KMC Election 2021: ‘আপনারা কি সিরিয়াসলি নিচ্ছেন না?’ পুরভোটের নিরাপত্তা নিয়ে কমিশনকে তিরস্কার হাইকোর্টের

TV9 Bangla Digital | Edited By: তন্নিষ্ঠা ভাণ্ডারী

Dec 17, 2021 | 4:28 PM

KMC Election 2021: আদালতে ঝুলে রইল মামলা। শুক্রবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে ছিল এই মামলার শুনানি। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি এ দিন।

KMC Election 2021: আপনারা কি সিরিয়াসলি নিচ্ছেন না? পুরভোটের নিরাপত্তা নিয়ে কমিশনকে তিরস্কার হাইকোর্টের
কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপি। ফাইল ছবি।

Follow Us

কলকাতা : পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন নেই বলে গতকালই জানিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি। আর ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলায় শুনানিতে অস্বস্তির মুখে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কত পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে? নিরাপত্তা সংক্রান্ত পরিকল্পনাই বা কি? এ সব প্রশ্নের যথাযথ উত্তর না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। কমিশনের আইনজীবীকে তিরস্কার করে বিচারপতি বলেন, ‘আপনারা কি সিরিয়াসলি নিচ্ছেন না?’

আজ শুক্রবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে ছিল এই মামলার শুনানি। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি এ দিন। আজ রাতে বা আগামিকাল অন্তর্বতী নির্দেশ দিতে পারে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।

আপনারা কি বিষয়টা সিরিয়াসলি নিচ্ছেন না?

বুথে পুলিশি নিরাপত্তা কেমন তার স্পষ্ট নকশা দিতে বলা হয় আদালতে। সেই ব্লু প্রিন্ট দিতে না পারায় তিরস্কার করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি কমিশনের আইনজীবীকে বলেন, ‘আপনারা কি বিষয় টা সিরিয়াসলি নিচ্ছেন না?’

এ দিন আদালতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী জানান, বুথে সিসিটিভি রাখা হচ্ছে। একাধিকবার পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে কমিশনের বৈঠক হয়েছে। পুরভোটে বাহিনীর কোনও প্রয়োজন নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি। আইনজীবী বলেন, ‘বুথে একজন সশস্ত্র পুলিশ থাকছেন। কমিশন আশ্বাস দিচ্ছে, কোনও সন্ত্রাস হবে না।’ সে কথা শুনে প্রধান বিচারপতি মনে করিয়ে দেন, এখানে ভোটারদের ভয় পাওয়া এবং সন্ত্রাসের ইতিহাস আছে। সে বিষয়ে জবাব দিতে গিয়ে কমিশনের তরফে আশ্বস্ত করা হয় অভিযোগ পাওয়া মাত্রই তার নিষ্পত্তি করা হবে। পুলিশি পাহারার ব্যবস্থা থাকবে বলেও জানানো হয় কমিশনের তরফে। আইনজীবী বলেন, ‘কারও অনুমানের ওপর ভিত্তি করে কিছু হয় না’।

এরপর বিচারপতি যখন জিজ্ঞেস করেন কতজন পুলিশ সশস্ত্র থাকবেন? তখন সঠিক জবাব দিতে পারেনি কমিশন। পাঁচ হাজার বুথে ১০ হাজারের কিছু বেশি পুলিশ থাকবে বলে জানানো হয়। তখনই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা মজবুত কোনও প্রমাণ চাইছি। আপনারা বোধহয় বিষয়টি সিরিয়াসলি নিচ্ছেন না।’

কোন অফিসার দায়িত্ব নেবেন?

প্রধান বিচারপতি এ দিন নিরাপত্তা নিয়ে আশ্বাস দেওয়ায় বিচারপতি জানতে চান, ‘এমন কোনও অফিসার আছেন, যিনি এই আশ্বাসের দায়িত্ব নেবেন? এমন কি কেউ আছেন যিনি কোনও ঘটনা হলে তার দায়িত্ব নেবেন?’ জবাবে কমিশন জানায়, সংবিধান অনুসারে কমিশন ভোট করায়। তাই কমিশন গোটা ঘটনা মনিটর করবে। সিপি (পুলিশ কমিশনার) ও ডিজি আশ্বাস দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেছে কমিশন। নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ন হয়। মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে, সেই আশ্বাস দিয়েছে কমিশন।

কত ভোটার, কত পুলিশ

একটি বুথে কতজন ভোটার আছেন, সেই অনুপাতে কতজন পুলিশ, তা জানতে চান বিচারপতি। কমিশনের দেওয়া হিসেব শুনে বিচারপতি বলেন, ‘১৫ হাজার ভোটারের জন্য ৩৫ জন পুলিশ? আপনার কি এটা যথেষ্ট মনে হয়?’ কমিশন জানায়, প্রয়োজনে আরও বাহিনী দেওয়া যাবে। এ ছাড়াও পুলিশের গাড়ি থাকবে ও পুলিশি প্রহরা থাকবে বলেও জানানো হয়েছে। প্রধান বিচারপতি জানান, এখানে ভোটাররা ভয় পাচ্ছেন। এ কথা শুনে কমিশন বলে, পরিস্থিতি এমন নয়। এটা ভুল তথ্য।

বাহিনী ব্যবহারে কিসের আপত্তি?

কেন্দ্রীয় বাহিনী যদি দেওয়া হয়, তাহলে দরকারে ব্যবহার করবেন। এতে কি আপত্তি আছে? কমিশনকে প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির। কমিশন জানায় তারা প্রয়োজনে চিঠি লিখবে, দ্রুততার জন্য ফোন করা যেতে পারে। এতে কেন্দ্রের আইনজীবী বলেন, নূন্যতম ৬ ঘন্টা লাগবে বলার পর ব্যবস্থা করতে। বিজেপির আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদী বলেন, মাত্র ১৩ জন পুলিশ থাকছে প্রতি ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে। কোনও রুট মার্চ হয়নি যা ভোটারদের মনোবল বাড়ায়।

কী সেই মামলা?

পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপি। পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিঙ্গল বেঞ্চে মামলা করে বিজেপি। বৃহস্পতিবার সেই মামলায় বিচারপতি স্পষ্ট করে বলে দেন কেন কলকাতা পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন নেই। শুধু মাত্র চারজনের অভিযোগের ভিত্তিতে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় এটা নয় বলেই মত বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার সিঙ্গল বেঞ্চের। এরপরই ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করা হয়।

আরও পড়ুন KMC Election 2021: ‘অভিষেকের মিছিলে বাইরে থেকে লোক আনছে, নির্বাচন কমিশন তো ঠুঁটো জগন্নাথ’

Next Article