেন, তার কী প্রমাণ রয়েছে সিধুর কাছে? সিধু এমনটা দাবি করার পর তাঁদের মা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন সুমন।
সুমন আরও জানান, তিনি সম্প্রতি সিধুর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বাড়িতে গেলে দরজা খোলা হয়নি। তাঁকে ফিরে আসতে হয় বলে অভিযোগ জানিয়েছেন সুমন। তিনি বলেন, ‘আমি কোনও টাকা চাই না। আমার মায়ের জন্য ন্যয়বিচার চাই।’ ফোনেও ব্লক করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান কংগ্রেস নেতার দিদি। তাই বাধ্য হয়েই সাংবাদিক বৈঠক বলে দাবি সুমনের এ দিন সংবাদমাধ্যমে সামনে এই সব অভিযোগের কথা বলতে গিয়ে কার্যত কেঁদে ফেলেন তিনি।
উল্লেখ্য, পঞ্জাবের বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন। পঞ্জাবের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে তাঁর বড় ভূমিকা রয়েছে সেই নির্বাচনে। একদিকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং বারবার তাঁর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাচ্ছেন। তাঁর মধ্যে এই অভিযোগে নতুন করে অস্বস্তি বাড়ছে কংগ্রেস শিবিরের।
আরও পড়ুন : Budget 2022: ভোট অস্ত্রে শান, বাজেট অধিবেশনে বিজেপিকে চেপে ধরতে তৈরি কংগ্রেস