কাশী: পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনকে (Assembly Elections 2022) সামনে রেখে দলিত ভোটারদের ওপর জোর দিয়েছে বিজেপি। এই কারণেই ভারতীয় জনতা পার্টির (BJP) তফসিলি জাতি (SC) মোর্চা পঞ্জাব, উত্তর প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডের দলিত ভোটারদের কথা মাথায় রেখে ১৬ ফেব্রুয়ারি গুরু রবিদাস জয়ন্তীর বিশেষ উপলক্ষ্যে সপ্তাহব্যাপী উদযাপনের আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিজেপির এক শীর্ষ নেতার মতে, দলের তফসিলি জাতি ইউনিট ১৩-২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভোটমুখী রাজ্যগুলিতে ব্লক-স্তরের কর্মসূচির আয়োজন করবে। এছাড়াও, পদ্ম শিবিরের তরফে গুরু রবিদাস জয়ন্তীর আগে বারাণসীতে সন্ত রবিদাস মন্দিরে দর্শনে যাওয়া ভক্তদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে। প্রতি বছর প্রায় লক্ষাধিক ভক্তসমাগত হয় এই সময়ে।
উল্লেখ্য, গুরু রবিদাসকে দলিতদের এক অন্যতম বিশিষ্ট গুরু। পনেরো শতকে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। একাধারে তিনি যেমন ছিলেন কবি, আধ্যাত্মিক গুরু এবং অন্যদিকে ছিলেন একজন একনিষ্ঠ সাধক। দলিতরা পঞ্জাবের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩২ শতাংশ, যা যে কোনও রাজ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ। উত্তরপ্রদেশে, এই দলিত গোষ্ঠী মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশ এবং নির্বাচনের ফলাফলের উপর এদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দেখা যায় প্রত্যেকবার৷
নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই পঞ্জাবে ভোটের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ছয় দিন পিছিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিজেপি এবং কংগ্রেস উভয় শিবিরের তরফেই কমিশনকে জানানো হয়েছিল, গুরু রবিদাসের ভক্তরা ওই সময় পঞ্জাব থেকে বারাণসীতে যান। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন হলে, তাঁরা থাকতে পারবেন না। ফলে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগে করতে পারবেন না।
উত্তর প্রদেশের দলিত জনসংখ্যার অনুপাত হিসেব, বিধানসভার ৪০৩ টি আসনের মধ্যে ৮৪ টি আসন সংরক্ষিত। এই ৮৪ টি আসন থেকে শুধুমাত্র দলিত প্রার্থীরাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। এর পাশাপাশি উত্তর প্রদেশের ৫০টি জেলা মিলিয়ে ৩০০ টিরও বেশি বিধানসভা কেন্দ্রে দলিত ভোটাররা একটি নির্ধারক ভূমিকা পালন করে আসছেন। এর মধ্যে ২০টি জেলা রয়েছে যেখানে দলিত ভোটারদের সংখ্যা ২৫ শতাংশেরও বেশি।
উত্তর প্রদেশের রাজনীতিতে দলিত ভোটারদের প্রভাব কোনও শিবিরেরই দৃষ্টি এড়ায়নি। স্বাধীনতার পর দীর্ঘদিন ধরে দলিত ভোটারদের একটি বড় অংশ অংশের উপর কংগ্রেসের রাজত্ব ছিল। সেই সময় একতরফাভাবে এই ভোটব্যাঙ্কের ফায়দা পেত কংগ্রেস। পরবর্তী সময়ে, আশির দশকে, দলিত ভোটারদের রাজনৈতিক মঞ্চ হিসেবে উঠে আসে বিএসপি। এর জেরে বিএসপির দলিত ভোটব্যাঙ্ক বাড়তে থাকে এবং ভাঙতে থাকে দলিতদের উপর কংগ্রেসের একার রাজ। উল্লেখ্য, উত্তর প্রদেশের তখতে আসতে মায়াবতীকে অনেকটাই সাহায্য করেছিল এই দলিত ভোটব্যাঙ্ক। এবারের নির্বাচনে তুলনামূলকভাবে অনেকটাই ব্যাকফুটে দেখাচ্ছে বিএসপিকে। আর সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়ে দলিত ভোটারদের কাছে টানতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করছে পদ্ম শিবির।
আরও পড়ুন : Mallikarjun Kharge: সব সরকারি চাকরি তুলে দিতে চায় বিজেপি, আশঙ্কা প্রকাশ কংগ্রেস সাংসদের